Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

বিদ্যুৎ ভবনে বিক্ষোভ, অশান্তি সব্যসাচীর

বিক্ষোভে অংশ নিয়ে সব্যসাচী এ দিন বিদ্যুৎ দফতর কর্তৃপক্ষকে এক মাসের সময়সীমা দেন।

ধুন্ধুমার: সল্টলেকে বিদ্যুৎ ভবনের সামনে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা বিক্ষোভকারীদের। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

ধুন্ধুমার: সল্টলেকে বিদ্যুৎ ভবনের সামনে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা বিক্ষোভকারীদের। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৯ ০৬:৩২
Share: Save:

সল্টলেকে বিদ্যুৎ ভবনে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল বিধায়ক তথা বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত। শুক্রবার দুপুরে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ কর্মচারী ইউনিয়নের ডাকে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। তৃণমূল সমর্থিত সেই সংগঠনের সভাপতি সব্যসাচী। দলীয় সূত্রের খবর, দলের নেতৃত্ব তাঁর এই ভূমিকায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। সব্যসাচীকেও তা জানানো হয়েছে।

বিক্ষোভে অংশ নিয়ে সব্যসাচী এ দিন বিদ্যুৎ দফতর কর্তৃপক্ষকে এক মাসের সময়সীমা দেন। তার মধ্যে কর্মচারীদের আর্থিক দাবিদাওয়া পূরণ না হলে ১৫ অগস্টের পরে দফতর ‘স্বাধীন’ করা হবে বলে তিনি কার্যত হুঁশিয়ারি দেন। সব্যসাচী বলেন, ‘‘আইনজ্ঞ থেকে চিকিৎসকেরা সাত দিন থেকে দেড় মাস ধরে আন্দোলন করেছেন। বিদ্যুৎ পর্ষদের কর্মীরা একত্রিত হলে সাত মিনিটেই তাঁরা সব বুঝিয়ে দেবেন।’’ বিদ্যুৎ পর্ষদের আধিকারিকদের তুমুল সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘আগের চেয়ারম্যান গাজর ঝুলিয়ে চলে গিয়েছেন। নতুন চেয়ারম্যানকে সময় দিচ্ছি। কর্ণপাত করলে ভাল। না হলে কী ভাবে কানের খোল পরিষ্কার করতে হয় জানা আছে।’’

তাঁর ক্ষোভ থেকে বাদ যাননি বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও। মন্ত্রীর নাম না করে সব্যসাচী বলেন, ‘‘শুনেছি, দেখেছি বিদ্যুৎমন্ত্রী শ্রমিক আন্দোলন করে নেতা হয়েছেন। ভেবেছিলাম মঞ্চে এসে বলবেন, হ্যাঁ আমি অপারগ। আমি তোমাদের পয়সা দিতে পারিনি। এটা শুনলে খুশি হতাম। কিন্তু পদের কী মোহ, পদের কী লালসা! ভয় পেয়ে কাজে আসেননি। যদি ক্ষমতা চলে যায় তা হলে মন্ত্রিত্ব আর কী থাকবে? দফতরের নাম হচ্ছে ‘পাওয়ার মিনিস্ট্রি’। পাওয়ারই যদি চলে যায় বিদ্যুৎহীন মন্ত্রী হয়ে থাকবেন।’’

ভবনের প্রবেশপথের ভাঙা কাচ। শুক্রবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

সব্যসাচীর দাবি, কাজের অসুবিধা না করে প্রতীকী বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। কিন্তু দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়া হবে। ভবিষ্যতে সারা রাজ্য উত্তাল হবে।

সব্যসাচী কেন জমায়েতে এসেছেন সে বিষয়ে তাঁর স্পষ্ট ব্যাখ্যা, তিনি বিদ্যুৎ দফতরের কর্মচারীদের পাশে মেয়র, বিধায়ক কিংবা তৃণমূল নেতা হিসেবে নন, এক জন শ্রমজীবী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন।

বিক্ষোভ সমাবেশের পরে সব্যসাচী দত্ত ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অরিজিৎ দত্তের নেতৃত্বে কর্মীরা দফতর চত্বরে ঢুকতে যান। সেখানে পুলিশের ব্যারিকেড ছিল। সামান্য কিছু ক্ষণ পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির পরে তাঁরা বিদ্যুৎ পর্ষদের অফিস চত্বরে ঢুকে পড়েন।

যদিও বিদ্যুৎ ভবনে ঢোকার আগে মোতায়েন থাকা পুলিশ আধিকারিক থেকে কর্মীদের উদ্দেশ্যে সব্যসাচী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কিছু পুলিশ বন্ধু এসেছেন। আমাদের আটকাবেন। বিদ্যুৎকর্মীরা আন্দোলনে গেলে তাঁরাও সমস্যায় পড়বেন। লাঠি চালান, গুলি চালান। বার বার মরতে চাই না। আইনানুগ এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যা করার তাই করব।’’

এর পরে দফতরের অফিসের একতলায় ঢুকে সব্যসাচী অন্যদের নিয়ে বিক্ষোভে বসে পড়েন। কর্মীরা দফতরের ভিতরে চলে যাওয়ার পরে দেখা যায়, একটি প্রবেশপথের কাচ ভেঙে পড়ে রয়েছে। ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠায় বিক্ষোভকারীদের একাংশের দাবি, হয়তো হুড়োহুড়ি করে ঢুকতে গিয়ে ধাক্কায় কাচ ভেঙেছে। ঘটনাটি অনিচ্ছাকৃত ভাবে ঘটেছে। তাঁদেরই দফতর। নিজেদের দফতরে কেন তাঁরা ভাঙচুর করতে যাবেন? সংগঠনের নেতৃত্ব ভাঙচুরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন। কেউ কেউ আবার জানান, আগে থেকেই কাচ ভাঙা ছিল।

দফতরের ভিতরে বসেও এ দিন স্লোগান চলতে থাকে। সব্যসাচী জানান, কর্মচারীরা সংস্থার উপার্জন বাড়িয়েছেন। অথচ তাঁদের আর্থিক দাবিদাওয়া পূরণ হয়নি।

প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দাবি জানালেও কেউ কর্ণপাত করেননি। সেখানে লভ্যাংশের কিছু শতাংশ কর্মচারীদের মধ্যেও বিলি করা হোক।

এর পরে সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের অডিটোরিয়ামের ভিতরে গিয়ে আগামী দিনে আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয় বলে সংগঠন সূত্রের খবর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy