প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহে গঙ্গাসাগর মেলায় বড় মাপের আয়োজন করা যাবে কি না, তা নিয়ে দোলাচল থাকলেও আপৎকালীন প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। মেলা নিয়ে এখনও রায় জানায়নি কলকাতা হাইকোর্ট। তিনি আদালতের রায়ের দিকেই তাকিয়ে আছেন বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মেলায় স্বেচ্ছাসেবক পেতে মুশকিল হচ্ছে বলে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের তরফে তাঁকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে বলেও বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন মমতা। সেই চিঠি হাতে এসেছে আনন্দবাজার অনলাইনের। তাতে দেখা যাচ্ছে, সঙ্ঘের পক্ষে প্রধান সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন। তাতে স্পষ্টই লেখা রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক পেতে সমস্যার কথা। বলা হয়েছে, স্বেচ্ছাসেবক হয়ে যাঁরা যাবেন, তাঁদের অভিভাবকরা এই করোনা পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন।
তবে আশ্রমের পক্ষে প্রস্তুতিতে কোনও ত্রুটি রাখা হচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন সঙ্ঘের সন্ন্যাসীরা। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘যাদের ভলান্টিয়ার করে পাঠায়, তাদের মধ্যে অনেকে কোভিডে আক্রান্ত। ফলে ওরা ভলান্টিয়ার পাঠাতে পারবে না।’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য যে ঠিক, তা মেনে নিয়ে স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, "আমাদের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী অত্যন্ত অনুগত। তারা সকলে ঝুঁকি নিয়েও গঙ্গাসাগর মেলায় যেতে চায়। কিন্তু তাঁদের অভিভাবকরা অনেকে রাজি হচ্ছেন না। কেউ কেউ ছেলেদের পাঠাতে অনীহা দেখাচ্ছেন। সেই পরিস্থিতির কথাই মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা জানিয়েছি। কারণ, আমাদের উপরে সরকারের অনেকটা ভরসা থাকে। তাই সমস্যা হলে সেটা আগে থেকে জানানোটাই ঠিক।’’
তবে তা সত্ত্বেও সঙ্ঘের তরফে প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে জানিয়ে বিশ্বাত্মানন্দ বলেন, ‘‘সঙ্ঘের পঞ্চাশ জন সন্ন্যাসী ও ব্রহ্মচারী মেলায় থাকবেন। সেই সঙ্গে দেড় হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক। সমস্যা হলেও কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। কারণ, আদালত যে রায়ই দিক, আমাদের এখন থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। হাতে সময় কম। অনেক সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারী এবং স্বেচ্ছাসেবক সাগরে পৌঁছে গিয়েছেন।"
গঙ্গাসাগর মেলার ব্যবস্থাপনায় ফি বছর ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ বড় ভূমিকা নিয়ে থাকে। সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দের আদর্শ অনুযায়ী যে কোনও তীর্থ ক্ষেত্রে পূণ্যার্থীদের দেখভালের দায়িত্ব নেন সন্ন্যাসীরা। গঙ্গাসাগর মেলায় মূল বাস স্ট্যান্ড, কচুবেড়িয়া, জেটি ঘাট, চেমাগুড়ি, বেণুবন, নামখানা এবং আট নম্বর লট— এই ছ'টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পূণ্যার্থীদের দেখভালের জন্য ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের স্বেচ্ছাসেবকদের উপরেই নির্ভর করে রাজ্য প্রশাসন। এ ছাড়াও মেলায় একটি পূণ্যার্থীদের থাকা ও খাওয়া দাওয়ার জন্য একটি শিবির চালায় সঙ্ঘ। সেই শিবিরে তিন থেকে চার হাজার মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে।
স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ বলেন, ‘‘অসুবিধার কথা জানিয়ে রাজ্যের প্রধান প্রশাসক মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিলেও আমরা প্রস্তুতি বন্ধ করিনি। এমনও নয় যে, আমরা মেলা চাই না। অভিভাবক হিসেবেই মুখ্যমন্ত্রীকে সবটা অবগত করে রাখা হয়েছে। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত হন। সাগরে স্নানের সময়ে পূণ্যার্থীরা যাতে বিপদে না পড়েন তার জন্য জীবনরক্ষাকারী সাঁতারুরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে থাকেন। তাঁরা ইতিমধ্যেই পৌঁছতে শুরু করেছেন। মেলা যে রূপেই হোক, আশ্রমের উপস্থিতি যেমন থাকে তেমনই থাকবে। আশা করছি, গুরু মহারাজের কৃপায় সব বাধা অতিক্রম করে গঙ্গাসাগর মেলা মঙ্গলময় হয়ে উঠবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy