বরাকরে নদে উদ্ধারকাজে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের দল। মঙ্গলবার বিকেলে। ছবি: পাপন চৌধুরী
কার্তিক পূর্ণিমা উপলক্ষে বরাকর নদে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেলেন মামা-ভাগ্নে। মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘটনার পরে বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও ডুবুরি নামানো হয়। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁদের খোঁজ মেলেনি। এ দিনই বিকেলে ওই জায়গায় স্নানে নেমে তলিয়ে যেতে বসেছিলেন আর এক তরুণ। তাঁকে তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধার করেন বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছরই কার্তিক পূর্ণিমায় বরাকর নদে পুণ্যস্নানে আসেন লক্ষাধিক মানুষ। পুরনো এই রীতি মেনে মঙ্গলবার সকাল থেকে ভিড় জমিয়েছিলেন অনেকে। ভিন্ রাজ্যের মানুষজনও এই দিনটিতে বরাকর নদে স্নান করতে আসেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধানবাদের হিরাপুর অঞ্চলের বাসিন্দা রাজু দাস তাঁর বারো বছরের ভাগ্নে রাজু রাম ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে এসেছিলেন। দুপুর ১১টা নাগাদ রাজুবাবু ভাগ্নেকে নিয়ে নদীতে নামেন। কিছুক্ষণ পরে পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য পরিজনেরা তাঁদের তলিয়ে যেতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। অনেকেই তাঁদের বাঁচাতে ছুটে যান। কিন্তু উদ্ধার করা যায়নি বলে জানান তাঁরা।
ঘটনার পরেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে হাজির পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারেরা এলাকা ঘিরে ফেলেন। অন্য লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র স্নান করতে পাঠানো হয়। দুপুর ২টো নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের উদ্ধারকারী দল ও ডুবুরিরা। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ তাঁরা জলে উদ্ধারকাজে নামেন। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত নিখোঁজ দু’জনের হদিস মেলেনি। এই উদ্ধারকাজ চালানোর সময়েই কিছুটা দূরে আর এক তরুণকে তলিয়ে যেতে দেখেন ডুবুরিরা। সঙ্গে-সঙ্গে সেখানে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে উদ্ধার করেন তাঁরা।
উদ্ধারকাজ চলার সময়ে পাড়ে বসে কাঁদছিলেন রাজু রামের বাবা গিরিধারী রাম। তিনি জানান, কখনও তাঁরা এখানে স্নান করতে আসেননি। প্রতিবেশীদের কথায় এই প্রথম এসেছিলেন। আর তার পরেই এই রকম দুর্ঘটনা ঘটে গেল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার নদের যেখানে যেখানে দু’জনের তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কয়েকটি কুয়ো আছে। সেগুলি বেশ গভীর। ওই জায়গায় জলের ঘূর্ণিপাকও থাকে। গরমে পুরো নদে গোড়ালি অবধি জল থাকলেও ওই জায়গা জলে ভরা থাকে। যে কোনও সময়ে এখানে স্নান করতে আসা মানুষজনকে ওই জায়গায় যেতে নিষেধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ দিনও আশপাশের মানুষজন ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিভিক ভলান্টিয়ারেরা পুণ্যার্থীদের ওই বিপজ্জনক জায়গায় যেতে নিষেধ করছিলেন বলে দাবি বাসিন্দাদের। কিন্তু তার মধ্যেও কোন ফাঁকে দু’জন সেখানে পৌঁছে গেলেন, তা বোঝা যাচ্ছে না বলে জানান তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy