Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪

একই গাড়ির নানা রেজিস্ট্রেশন, নালিশ

গাড়ির মডেল ও নির্মাণকারী সংস্থা এক, কিন্তু রেজিস্ট্রেশনে নাম আলাদা। মোটর ভেহিক্যাল দফতরের আসানসোল শাখার বিরুদ্ধে এ ভাবে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার অভিযোগ করলেন গাড়ি মালিকদের একাংশ। সাধারণত, ভেহিক্যাল দফতর থেকে বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত, দু’ধরনের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু ভেহিক্যাল দফতর থেকে একই গাড়ির বিভিন্ন রকম ছাড়পত্র মিলছে বলে অভিযোগ।

এই সব গাড়ি নিয়েই অভিযোগ।—নিজস্ব চিত্র।

এই সব গাড়ি নিয়েই অভিযোগ।—নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১১
Share: Save:

গাড়ির মডেল ও নির্মাণকারী সংস্থা এক, কিন্তু রেজিস্ট্রেশনে নাম আলাদা। মোটর ভেহিক্যাল দফতরের আসানসোল শাখার বিরুদ্ধে এ ভাবে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার অভিযোগ করলেন গাড়ি মালিকদের একাংশ।

সাধারণত, ভেহিক্যাল দফতর থেকে বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত, দু’ধরনের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু ভেহিক্যাল দফতর থেকে একই গাড়ির বিভিন্ন রকম ছাড়পত্র মিলছে বলে অভিযোগ। চরিত্র অনুযায়ী পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়ি হলেও, নম্বর প্লেটে অনেক সময়ে প্রাইভেট গাড়ির চিহ্ন ‘ডবলিউবি-৩৮’ থাকছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজ্য সরকার পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দেয়, কলকাতার বাইরে মিনি ট্রাক মডেলের একটি গাড়িকে প্যাসেঞ্জার (প্রাইভেট) হিসেবে ছাড়পত্র দিতে হবে। ২০১১ সালের ৭ মার্চ আসানসোলের ঊষাগ্রাম এলাকার একটি দোকান থেকে ওই মডেলের কয়েকটি গাড়ি বিক্রি করা হয়। কিন্তু বিক্রির রসিদে লেখা হয় শুধুমাত্র ‘প্যাসেঞ্জার’ গাড়ি। বাদ যায় ‘প্রাইভেট’ শব্দটি। কিন্তু ওই দোকানের ম্যানেজার প্রভাত সরকারের দাবি, “সরকারের সমস্ত নিয়ম মেনেই গাড়ি বিক্রি করা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না।” যদিও আসানসোলের মোটর ভেহিক্যাল দফতর থেকেও গাড়িগুলিকে দোকানের রসিদের মতোই প্যাসেঞ্জার হিসেবে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আবার ২০১১ সালের ১৮ মার্চ ওই মডেলেরই চারটি গাড়িকে কমার্শিয়াল রেজিস্ট্রেশন দেয় ভেহিক্যাল দফতর। কিন্তু এর কয়েকদিন পরেই কমার্শিয়াল রজিস্ট্রেশন দেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে ২০১১-র ৬ মার্চ নাগাদ ওই একই মডেলের গাড়িকে ‘লাইট মোটর ভেহিক্যাল (এলএমভি) কার’ হিসেবে ছাড়পত্র দেওয়া হয় বলে অভিযোগ গাড়ি মালিকদের। এ বারও বাদ যায় ‘প্রাইভেট’ শব্দটি। আবার দফতরের নথিতে দেখা যাচ্ছে ২ জুন ওই মডেলেরই গাড়ি ‘প্রাইভেট’ হিসেবে ছাড়পত্র পায়। অর্থাৎ, একই মডেলের গাড়িকে চার ভাবে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন এবং গাড়ির চরিত্র না মেলায় প্রায়শই ট্রাফিক পুলিশের জরিমানার কবলে পড়তে হচ্ছে গাড়ি-মালিকদের। এর ফলে যাত্রীবাহি গাড়ি চলাচলেও জটিলতা তৈরি হচ্ছে।

গাড়ি মালিকদের তরফে মহকুমাশাসকের দফতরে বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে। মহকুমাশাসক অভিতাভ দাস বলেন, “উপযুক্ত তদন্ত করে সমস্যার সমাধান করা হবে।” বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনও বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখছি। এমনটা হওয়া উচিত নয়।” আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত আসানসোল সাবডিভিশনাল মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়াকার্স ইউনিয়নের সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়া পরিবহন মন্ত্রী মদন মিত্রের কাছে রেজিস্ট্রেশন বিভ্রাট মেটানোর আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। রাজুবাবুর অভিযোগ, “একটি গাড়ির দোকানের সঙ্গে পরিবহন দফতরের দু’জন দালাল ও কয়েকজন কর্মীর অশুভ আঁতাতের ফলেই এমন হচ্ছে। এর জেরে আমাদের জীবিকা মার খাচ্ছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, বিগত বাম সরকারের আমলেই এই বিভ্রাট শুরু হয়েছে। যদিও সিপিএমের আসানসোল জোনাল সম্পাদক পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দোষারোপ না করে প্রশাসন সদর্থক পদক্ষেপ করুক।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy