ঘরের বাইরে পড়ে রক্ত। ইনসেটে, টুটুল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
বন্ধুকে চালকলের কাজে ঢুকিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বন্ধু কেন উঁচু পদে কাজ করবেন, তা নিয়ে ‘ঈর্ষা’ ছিল। অভিযোগ, সে রাগে বন্ধু টুটুল মণ্ডলকে (২২) ছুরির কোপে বুধবার রাতে খুন করেন সমবয়সী বিকাশ গড়াই। বৃহস্পতিবার সকালে বর্ধমান থানায় আত্মসমর্পণ করেন বিকাশ।
টুটুল এবং বিকাশ বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জের একটি চালকলে কাজ করতেন। দু’জনেই বীরভূমের সাঁইথিয়ার শিমুলিয়াহাট এলাকার বাসিন্দা। পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘বিকাশের দাবি, ঈর্ষা থেকেই সে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। পরে অনুতপ্ত হয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করেছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
বুধবার রাত ১০টা নাগাদ টুটুলকে রক্তাক্ত অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে আসা হলে সেখানেই তাঁকে মৃত বলে জানান ডাক্তারেরা। টুটুলের বাবা প্রভাত মণ্ডলের অভিযোগ, দিন পনেরো আগে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তাঁর ছেলেকে চালকলে কাজ করতে না যাওয়ার ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন বিকাশ। কিন্তু তাতে কান দেননি টুটুল। তার জেরেই এই ঘটনা।
চালকল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস আটেক আগে বিকাশ তাঁর বন্ধু টুটুলকে সেখানে নিয়ে যান। বিকাশ শ্রমিক হিসেবে কাজ করলেও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ টুটুলকে অফিসে কাজ দেওয়া হয়। নিহতের পরিবারের দাবি, এ নিয়েই দু’জনের মন কষাকষি শুরু হয়। প্রভাতবাবুর দাবি, ‘‘বন্ধু ঠান্ডা ঘরে বসে আরামে কাজ করবে, এটা মানতে পারেনি বিকাশ।’’
এ দিন চালকলে গিয়ে দেখা যায়, বিকাশের ঘর তালা বন্ধ। বন্ধ ঘরের বাইরে পড়ে চাপ চাপ রক্ত। চালকলের অন্য কর্মীরা জানান, বিকাশ এবং টুটুল চালকলের অন্য কর্মীদের সঙ্গে পাশাপাশি দু’টি মেসে থাকতেন। বুধবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মোবাইলে একটি অ্যাপ চালু করে দেওয়ার জন্য টুটুলকে নিজের ঘরে ডাকেন বিকাশ। ঘণ্টাখানেক পরে সজল মণ্ডল নামে অন্য এক কর্মী বিকাশের ঘরে যান রাতের খাওয়ার জন্য ডাকতে। অভিযোগ, সজলই দেখেন বিকাশের ঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন টুটুল। তাঁর গলার নলি কাটা এবং মাথায় চোট রয়েছে। পাশে পড়ে রক্তমাখা ছুরি। চিৎকারে জড়ো হন অন্যেরা। পৌঁছয় পুলিশ। বিকাশের খোঁজ শুরু হয়। পুলিশের দাবি, চালকলের ‘সিসিটিভি’-তে দেখা গিয়েছে, বিকাশ রাত পৌনে ৯টা নাগাদ সাইকেল নিয়ে মিল থেকে বেরিয়ে যান।
ওই চালকলের ম্যানেজার নির্মল শ্যাম বলেন, ‘‘কাজের জায়গায় টুটুল ও বিকাশের মধ্যে কোনও অশান্তি কোনও দিন চোখে পড়েনি। কিন্তু ভিতরে ভিতরে এ রকম চলছে তা কেউ বুঝতে পারেনি।’’ এ দিন বহু চেষ্টা করেও বিকাশের বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy