ফাইল চিত্র
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের ভোগান্তির অভিযোগ ওঠে বারবার। এমনও অভিযোগ ওঠে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রয়েছে অথচ বেসরকারি হাসপাতালে গেলে প্রত্যাখ্যানের শিকার হচ্ছেন রোগী। আবার ওই প্রকল্পে বেঁধে দেওয়া চিকিৎসা খরচ, বিল বকেয়া থাকা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলিরও। তবে বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনের (বিজিবিএস) দ্বিতীয় দিন, বৃহস্পতিবার অবশ্য বেসরকারি হাসপাতালের কর্তাদের মুখে সে সব ‘কড়া সুর’ শোনা গেল না। চিকিৎসার খরচ কিংবা বকেয়া বিলের বদলে প্রকল্পের ‘ইতিবাচক’ দিকই তুলে ধরলেন তাঁরা।
ঘটনাচক্রে, মাস খানেক আগেই কয়েকশো কোটি টাকার বকেয়া বিল অবিলম্বে মেটানোর ব্যবস্থা করতে স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি দিয়েছিলেন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তা হলে এ দিন শুধু ইতিবাচক কথাই শোনা গেল কেন? আমরি হাসপাতাল গোষ্ঠীর সিইও এবং পূর্বাঞ্চলে বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যে স্বাস্থ্যে বিনিয়োগকে আমন্ত্রণ জানানো। সেই পজ়িটিভ আলোচনায় নেগেটিভ কথা বলা ঠিক নয়। চিকিৎসা খরচ, বকেয়া বিলের বিষয়ে রাজ্য কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সে বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিব তো বলেই দিলেন।’’
রূপকবাবুর মতে, ‘‘স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের আচরণ, মনোভাব আগের থেকে অনেক ভাল। এখন কর্মী অসন্তোষ, ইউনিয়নের সমস্যা নেই। রাস্তাঘাটও আগের থেকে ভাল হয়েছে। যা সামগ্রিক স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের জন্য অত্যন্ত ভাল, সেই দিকটিই তুলে ধরা হয়েছে।’’
রাজ্যের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিষেবার দিক তুলে ধরার সময়, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। তিনি জানান, রাজ্যের ওই প্রকল্পে প্রায় ১৫০০ বেসরকারি হাসপাতাল যুক্ত রয়েছে। অনলাইন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দৈনিক প্রায় ৬ হাজার রোগী ওই প্রকল্পের সুযোগ পাচ্ছেন। তার জন্য দৈনিক ৬-৭ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। বকেয়া বিলের প্রসঙ্গ অবশ্য সচিব তুলেছেন। তিনি জানান, বিল বকেয়া থাকার বিষয়ে মাঝেমধ্যে কেউ কেউ জানান ঠিকই। এখন সেই সমস্যা অনেক মিটেছে। কত তাড়াতাড়ি বিল প্রদান করা যায় তার জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসার যে খরচ বেঁধে দেওয়া আছে, তা তৃতীয় একটি সংস্থা (থার্ড পার্টি)-কে দিয়ে পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
এ দিন হেলথওয়ার্ল্ড হাসপাতালের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অরুণাংশু গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষের কাছে উন্নত পরিষেবা পৌঁছে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। তবে প্রকল্পে ছোটখাটো কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে।’’ চার্নক হাসপাতালের এমডি প্রশান্ত শর্মা বলেন, ‘‘বকেয়া বিল দ্রুত মেটানোর জন্য সরকার ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করছে। করোনা পরিস্থিতি দেখিয়ে দিয়েছে, সরকার ও বেসরকারি হাসপাতাল যৌথ ভাবে মানুষকে কতটা উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে পারে। তবে স্বাস্থ্য কমিশন মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন নির্দেশিকা জারি করছেন তাতে কিছুটা সমস্যা হয়। এতে বিনিয়োগ আসতে সমস্যা হতে পারে।’’ বেশির ভাগ বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, আসল সমস্যা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বেঁধে দেওয়া খরচ। তাতে অনেক সময় চিকিৎসা দিতে সমস্যা হয়। বেসরকারি হাসপাতালের উপরে ‘বিশ্বাস রাখার’ আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy