প্রিজ়ন ভ্যালে তোলা হচ্ছে সুবোধ সিংহকে। —নিজস্ব চিত্র।
পরনে হাফহাতা সাদা টিশার্ট, কালো ট্রাউজ়ার্স! আর মাথায় মুখঢাকা হেলমেট। এই অবস্থায় ব্যারাকপুর আদালত থেকে বেরোলেন সুবোধ সিংহ। তাঁকে দেখতে পেয়েই পর পর প্রশ্ন করে গেলেন বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা! কিন্তু ঘাড় ঘুরিয়ে দেখার কোনও রকম সুযোগ না দিয়েই বিহারের ‘গ্যাংস্টার’কে প্রিজ়ন ভ্যানে তুলে নিয়ে চলে গেল পুলিশ।
বেলঘরিয়ায় ব্যবসায়ীর গাড়িতে গু়লি ছোড়ার ঘটনায় সুবোধকে গ্রেফতার করেছিল ব্যারাকপুরের পুলিশ। সাত দিন তাদের হেফাজতেও ছিলেন তিনি। তার মেয়াদ শেষ হওয়ায় শনিবার সুবোধকে আবার ব্যারাকপুর আদালতে হাজির করানো হয়। পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে তাঁর উপরে হামলা বা কোনও প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আগের দিনের মতোই সজাগ ছিল পুলিশ। সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী ঘিরে রেখেছিল আদালত চত্বর। আদালতে সওয়াল-জবাব শেষে সুবোধকে আরও ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। শুনানির পর সুবোধকে যখন আদালত থেকে বার করা হয়, তখনও চারিদিকে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার বেষ্টনী ছিল। নিরাপত্তার স্বার্থেই মাথা-মুখ ঢাকা হেলমেট পরিয়ে সুবোধকে আদালত থেকে বার করা হয়। আগের দিনেও একই পন্থা নিয়েছিল পুলিশ।
রাজ্যের একাধিক সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত ‘গোল্ডেন ডাকু’ সুবোধ। ২০২২ সালে আসানসোলের একটি স্বর্ণবিপণিতে ডাকাতির ঘটনার তদন্তে বিহারের বেউর জেল থেকে তাঁকে এ রাজ্যে নিয়ে এসেছে পুলিশ। শুধু ডাকাতিই নয়, সুবোধের বিরুদ্ধে খুন, হুমকি-সহ আরও বিভিন্ন মামলাও রয়েছে। দীর্ঘ টানাপড়েনের পর সুবোধকে এ রাজ্যে পুলিশ আসতে সক্ষম হওয়ায় সেই সব মামলার তদন্ত আবার নতুন করে গতি পেয়েছে। গত ১৫ জুন বেলঘরিয়া রথতলায় ব্যারাকপুরের ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন বিহারের। সূত্রের খবর, ধৃতদের জেরা করেই ওই ঘটনায় সুবোধের যোগসূত্র পাওয়ায় তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ।
শনিবারের শুনানিতে সুবোধের আইনজীবী দাবি করেন, তাঁর মক্কেল সাত বছর ধরে জেলে রয়েছেন। তিনি কোনও ভাবে গুলি চালানোর ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন। পুলিশি হেফাজত কম করারও আবেদন জানানো হয়। অন্য দিকে, সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি চালানো দুই দুষ্কৃতী এখনও ধরা পড়েনি। তবে আরও যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁদের নেপথ্যে সুবোধ রয়েছেন বলেই তদন্তে জানা গিয়েছে। তাই তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। সব দিক বিবেচনা করে আবার পুলিশি হেফাজাতের নির্দেশ দেন বিচারক।
সুবোধ অবশ্য আগে একাধিক বার দাবি করেছেন, এ রাজ্যে কোনও অপরাধের ঘটনার সঙ্গেই তিনি যুক্ত নন। রাজ্য পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বলেই তাঁর ঘাড়ে যাবতীয় দোষ চাপানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy