গানের আসরে পবিত্র ভট্টাচার্য (কালো পাঞ্জাবি)। ফাইল চিত্র।
প্রয়াত হলেন শিল্পা়ঞ্চলের বিশিষ্ট ঝুমুর শিল্পী ও গবেষক পবিত্র ভট্টাচার্য (৬৬)। বুধবার আসানসোলের কোর্টমোড়ে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পবিত্রবাবু। রেখে গেলন স্ত্রী ও দুই ছেলেকে।
এ দিন আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে পবিত্রবাবুর দেহ সকাল ১০টা থেকে এক ঘণ্টার জন্য শায়িত রাখা হয়। শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রাক্তন মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, লেখিকা জয়া মিত্র, নাট্যকার স্বপন বিশ্বাস, কবি নীলোৎপল ভট্টাচার্য, বিকাশ গায়েন-সহ শিল্পাঞ্চলের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীরা।
ইস্টার্ন কোলফিল্ডসে কাজ করার সঙ্গে জীবনভর ঝুমুরের পিছু ধাওয়া করেছেন পবিত্র ভট্টাচার্য। দীনেন্দ্র চৌধুরী ছিলেন লোকসঙ্গীতে তাঁর গুরু। তালিম ছিল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতেরও। ঝুমুর গান সংগ্রহের জন্য পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রাম চষে ফেলেছিলেন পবিত্রবাবু। টানা ১৫ বছর ধরে ঝুমুর শিল্পীদের নিয়ে আসানসোলে আয়োজন করতেন ‘চামু কর্মকার উত্সব’। অনায়াসে গড়গড়িয়ে বলে যেতে পারতেন প্রাচীন ‘জম্বালিকা’ থেকে ঝুমুরের বিবর্তনের কথা। সাদাসিধে পবিত্রবাবু ঝুমুর নিয়ে আলোচনা করতে বসলেই উপরি পাওনা থাকত নানান উপবিভাগ, তাল ও লয়ের ঝুমুর। ৩০ বছর ধরে অক্লান্ত গবেষণা করে লিখেছিলেন ‘বৃহত্তর মানভূমের ঝুমুর’। এ ছাড়াও সম্পাদনা করেছেন ভবপ্রীতানন্দ ওঝার ‘বৃহত্ ঝুমুর রসমঞ্জরী’।
সম্প্রতি গৌড়ীয় ও বাংলা নৃত্যে ঝুমুর-কীর্তনের ভূমিকা নিয়ে ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনে গবেষণাও শেষ করেন পবিত্রবাবু। লেখিকা জয়াদেবী খানিকটা স্মৃতিমেদুর হয়ে বলেন, ‘‘কলকাতায় ঝুমুরের একটি কর্মশালায় নাচনি সরস্বতী বাঈ-এর রসিকের ভূমিকায় পবিত্রবাবুর গান এখনও মনে পড়ে।’’ পবিত্রবাবুর বড় ছেলে তীর্থবাবু বলেন, ‘‘জীবনভর শুধু ঝুমুর গান নিয়ে চর্চাই করেননি বাবা। তিনি সাধ্যমতো আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ঝুমুর শিল্পীদেরও পাশে দাঁড়াতেন।’’ শহরের বুদ্ধিজীবীদের তাই আক্ষেপ, ‘‘পবিত্রবাবুর মৃত্যুতে লোক সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রেও একটি অধ্যায়ের শেষ হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy