হুঙ্কার: নৌকোয় তখন লকেট। ডাঙায় চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
জল ছেড়ে ডাঙায় নামতেই পারলেন না লকেট।
সন্দেশখালির গ্রামের ধর্ষিতা বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে সোমবার। তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ধামাখালি থেকে নৌকোয় উঠেছিলেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনটি নৌকোয় ছিলেন আরও কিছু বিজেপি নেতা-কর্মী। বেলা ২টো নাগাদ তাঁরা পৌঁছন সন্দেশখালি ঘাটে।
লকেটদের নৌকো পাড়ে ভিড়বার আগেই সেখানে ভিড় করেছিলেন হাজারখানেক মহিলা। নেত্রী প্রথমে ভেবেছিলেন, তাঁকে দেখতে এসেছেন এত মানুষ। ভিড়ের দিকে তাকিয়ে হাতও নাড়েন লকেট। কিন্তু নৌকো পাড়ের কাছে আসার পরে ভুল ভাঙে। কানে বিঁধতে থাকে গালিগালাজ।
গতিক সুবিধের নয় দেখে নৌকো আরও খানিকটা এগিয়ে অন্য একটি ঘাটের দিকে যান লকেটরা। মহিলার দলও পাড় বরাবর দৌড়তে দৌড়তে হাজির হয় সেখানে। লাঠি-ঝাঁটা-ছাতা উঁচিয়ে হুঙ্কার ছাড়তে থাকে। বলতে থাকে, ‘‘গত এক মাস ধরে যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন নির্যাতিতা, তখন কেন যাওয়ার সময় পাননি লকেট? হাতজোড়় করে বিজেপি নেত্রী বলার চেষ্টা করেছিলেন, অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি নিয়ে গ্রামে যেতে চান তিনি। কিন্তু উত্তেজিত মহিলারা সে কথা কানে তোলেননি। তাঁরা বলতে থাকেন, ‘‘আপনি সিনেমার পর্দাতেই থাকুন। গ্রামে অশান্তি বাধাবেন না।’’
কী বললেন লকেট? ভিডিওতে দেখে নিন...আরও পড়ুন: প্রতিবাদ করে প্রহৃত
লকেট আর কথা বাড়াননি। ফিরে যান ধামাখালি ঘাটে। গাড়িতে ওঠার আগে সাংবাদিকদের ডেকে বলেন, ‘‘তৃণমূল-আশ্রিত গুন্ডারাই আমাদের গ্রামে ঢুকতে দিল না।’’ লকেটের কথায়, ‘‘দিল্লির নির্ভয়া-কাণ্ডের থেকে কোনও অংশে কম গুরুত্বপূর্ণ নয় সন্দেশখালির ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে মহিলারা সুরক্ষিত নন।’’
এ সব যখন বলছেন বিজেপি নেত্রী, হঠাৎই তেড়ে আসে জনা পঞ্চাশ যুবক। তাদের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নাম টেনে এনে নোংরা রাজনীতি করা চলবে না।’’ মোবাইলে ছবি তোলার চেষ্টা করেছিলেন লকেট। তাতে আরও খেপে যায় যুবকের দল। কালো কাচে ঢাকা গাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন লকেট। গাড়িতে লাথি-ঘুষি প়ড়তে থাকে। এলাকা ছাড়েন লকেট। সে সময়ে উত্তেজিত যুবকেরা বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহ, তাঁর স্ত্রী এবং আরও এক বিজেপি কর্মীকে মারধর করে বলে অভিযোগ। পরে দুই তৃণমূল কর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের হয় সন্দেশখালি থানায়।
কী বলছিলেন তাঁরা?
এ দিন গণরোষের পিছনে তৃণমূলের ভূমিকা নেই বলে পরে দাবি করেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামের মানুষ বিজেপিকে বুঝিয়েছে, এখানে নোংরা রাজনীতি করা যাবে না।’’ জ্যোতিপ্রিয়বাবু আরও জানান, সন্দেশখালির ঘটনায় দোষীদের চরম শাস্তি চান তাঁরাও। এখন থেকে জেলায় যেখানেই ‘নোংরা রাজনীতি’ করতে যাবেন লকেট, তাঁরা প্রতিবাদ জানাবেন বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল নেতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy