Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Nabanna

বাড়তি আর্থিক ক্ষমতা পাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা

অনেক পর্যবেক্ষকের মতে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিধানসভা ভোট ঘোষণার আগেই বেশির ভাগ পরিষেবা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে। সে-কথা মাথায় রাখলে রাজ্যকে এই পথে হাঁটতেই হত।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৪২
Share: Save:

নানান সমস্যার সমাধান চেয়ে আর্জির পাহাড় জমেছে। ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচিতে সেই সব সমস্যার সুরাহার চেষ্টা করতেই হবে ভোট ঘোষণার আগে। নিতে হবে বিপুল খরচের চাপ। সময়ের সঙ্গে এই লড়াই যে মোটেই সহজ নয়, তা বুঝছেন প্রশাসনিক কর্তারা। অথচ বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে খরচে রাশ টানতে অর্থ দফতরের নির্দেশিকা বলবৎ থাকবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রতিটি পরিষেবা নিশ্চিত করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের ‘ভেটিং পাওয়ার’ বা আর্থিক ক্ষমতা বাড়ানোর পথে হাঁটছে রাজ্য। একই সঙ্গে টেন্ডার বা দরপত্র পদ্ধতিও কিছুটা সরল করা হচ্ছে।

অনেক পর্যবেক্ষকের মতে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিধানসভা ভোট ঘোষণার আগেই বেশির ভাগ পরিষেবা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে। সে-কথা মাথায় রাখলে রাজ্যকে এই পথে হাঁটতেই হত।

প্রশাসনিক কর্তারা জানাচ্ছেন, ৪৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোনও কাজে ‘ভেটিং পাওয়ার’ ছিল এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে। অর্থাৎ সরকারি মানদণ্ড অনুযায়ী ওই পরিমাণ টাকা পর্যন্ত কোনও প্রকল্প পরীক্ষা ও অনুমোদনের ক্ষমতা ছিল সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে। এ বার তা বাড়িয়ে এক কোটি টাকা করছে সরকার। সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারদের ‘ভেটিং পাওয়ার’ এক কোটি থেকে বাড়িয়ে আড়াই কোটি এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ারদের ক্ষেত্রে তা চার কোটি থেকে বাড়িয়ে পাঁচ কোটি করার পথে হাঁটতে চাইছে সরকার। পূর্ত দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এর আগে ৪৫ লক্ষ টাকার বেশি প্রকল্প হলে সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারের অনুমোদন নিতে হত জেলা ইঞ্জিনিয়ারকে। এই কাজটা এমনিতেই সময়সাপেক্ষ। তার উপরে দূরবর্তী জেলা থেকে কলকাতায় ছুটতে হলে সময় আরও বেশি লাগত।

এর পাশাপাশি, পাঁচ কোটির বেশি টাকার কাজে দরপত্র চাইতে হলে সেই পদ্ধতি দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট নীতি সংশোধন করতে চলেছে রাজ্য। “সময়সাপেক্ষ টেন্ডার পদ্ধতিতে কাজ আটকে থাকলে চলবে না। তাই তা সরল করার চেষ্টা চলছে। দ্রুত পরিষেবা দেওয়াই সরকারের লক্ষ্য,’’ বলেন এক প্রশাসনিক কর্তা।

গোটা রাজ্যে ৩৪১টি ব্লক, ১১৮টি পুরসভা এবং সাতটি পুর নিগমে ‘পাড়ায় সমাধান’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার সমস্যা মেটাতে হবে। সরকারি সূত্রের খবর, এতে কমবেশি ২০০০ কোটি টাকা দরকার। ২ জানুয়ারি শুরু হয়ে এই কর্মসূচি চলবে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সময়ের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে এই বিপুল কর্মযজ্ঞ সামলাতে প্রতিটি কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দিচ্ছে নবান্ন। জেলা প্রশাসনগুলি জানাচ্ছে, পাঁচ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থসীমার কাজ ৭ জানুয়ারির মধ্যে করতে হবে। তাই ইঞ্জিনিয়ারদের আর্থিক ক্ষমতা বাড়ানোর হাঁটতে হচ্ছে রাজ্যকে। প্রকল্পের খরচ এক কোটি টাকার বেশি হলে রাজ্য স্তরের কর্তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। “সময় বেঁধে কাজ না-করলে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তাই এক-একটি পরিষেবা দেওয়ার সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে,” বলেন এক কর্তা।

গোটা কর্মসূচির জন্য স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নেতৃত্বে রাজ্য স্তরে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। কমিটিতে আছেন পঞ্চায়েত, বিদ্যুৎ, অর্থ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প, জলসম্পদ, এমএসএমই, পুর ও নগরোন্নয়ন, নারী-শিশু ও সমাজকল্যাণ, তথ্য-সংস্কৃতি, সংখ্যালঘু দফতরের সচিবেরা। আছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রও। কমিটিকে সাহায্য করবে ১০ জন আইএএস অফিসারকে নিয়ে গড়া টাস্ক ফোর্স। ওই অফিসারদের প্রত্যেককে দু’-তিনটি জেলার কাজ দেখভাল করতে হবে। পরিষেবা প্রদান নিশ্চিত করার দায়িত্ব থাকবে জেলাশাসকের নেতৃত্বে গড়া জেলা স্তরের টাস্ক ফোর্সের উপরে। তাতে থাকবেন জেলার পুলিশ সুপার বা পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসকেরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Nabanna Vetting Power PWD Engineers PWD
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy