—প্রতীকী ছবি।
লক্ষ্য ছিল, তৃণমূলকে ধাক্কা দেওয়া। কিন্তু সিবিআইয়ের পদক্ষেপের ধাক্কায় উল্টে বিড়ম্বনায় পড়ে গেল বঙ্গ বিজেপিই! মন্ত্রী-বিধায়কদের গ্রেফতারের ঘটনা ঘিরে রাজ্যে প্রতিক্রিয়া যে বিজেপির পক্ষে যাচ্ছে না, সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও।
কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে এবং মাত্র ৭ দিন আগে শপথ নেওয়া একটা মন্ত্রিসভার দুই সদস্য ও এক বিধায়ককে পুরনো মামলায় সিবিআইয়ের গ্রেফতার করার ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মুখর হয়েছে সব দলই। তৃণমূল তো বটেই, সারদা ও নারদ-কাণ্ডে মামলা লড়ে আসা সিপিএম এবং কংগ্রেসও এই প্রশ্নে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিজেপির ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’র দিকে আঙুল তুলেছে। একই প্রশ্ন উঠছে রাজ্য বিজেপির অন্দরেও। দলের একাংশের মত, ভোটে বিপর্যয়ের পরে রাজ্যে এমনিতেই বিজেপি এখন কোণঠাসা। ভোট-পরবর্তী ‘সন্ত্রাসের শিকার’ হতে হচ্ছে কর্মী-সমর্থকদের। তারই মধ্যে সিবিআইয়ের এমন পদক্ষেপ বিজেপিকে রাজ্যে আরও জনবিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে। সেই সঙ্গেই বেড়ে যাচ্ছে দলের নেতা-কর্মীদের উপরে আরও হামলার আশঙ্কাও।
শাসক দলের ক্ষোভের চেহারা আঁচ করে কলকাতায় মুরলীধর সেন ও হেস্টিংসের সেন্ট জর্জেস রোডে বিজেপির দুই দফতরেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। প্রথম সারির নেতারা কেউ দফতরের দিকে যাচ্ছেন না। প্রকাশ্যে বিবৃতি জারি থেকেও তাঁরা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। সূ্ত্রের খবর, সিবিআইয়ের পদক্ষেপের জন্য এমন সময় বেছে নেওয়া যে বিবেচক সিদ্ধান্ত হয়নি, সেই ক্ষোভের কথা রাজ্য নেতাদের কেউ কেউ জানিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের কাছে।
দলের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘সিবিআইয়ের চার্জশিট তৈরি হয়ে গেলে তারা আদালতে জমা দিয়ে দিতে পারত। তার পরে আদালতের সিদ্ধান্তে যা হওয়ার, হত। পাঁচ বছর ধরে পড়ে থাকা মামলায় গ্রেফতারের জন্য এই সময়টা কেন বেছে নেওয়া হল, কে জানে!’’ প্রকাশ্যে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য সিবিআই সংক্রান্ত বিষয় থেকে দূরত্বই রাখছেন। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের দাবি, ‘‘তদন্ত হচ্ছে আদালতের নির্দেশেই। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই, এই নিয়ে আমাদের ভাবারও কিছু নেই।’’
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন পরিস্থিতি আন্দাজ করে ‘নৈতিক অবস্থানের’ প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করতে চাইছেন। দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ যেমন মনে করিয়ে দিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য অমিত শাহকে সিবিআই গ্রেফতার করেছিল। শাহ মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিয়ে সেই মামলা লড়তে গিয়েছিলেন। সন্তোষের মন্তব্য, ‘‘সিবিআই মামলা হতেই পারে। তেমন ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মোদী আর মমতার মনোভাব দেখলেই তফাত বোঝা যায়। সংখ্যা থাকলেই গুন্ডামি করার অধিকার পাওয়া যায় না!’’
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘শাহের বিরুদ্ধে একাধিক খুনের মামলা ছিল। সবই ফৌজদারি অভিযোগ। আর এখানে কে কেন টাকা নিয়েছেন, সেটাই এখনও প্রমাণিত নয়। দু’টোকে এক করে দেখা চলে না।’’ তাঁর দাবি, ভোটের তহবিলের জন্য টাকা দেওয়ার চল আছেই। নারদ-কাণ্ডে ঘুষের অভিযোগের সত্যাসত্য স্পষ্ট হয়নি বলেই মমতা কাউকে মন্ত্রিসভা থেকে সরাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy