Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Congress

‘ভারত জোড়ো’র পথে কি মিলবে কংগ্রেস-বাম, চর্চা

গঙ্গাসাগর থেকে আগামী ২৮ তারিখ পদযাত্রা শুরু হয়ে প্রায় দু’মাস পরে শেষ হবে কার্শিয়াঙে। প্রায় ৮০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার কথা ৫৫ দিনে।

কলকাতায় এআইসিসি-র আনন্দ মাধব (মাঝে)।

কলকাতায় এআইসিসি-র আনন্দ মাধব (মাঝে)। নিজস্ব চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:১২
Share: Save:

অদূরে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগেই সাগর থেকে পাহাড় পদযাত্রায় বেরোবে বাংলার কংগ্রেস। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ওই পদযাত্রাকে উপলক্ষ করেই বামেদের ফের কাছে টানার বার্তা দিতে চাইছে প্রদেশ কংগ্রেস। সেতু-বন্ধনের প্রয়াস সফল হলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাংলায় ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র পথে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে ‘প্রতীকী’ অংশগ্রহণে দেখা যেতে পারে সিপিএমের প্রতিনিধিদের। তেমন হলে বিধানসভা ভোটের পরে সেটাই হবে কংগ্রেস ও বামকে পথে-ময়দানে একসঙ্গে দেখার প্রথম ঘটনা।

কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসে, আগামী ২৮ ডিসেম্বর সাগর থেকে শুরু হওয়ার কথা এ রাজ্যের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এ রাজ্যে ওই পদযাত্রার সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বাম নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের আহ্বান জানাতে পারেন। এই বিষয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। দক্ষিণ ভারত থেকে তাঁর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শুরুর সময়ে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, জাত-পাত, ধর্ম, ভাযা, সংস্কৃতির বিভাজনের বিরুদ্ধে তাঁর এই উদ্যোগ। তাই এই পদযাত্রায় অন্য দল বা ব্যক্তিরাও শামিল হতে পারেন। একই রকম আহ্বানের ভাবনা রয়েছে প্রদেশ স্তরেও। প্রদীপবাবুর কথায়, ‘‘সমমনোভাবাপন্ন সকলের প্রতি আমরা আহ্বান জানাতে চাই। সাংগঠনিক প্রস্তুতি আরও একটু গুছিয়ে নেওয়া হলে ওই দিকে নজর দেওয়া হবে।’’ রাজ্যে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র বিষয়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ও অন্যান্য বিভাজনের কৌশলের বিপরীতে ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি যে হেতু চুরি-লুট-দুর্নীতির প্রতিবাদও রয়েছে, তাই বামেদের পাশে পাওয়ার সুযোগও রয়েছে কংগ্রেসের।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট কাছাকাছি আসতেই বিজেপি আবার এমন ভাব দেখাতে শুরু করেছে যেন, তারাই একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধী! এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস আহ্বান জানালে পদযাত্রায় আমাদের তরফে প্রতীকী অংশগ্রহণে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে বিজেপি ও তৃণমূলের মোকাবিলায় সাংগঠনিক ভাবে কংগ্রেসেরও আরও সক্রিয় হওয়া উচিত।’’ পঞ্চায়েত ভোটে আসন সমঝোতা বা জোটের সিদ্ধান্ত যে এলাকার ‘বাস্তবতা’র ভিত্তিতে স্থানীয় স্তরেই হয়, তা বিলক্ষণ জানেন সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে তাঁদের বড় অংশেরই মত, তৃণমূল ও বিজেপির দ্বিমেরু রাজনীতিকে ঠেকাতে রাজ্য স্তরে বাম ও কংগ্রেসের তরফে একত্রে বার্তা দেওয়া উচিত দলের নিচু তলা ও সাধারণ মানুষের উদ্দেশে। তৃণমূলের নেতা ফিরহাদ হাকিম অবশ্য কটাক্ষ করছেন, ‘‘বাম ও কংগ্রেস, দু’টোই শক্তিহীন। একে অপরের কাঁধে ভর দিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে কী আর হবে!’’ আর রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘‘মানুষ জানে, তৃণমূলকে হারাতে পারে বিজেপিই। কংগ্রেস ও সিপিএম গৃহীত, পরীক্ষিত ও পরিত্যক্ত!’’

গঙ্গাসাগর থেকে আগামী ২৮ তারিখ পদযাত্রা শুরু হয়ে প্রায় দু’মাস পরে শেষ হবে কার্শিয়াঙে। প্রায় ৮০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার কথা ৫৫ দিনে। যাত্রার সূচনা করার কথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবুর। প্রদেশ কংগ্রেসের সব নেতাই ওই সময়ে সাগরে থাকবেন, এমনই প্রস্তুতি চলছে। এআইসিসি-র তরফে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র মিডিয়া ইনচার্জ আনন্দ মাধব শনিবার শহরে এসে যাত্রার প্রস্তুতি ও সমন্বয়ের খবর নিয়েছেন। যে সব রাজ্য দিয়ে রাহুলের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ যাচ্ছে না, সেখানে আলাদা করে যাত্রা হচ্ছে। অসম, ত্রিপুরায় ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে— উল্লেখ করে আনন্দ বলেছেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে লড়াই ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র অন্যতম লক্ষ্য। পশ্চিমবঙ্গেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ। চতুর্দিকে চুরি-দুর্নীতি! আবার তৃণমূল এবং বিজেপির বোঝাপড়াও আমরা দেখতে পাচ্ছি। বাংলার মানুষের কাছে আবেদন, পথে নামুন। কংগ্রেসের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে অত্যাচারের শাসনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠুন!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Congress CPM Bharat Jodo Yatra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy