Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪

রাতের মধ্যেই চেনা ছবি ফিরল এন আর এসে

এ দিন কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণার পরেই এন আর এসের স্ত্রী-রোগ বিভাগের গেটের তালা ভেঙে সেটি খুলে দেন আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা।

আশা: (বাঁদিকে) মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা, ক্যানসার আক্রান্ত সুমানা খাতুনকে নিয়ে অপেক্ষায় তাঁর বাবা। (ডানদিকে) খুলে দেওয়া হচ্ছে এন আর এসের গেট। সোমবার রাতে। ছবি: রণজিৎ নন্দী ও সুদীপ্ত ভৌমিক

আশা: (বাঁদিকে) মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা, ক্যানসার আক্রান্ত সুমানা খাতুনকে নিয়ে অপেক্ষায় তাঁর বাবা। (ডানদিকে) খুলে দেওয়া হচ্ছে এন আর এসের গেট। সোমবার রাতে। ছবি: রণজিৎ নন্দী ও সুদীপ্ত ভৌমিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৯ ০১:১৪
Share: Save:

আনুষ্ঠানিক ভাবে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণার পরপরই হাসপাতাল চত্বর থেকে অচলাবস্থার চিহ্ন হটাতে তৎপর হলেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা।

সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ সাংবাদিক বৈঠক করে আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের কথা ভেবে দ্রুত আমরা কাজে ফিরব।’’ এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নবান্নে বৈঠকের পরে ওই ঘোষণা ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই মুহূর্ত আসা মাত্র চেনা ছন্দে ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করে এন আর এস চত্বর।

গোলমালের সূত্রপাত গত সপ্তাহের সোমবার বিকেল থেকে। রোগী-মৃত্যুতে এক জুনিয়র ডাক্তারকে মারধরের প্রতিবাদে কর্মবিরতি শুরু করেন অন্য জুনিয়র চিকিৎসকেরা। রাতের মধ্যে যা উত্তাল আকার ধারণ করেছিল। পরদিন থেকে সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

এ দিন কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণার পরেই এন আর এসের স্ত্রী-রোগ বিভাগের গেটের তালা ভেঙে সেটি খুলে দেন আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা। গত সাত দিন ওই গেট আগলে পড়েছিলেন তাঁরা। ঘটনার রাতে অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় এবং সুপার সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ি হাসপাতাল চত্বরে ঢোকার পরে এক বারের জন্যও তা খোলা হয়নি। চাবি হারিয়ে যাওয়ায় সেই গেটেরই তালা ভেঙে ফেলা হয়। জরুরি বিভাগে ততক্ষণে রোগীদের পরিষেবা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন: মানুষের চাপেই গোঁ ছাড়লেন ‘বিপ্লবীরা’

মা সারোফা বেওয়াকে নিয়ে এ দিনই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ কলকাতায় পৌঁছেছেন মুর্শিদাবাদের রোশন শেখ। তিনি বলেন, ‘‘মায়ের পেটে জল জমেছে। হাসপাতালে পৌঁছেই চিকিৎসা শুরু হয়ে যাবে, ভাবতে পারিনি!’’ কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত মুখে হাসি ফুটিয়েছে সইফুল খান, সুমানা খাতুন, হেলাল সেনাদের। মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নর সইফুল বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখাবেন বলে অপেক্ষা করছেন রবিবার রাত থেকে। কিশোরী সুমানার রক্তে ক্যানসার। গত ১৩ জুন থেকে চিকিৎসার আশায় শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মেয়েকে নিয়ে ছোটাছুটি করেছেন ডোমজুড় নিবাসী সুমানার বাবা হান্নান আলি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘১৪ জুন মেয়েকে দেখানোর কথা ছিল। এ বার যেন চিকিৎসাটা হয়।’’ বাঁকুড়ার বাসিন্দা মুজফ্‌ফর মিদ্যার এক আত্মীয়া সীমা খাতুন স্নায়ুর সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে এন আর এসে চিকিৎসাধীন। মুজফ্‌ফর বলেন, ‘‘ফোনে জানলাম, আগের মতো ডাক্তারবাবুরা রোগীদের দেখতে শুরু করেছেন।’’ তিনি যখন এ কথা বলছেন, তখন খানিক দূরের ধর্না-মঞ্চ সুনসান। যে ছবির জন্য ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম’, ‘সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম’-সহ একাধিক চিকিৎসক-সংগঠন অভিনন্দন জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের।

এন আর এসের ডেপুটি সুপার দ্বৈপায়ন বিশ্বাস বলেন, ‘‘পরিষেবা দ্রুত স্বাভাবিক করতে আমরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত। রোগীরা এলে পরিষেবা পাবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Doctor's Strike NRS Hospital OPD Junior Doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy