Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪

বহিরাগত-তরজার আবহে বুথের পথে

দেড় মাস ধরে ঘটনাবহুল প্রচার পর্বের শেষে আজ, বুধবার ভোটে চলল আসানসোল। ভোট ঘোষণার দিনই প্রার্থীর নাম জানিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল ও সিপিএম। বিজেপি দিন কয়েক পরে প্রার্থী জানায়। আসানসোলে প্রার্থী করা হয় মুম্বইয়ের গায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে। প্রচারে নেমেই জনতার নজর কাড়তে শুরু করেন তিনি। ভিড়ও জমতে শুরু করে তাঁকে ঘিরে। এর পরেই তৈরি হয় একের পর এক বিতর্ক। প্রথমে ওঠে বাবুলের বিরুদ্ধে মদ্যপান করে প্রচারে যাওয়ার অভিযোগ।

ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আগে দুর্গাপুরে শেষ বেলায় তালিকায় চোখ বুলিয়ে নেওয়া।

ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আগে দুর্গাপুরে শেষ বেলায় তালিকায় চোখ বুলিয়ে নেওয়া।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৪ ০১:০২
Share: Save:

দেড় মাস ধরে ঘটনাবহুল প্রচার পর্বের শেষে আজ, বুধবার ভোটে চলল আসানসোল।

ভোট ঘোষণার দিনই প্রার্থীর নাম জানিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল ও সিপিএম। বিজেপি দিন কয়েক পরে প্রার্থী জানায়। আসানসোলে প্রার্থী করা হয় মুম্বইয়ের গায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে। প্রচারে নেমেই জনতার নজর কাড়তে শুরু করেন তিনি। ভিড়ও জমতে শুরু করে তাঁকে ঘিরে। এর পরেই তৈরি হয় একের পর এক বিতর্ক। প্রথমে ওঠে বাবুলের বিরুদ্ধে মদ্যপান করে প্রচারে যাওয়ার অভিযোগ। তা থেকে রেহাই পেতে না পেতেই আবার তাঁকে জড়িয়ে দেওয়া হয় অস্ত্র আইনের মামলায়। সেই সঙ্গে যোগ হয় পুলিশের দায়ের করা জাতীয় সড়ক অবরোধের মামলা। তাতে তাঁকে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনও নিতে হয়।

সোমবার প্রচার শেষ হলেও অভিযোগ থেমে থাকেনি। সিপিএম এবং বিজেপি-র তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, বহিরাগতদের এনে ভোট লুঠের ছক কষেছে শাসকদল। বিজেপি-র আসানসোল জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকারের দাবি, পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুর, খোট্টাডিহি, অন্ডালের বহুলা, মদনপুরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূলের লোকেরা ভয় দেখিয়েছে। তাদের বেশির ভাগই বহিরাগত। তাঁরা তা কমিশনে জানিয়েছেন। বহিরাগত ঢুকিয়ে তৃণমূল গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন সিপিএম প্রার্থী বংশগোপাল চৌধুরীও।

বিস্তারিত দেখতে ক্লিক করুন...

বিরোধীদের দাবি, দলের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে স্থানীয় কর্মীদের উপরে নির্ভর না করে বাইরে থেকে লোক এনে ভোটের কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি ভি শিবদাসনের আবার পাল্টা দাবি, বিজেপি ঝাড়খণ্ড থেকে এবং সিপিএম বীরভূম থেকে লোক এনেছে। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন জানান, বহিরাগত আনার অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন। কিন্তু কোথায় ওই বহিরাগতেরা রয়েছে, তা নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে বলা হলে তা আর কেউ জানায়নি। তবে নজরদারি চলছে।

গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে এই লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল ১ লাখ ৫ হাজার ভোটে এগিয়ে। তা সত্ত্বেও তৃণমূল যে নিশ্চিন্তে থাকতে পারছে না, তা তাদের প্রচার-কর্মসূচি থেকেই পরিষ্কার। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কেন্দ্রে দু’দফায় মোট চারটি জনসভা করে গিয়েছেন। দু’দফায় ঘুরে গিয়েছেন দলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। এ ছাড়াও একে একে প্রচার করে গিয়েছেন জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, নচিকেতা, পদ্মিনী কোলাপুরীরা। এসেছেন দলের শীর্ষস্তরের নেতারাও। তবে প্রচার পর্বে আসানসোল সব থেকে বেশি ভিড় দেখেছে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর সভায়।

এই শিল্পাঞ্চলে এ পর্যন্ত সাংসদ হয়েছেন ৫ জন শ্রমিক নেতা। ১৯৮০ সালে সিপিএমের রবীন সেন কংগ্রেসের আনন্দগোপাল মুখোপাধ্যায়ের কাছে হারেন। ১৯৮৯ সালে আসনটি পুনর্দখল করে বামেরা। জেতেন সিপিএমের হারাধন রায়। তার পরে একে একে সাংসদ হয়েছেন সিপিএমের বিকাশ চৌধুরী ও বংশগোপাল চৌধুরী। তবে গত তিন দশকে লোকসভা ভোটকে কেন্দ্র করে নানা ঘটনা ঘটলেও এ বারের মতো ঘটনাবহুল প্রচারপর্ব কখনও হয়নি বলে মত রাজনৈতিক মহলের। ঝাড়খণ্ড সীমানা ঘেঁষা এই কেন্দ্রে অবাঙালি ভোটার প্রচুর। প্রচারে তাঁদের নানা ভাবে নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করেছে সব পক্ষই। জনতা কার দিকে মত দিল, রায় আজ জমা পড়বে ইভিএমে।

অন্য বিষয়গুলি:

nilotpal roychoudhuri asansol lok sabha election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy