রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের দাবি, পৌষমেলা করার ইচ্ছা নেই বিশ্বভারতীয় উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। —ফাইল চিত্র।
শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা করতে গেলে কী কী করণীয়, তা নিয়ে আলোচনা সভা আহ্বান করলেও তাতে গরহাজির থাকলেন বিশ্বভারতীয় উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী স্বয়ং। উপাচার্যের ডাকে সাড়া দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ-সহ জেলা প্রশাসনের কর্তারা ওই সভা থেকে হতাশ হয়ে ফিরে গেলেন। শনিবারের এই সভা ভেস্তে যাওয়ায় পৌষমেলা নিয়ে কার্যত অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। যদিও চন্দ্রনাথের দাবি, মেলা করার ইচ্ছা নেই উপাচার্যের। তবে গত বারের মতো চলতি বছরেও মেলায় আয়োজন করবেন তাঁরা।
পৌষমেলা নিয়ে উপাচার্যের তরফে শনিবার একটি আলোচনা সভা ডাকা হয়েছিল বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে। সেই সভায় যোগ দিতে বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ এসে পৌঁছান রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দনাথ সিংহ, জেলাশাসক বিধান রায়-সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। কিন্তু ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করার পরেও দেখা মেলেনি না উপাচার্যের। জেলাশাসকের বক্তব্য, ‘‘আমরা সভায় এসে প্রায় ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরে যাচ্ছি। উপাচার্য এখানে আসেননি। এমনকি, আমরা ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সেই ফোন ধরার সৌজন্যটুকুও দেখাননি তিনি। বরং ফোন মারফত খবর পাঠিয়েছিলেন, নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।’’ জেলাশাসকের দাবি, ‘‘যেখানে এক জন মন্ত্রী, জেলাশাসক এবং জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা উপস্থিত, সেখানে ওঁর (উপাচার্যের) নিরাপত্তার অভাব বোধ করাটা ভিত্তিহীন। এমনকি, তাঁকে আনতে পুলিশ-প্রশাসনের লোক পাঠিয়েছিলাম আমরা। তা-ও তিনি আসেননি।’’ জেলাশাসক আরও বলেন, ‘‘আমাদের যা অবমাননা হয়েছে, তা প্রকাশ করার অবকাশ নেই। তবে রবীন্দ্র-ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে মেলা হবে। আমরা বিষয়টি উপর মহলে জানাব।’’
শনিবারের আলোচনা সভা বানচাল হয়ে গেলেও পৌষমেলা করানোর জন্য তাঁরা বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন চন্দ্রনাথা। তাঁর দাবি, ‘‘ওঁর (উপাচার্যের) মেলা করার ইচ্ছে নেই। একটা অজুহাত দেওয়ার প্রয়োজন ছিল, তাই আমাদের সভায় ডেকেও নিজে আসেননি। তিনি বা তাঁর মাথার উপরে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাও চান না যে বোলপুরে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত মেলা হোক। আস্তে আস্তে মেলা, বসন্তোৎসব বন্ধ করে বিশ্বভারতীকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চলছে ওঁর আমলে। এ তো আজ দেখাই গেল। তবে পরবর্তী কালে ওঁর শুভবুদ্ধি হলে এবং আমাদের ডেকে পাঠালে আমরা অবশ্যই থাকব। আমরা মেলা করবই। তিনি মেলা না করালে গত বছরের মতো ডাকবাংলো মাঠে মেলা করাব আমরা। সে সমস্ত ব্যবস্থা আমরা করে রেখেছি।’’
আলোচনা সভায় ডেকে উপাচার্য নিজেই অনুপস্থিত হওয়ায় তার নিন্দা করেছেন অনেকেই। যদিও উপাচার্যের দাবি, তিনি অসুস্থ থাকায় সভায় যেতে পারেননি। সূত্রের খবর, পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা বাসভবন থেকে তাঁকে আনতে গেলে নিরাপত্তারক্ষীদের মারফত উপাচার্য খবর পাঠান, তিনি অসুস্থ। তাই আলোচনাসভায় যেতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তাঁর বাসভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান-বিক্ষোভ করছেন ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ। এই আবহে শনিবারের সভায় তাঁর অনুপস্থিতিতে পৌষমেলা ঘিরে কার্যত অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে বলে অনেকের দাবি। তাঁদের মতে, বিশ্বভারতীতে আর পৌষমেলা করাই সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy