রাস্তা চওড়া করতে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে বীথি। গৌতম প্রামাণিক
রাস্তার ধারে ছিল অগণিত গাছ। পথ চলতি মানুষ থেকে শুরু করে খেত থেকে উঠে এসে কৃষকেরাও দু’দণ্ড জিরিয়ে নিতেন সে সব গাছের তলায়। কিন্তু চওড়া করতে হবে রাস্তা। সে জন্য সে সব গাছ নির্বিচারে কেটে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুরের উত্তরপাড়া মোড় থেকে রাঙামাটি চাঁদপাড়া, কেদারের ব্রিজ হয়ে কান্দির খোসবাসপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। আগে রাস্তাটি সাড়ে পাঁচ মিটার চওড়া ছিল। এ বার দেড় মিটার সম্প্রসারণ করে সাত মিটার করা হচ্ছে। সে কারণেই বহরমপুর এবং কান্দি ব্লক মিলিয়ে ওই রাস্তার প্রায় ৯০০টি গাছ পূর্ত দফতর ও বন দফতর কাটার জন্য চিহ্নিত করে। বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতি বহরমপুর ব্লকের ৩৭৩টি গাছ কাটার জন্য একটি সংস্থাকে দরপত্র ডেকে দায়িত্বও দেয়। মাস চারেক আগে সেই গাছ কাটা শুরু হয়েছিল।
তবে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের জেলার কার্যকরী সভাপতি সজল বিশ্বাসের দাবি, ‘‘চিহ্নিত করা গাছের বাইরেও গাছ কাটা হয়েছে। প্রশাসনকে বার বার জানানো সত্ত্বেও তাঁরা নীরব থেকেছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘গাছগুলিকে বাঁচানোর জন্য আমরা রাস্তার এক দিকে দেড় মিটার বাড়াতে বলেছিলাম, তা মানা হয়নি।’’ গাছ কাটার দরপত্র পেয়েছেন বহরমপুরের আব্দুস সামাদ শেখ। তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। চিহ্নিত গাছের বাইরে একটি গাছও আমরা কাটিনি।’’
বন দফতর ঘটনায় তৎপর হয়েছে। নদিয়া-মুর্শিদাবাদের ডিএফও প্রদীপ বাউরি বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে আসতেই তদন্ত শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত গাছ কাটলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ প্রদীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘ওই রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য নির্দিষ্ট গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে যত গাছ কাটা হবে, তার পাঁচ গুণ গাছ লাগানোর কথা তাঁদের বলা হয়েছে।’’
কবে সে গাছ লাগানো হবে? মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন বলেন, ‘‘বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতি গাছ কাটার জন্য দরপত্র ডেকেছিল। বিষয়টি ওরাই বলতে পারবে।’’ বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার অধিকারী বলছেন, ‘‘রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ হয়ে গেলে রাস্তার ধারে গাছ লাগাব।’’রানিনগরের তৃণমূল বিধায়ক সৌমিক হোসেনের বাড়ি বহরমপুর ব্লকেই। সৌমিক বলছেন, ‘‘গাছের যেমন দরকার, রাস্তাও তেমন দরকার। সে জন্য গাছ কেটেছে। তবে রাস্তা হওয়ার পরে যাতে গাছ লাগানো হয়, তা বলব।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কেউ যদি অতিরিক্ত গাছ কাটে, অভিযোগ করুক, প্রশাসন নিশ্চয় ব্যবস্থা নেবে।’’এই চাপানউতোরের মধ্যে শ্রাবণের তপ্ত দুপুরে খাঁ খাঁ করছে রাস্তার দু’ধার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy