নতুন সাজে বেনফিশের ভ্রাম্যমাণ গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
ময়দানে হয়তো আর ফিরবে না বইমেলা। কিন্তু ময়দানের বইমেলার সঙ্গে যা ছিল সমার্থক, সেই বেনফিশ এ বার নতুন স্বাদে, নতুন সাজে, নতুন রূপে ফিরছে ভোজনরসিকদের কাছে। গোটা কলকাতা জুড়ে।
একটা সময় রাজধানী এক্সপ্রেসেও সরবরাহ করা হতো বেনফিশের ফিশ ফিঙ্গার। স্বর্ণযুগের সেই সব পদের মধ্যে ফিশ ব্যাটার ফ্রাই, ফিশ ফ্রাই, ফিশ ফিঙ্গার, ফিশ রোল তো থাকছেই। সঙ্গে যোগ হচ্ছে ফিশ স্যান্ডউইচ, ফিশ মোমো, গ্রিল্ড ফিশ, গন্ধরাজ ফিশ, ফিশ স্যুপের মতো আইটেম। তবে বেনফিশের রমরমার কালে মুরগি ভাজা-পিৎজা-বার্গারের চেন ও তল্লাটে তল্লাটে তাদের বিপণি ছিল না। তাই প্রত্যাবর্তন কালে বেনফিশের রকমারি স্ন্যাক্স-এর যুগোপযোগী ‘প্যাকেজিং’ হচ্ছে।
নব্বইয়ের দশকের গোড়া থেকে প্রায় দেড় যুগ, রাজ্য মৎস্য দফতরের এই সংস্থাটির প্রতিযোগী মূলত ছিল কেক-প্যাটি বিক্রির একাধিক চেন ও পাড়ার আমিষ ভাজাভুজির দোকান। প্রথম দিকে বেনফিশের খাবারে মানুষের আস্থা ছিল সরকারি সংস্থা হওয়ায়। বিশ্বাস করা হতো, গুণমানে আপস করবে না সরকারি সংস্থাটি। কিন্তু প্রথমে বহু ক্ষেত্রে বাসি মাছের আঁশটে গন্ধ ও পরে বেনফিশের খাবার খেলে অম্বল-বদহজম ব্যাকফুটে ফেলল সংস্থাকে, যারা প্রথম শহরের রাস্তায় রাস্তায় মাছের স্ন্যাক্স বিক্রি শুরু করেছিল। কালে-দিনে এ সবের সঙ্গে যোগ হল ম্যাড়মেড়ে, বস্তাপচা, অপেশাদারি পরিবেশন। সব মিলিয়ে গত এক দশকে মুখ থুবড়ে পড়েছে বেনফিশ। ধর্মতলা, শ্যামবাজার, টালিগঞ্জে বেনফিশের দোকান এখন বন্ধ। হালফিলে বেনফিশের ঘুরে দাঁড়ানো ও হৃতগৌরব পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ সব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে।
এত দিন মাছ কিনে তা তিন মাস হিমায়িত অবস্থায় রেখে ব্যবহার করা হত। ফলে, স্বাদ ভাল হত না। এ বার ঠিক হয়েছে, ১০-১৫ দিন অন্তর মাছ কেনা হবে। মৎস্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আগে বিভিন্ন পদে পারা নামে একটি সামুদ্রিক মাছ ব্যবহার করা হত। তাতে তেমন স্বাদ নেই। এ বার পারা-র বদলে থাকবে দেশি ভেটকি, ভোলা ভেটকি, বম্বে ভেটকি।’’ বদলাচ্ছে তেলও, সয়াবিনের জায়গায় সূর্যমুখী। বেনফিশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিধান রায় বলেন, ‘‘মাছের সতেজতা এবং তেলের গুণগত মানের উপর নির্ভর করে পদের স্বাদ। সতেজ মাছ ব্যবহার করে তা সূর্যমুখী তেলে ভাজলে স্বাদ ভাল হতে বাধ্য।’’ তিনি জানান, ঝকঝকে গাড়িতে নির্দিষ্ট পোশাকে পরিবেশকেরা খাবার বিক্রি করবেন। হাতে গ্লাভস, মাথায় টুপি পরে খাবার দেবেন মহিলারা।’’
মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রকান্ত সিংহ বলেন, ‘‘প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বেনফিশকে ঠিক ভাবে চালানো হয়নি। আমরা সেই হারানো গৌরব ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছি।’’ বেসরকারি সংস্থার মতো আগ্রাসী প্রচারেও নামছে সংস্থা। বিধানবাবুর কথায়, ‘‘রাস্তায় ফেস্টুন, ব্যানারের মাধ্যমে প্রচার করা হবে।’’ মৎস্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মার্চের মধ্যে ৫০টি গাড়িতে মাছের রকমারি পদ বিক্রি করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy