ছবি: সংগৃহীত।
দুয়ারে সরকার শিবিরগুলিতে এ বার শুধু মানুষের সংখ্যা গুণলেই চলবে না। শিবিরে যোগাযোগকারীদের পরিবারের তথ্য, আর্থিক পরিস্থিতি, লিঙ্গ এবং জাতিগত পরিচিতির তথ্যও তৈরি করতে হবে জেলা প্রশাসনগুলিকে। বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া এই তথ্য নিয়ে অভিন্ন একটি তথ্যভান্ডারে মজুত করবে সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সব জেলাশাসকদের সঙ্গে হওয়া ভার্চুয়াল বৈঠকে এই নির্দেশই দিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
সামাজিক সুরক্ষার প্রকল্পগুলি আরও ভাল ভাবে চালাতে কিছুদিন আগেই বিশ্বব্যাঙ্ক রাজ্যকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার অর্থসাহায্য করেছে। তাদের সুপারিশ ছিল, সরকারি প্রকল্পগুলির যথাযথ প্রচার, সামাজিক অডিট (সোশাল অডিট), মেয়েদের কাজের ব্যবস্থা এবং প্রকল্পগুলির নজরদারির উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। কার কোন প্রকল্পের প্রয়োজন, সেই অনুযায়ী তা তিনি পাচ্ছেন কি না, সেটাও নিশ্চিত করার কথা রাজ্যের।
এক কর্তার কথায়, “কারা শিবিরে আসছেন, তা জানা জরুরি। যাঁরা আসছেন না, তাঁদেরও চিহ্নিত করা প্রয়োজন। সেটা বোঝা গেলে যোগ্য সকল উপভোক্তাকেই সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধাদান সম্ভব। ফলে সবিস্তার তথ্যভান্ডার তৈরির প্রয়োজন রয়েছে। শিবিরগুলিতে যেহেতু বহু মানুষ যান, তাই সেখান থেকেই এই তথ্য পাওয়া সহজ।”
প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদনকারীর ‘সিঙ্গল অ্যাকাউন্ট’ থাকতেই হবে। এ বারের দুয়ারে সরকারের শিবিরে তা বাধ্যতামূলক হচ্ছে। কারণ, অতীতে দেখা গিয়েছে, এক উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে একাধিক উপভোক্তার টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে এই সমস্যা এড়ানো জরুরি ছিল। এই প্রকল্পের পাশাপাশি, স্বাস্থ্যসাথী, সামাজিক পেনশনপ্রাপকদেরও নিজস্ব অ্যাকাউন্ট (না থাকলে) খোলার উপরে এ দিন জোর দিয়েছে রাজ্য। খাদ্যসাথী-সহ সব প্রকল্পেই আধার সংযোগ বাধ্যতামূলক করতে চাইছে রাজ্য। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, এগুলি করা গেলে উপভোক্তাদের প্রত্যেককে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা যাবে। ফলে ‘নকল’ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
একই ভাবে পড়ুয়া ঋণ-কার্ড, শিল্পী-মৎস্যজীবী কার্ড তৈরির উপরে বাড়তি জোর দিয়েছে নবান্ন। এই ব্যাপারে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষগুলির সঙ্গে কথা বলবেন অর্থসচিব মনোজ পন্থ। জেলাশাসকেরাও নিজেদের জেলার ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে আলোচনা করবেন। তাতে অ্যাকাউন্ট খোলা বা ঋণদানের বিষয়টি সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। মুখ্যসচিবের নির্দেশ, নতুন স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং পুরুষদের নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরির কাজ দ্রুত করতে হবে। এ জন্য দুয়ারে সরকারের শিবিরগুলিতে আলাদা কাউন্টার রাখতে হবে জেলাগুলিকে।
আবাস যোজনার প্রথম পর্যায়ের পরে প্রকল্পের পরবর্তী পর্যায়ের কাজ শুরু হওয়ার কথা। ফলে কত জন উপভোক্তার নাম তালিকাভুক্ত রয়েছে, তাঁদের মধ্যে কত জনের পাকা বাড়ি তৈরি হয়েছে, যোগ্য নয়, এমন উপভোক্তা তালিকাভুক্ত কি না, এই সব তথ্য সংগ্রহের উপর জোর দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy