Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
RG Kar Medical College and Hospital Incident

ফোন থেকে কী মোছেন সন্দীপরা?

সিবিআই সূত্রের দাবি, সন্দীপ ৭ অগস্টের পর থেকে বেশ কিছু কল রেকর্ডিং, ভিডিয়ো এবং নানা ছবি ধাপে ধাপে মুছে ফেলেন বলে ফরেন্সিক রিপোর্টে তথ্য উঠে এসেছে।

(বাঁ দিকে) সন্দীপ ঘোষ। অভিজিৎ মণ্ডল (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) সন্দীপ ঘোষ। অভিজিৎ মণ্ডল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৩৮
Share: Save:

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়ার খুন, ধর্ষণের ঘটনার কয়েক দিনের আগে-পরে দু’জনেই ফোন থেকে মুছেছেন নানা তথ্য। আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের মোবাইল ফোনের ফরেন্সিক পরীক্ষার ভিত্তিতে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

সিবিআই সূত্রের দাবি, সন্দীপ ৭ অগস্টের পর থেকে বেশ কিছু কল রেকর্ডিং, ভিডিয়ো এবং নানা ছবি ধাপে ধাপে মুছে ফেলেন বলে ফরেন্সিক রিপোর্টে তথ্য উঠে এসেছে। অন্য দিকে, ৯ অগস্ট সকাল ১০টার পর থেকে ১১ অগস্ট রাত পর্যন্ত অভিজিৎ তাঁর মোবাইল ফোন থেকে ধাপে ধাপে নানা নথি মুছে ফেলেন বলে দাবি তদন্তকারীদের সূত্রের। সিবিআই সূত্রের দাবি, ফোনের নথি, কয়েকটি ভিডিয়ো এবং ছবি অভিজিৎ মুছে দেন। সব মিলিয়ে ৪০টিরও বেশি ফোন কলের নথি অভিজিৎ মুছে ফেলেন বলে তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি। ওই সব কল রেকর্ডিংয়ের সূত্র নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার খুন ও ধর্ষণের ঘটনার তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠেছে বলে দাবি তদন্তকারী সূত্রের।

তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, “চিকিৎসক পড়ুয়ার খুন-ধর্ষণ পূর্বপরিকল্পিত বলে সন্দেহের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সন্দীপ, অভিজিতের মোবাইল ফোনের ফরেন্সিক পরীক্ষায় দু’জনেই প্রমাণ লোপাটে জড়িত বলেও ইঙ্গিত মিলছে। আর জি করের ওই অপরাধের ঘটনার কাছেপিঠে দু’জনেই কোনও কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন। সব কিছু অত্যন্ত সন্দেহজনক বলে মনে হচ্ছে।” তদন্তকারী ওই অফিসারের কথায়, “আর জি করের ওই ডাক্তার ছাত্রীর যে বিপদ হতে পারে, হাসপাতালের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ তা-ও আঁচ করেছিলেন বলে আমরা সূত্র পেয়েছি। তবে এত বড় বিপদ হয়তো ওঁরা আঁচ করেননি। এই বিষয়গুলি নিয়ে কিছু ধোঁয়াশা আছে।

তবে তথ্যগুলি গুরুত্বপূর্ণ।” এ বিষয়ে যা জানানোর শীর্ষ আদালতে জানানো হবে, দাবি সিবিআইয়ের এক কর্তার।

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, আর জি করের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানা জনের সঙ্গে কথা বলে অপরাধে সন্দীপের যোগের বিষয়টি অনেকটাই জোরালো হচ্ছে। তাঁর মোবাইল ফোন সংক্রান্ত ফরেন্সিক রিপোর্ট তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে জোরালো তথ্যপ্রমাণ বলেও দাবি।

তদন্তকারীদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, ঘটনা জানাজানির দিন, অর্থাৎ ৯ অগস্ট সকাল থেকে আর জি কর কাণ্ডের যাবতীয় তদন্ত, অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার এবং জিজ্ঞাসাবাদে অভিজিৎ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু কারও অদৃশ্য হাত পদে পদে টালা থানার প্রাক্তন ওসি-কে নিয়ন্ত্রণ করে বলে সিবিআইয়ের সন্দেহ গাঢ় হচ্ছে। অভিজিৎ কেন তাঁর ফোনের নথি মুছলেন? স্বেচ্ছায়? না কি কেউ তাঁর উপরে চাপ সৃষ্টি বা তাঁকে পরিচালনা করেন, এ সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, “ধর্ষণ ও খুনে খাতায়-কলমে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। কিন্তু যা ঘটনাক্রম, তাতে সঞ্জয়কে সামনে রেখে প্রভাবশালী কাউকে বা প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার সংগঠিত চেষ্টার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।”

সিবিআই সূত্রে দাবি, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টার রহস্যভেদে সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ আর জি করের চিকিৎসক, আধিকারিক, সিনিয়র ও জুনিয়র ডাক্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর পরে সন্দীপ ও অভিজিতের মোবাইল ফোন থেকে যাঁদের সঙ্গে কথা বলার নথি মোছা হয়েছে, সেই ব্যক্তিদের তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অভিজিৎ ও সন্দীপের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও সিবিআই সূত্রে খবর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy