১ নম্বর গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকদের একাংশ। নিজস্ব চিত্র
অন্য দফতরে ডেপুটেশনে পাঠানো রাজ্য সরকারের সংস্থা দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) কর্মীরা ফেব্রুয়ারির বেতন পাননি। যাতায়াতের ভাতাও মিলছে না। যত দিন বেতন না মিলছে, তত দিন তাঁদের হাজিরা ডিপিএলেই করা হোক। এই দাবিতে বৃহস্পতিবার ১ নম্বর গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন ওই শ্রমিকদের একাংশ।
ডিপিএলের কোকআভেন প্ল্যান্ট ২০১৫-এর ৩ জুন বন্ধ হয়ে যায়। লাগাতার লোকসানে চলা রুগ্ণ ডিপিএল-কে বাঁচাতে রাজ্য সরকার অন্য বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে এই সংস্থাকে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৯-এর ১ জানুয়ারি থেকে ডিপিএলের মালিকানা চলে যায় পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে। শুরু হয় ডিপিএলে উদ্বৃত্ত কর্মী সংখ্যা কমানোর উদ্যোগ। সমীক্ষা করে দেখা যায়, কোকআভেন প্ল্যান্ট ছাড়াও পাওয়ার প্ল্যান্টের বিভিন্ন বিভাগেও অতিরিক্ত কর্মী রয়েছেন। এমন প্রায় ৩৩২ জন কর্মীকে অন্য সরকারি দফতরে বদলি করার সরকারি নির্দেশিকা আসে ২০২২-এর ২২ ডিসেম্বর। তাঁদের পশ্চিম বর্ধমান ছাড়াও পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূমের নানা জায়গায় ডেপুটেশনে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ, ডেপুটেশনে অন্য দফতরে যোগ দেওয়া কর্মীরা মাস পয়লা বেতন পাননি। বিক্ষোভকারীদের দাবি, আগে ডিপিএলেই চাকরি করায় যাতায়াতের খরচ তেমন ছিল না। বেতনের সব টাকা সংসারের কাজে লাগত। এখন অন্য দফতরে, এমনকি, অন্য জেলায় বদলি করে দেওয়ায় যাতায়াতে বেতনের একটা বড় অংশ খরচ হয়ে যাচ্ছে। তার উপরে মাসের প্রথম দিন বেতন না মেলায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। তাঁদের তরফে বাঁকুড়া খাদ্য দফতরে ডেপুটেশনে যাওয়া কর্মী নিমাই কর্মকার বলেন, “আমাদের ‘ডেপুটেশন অ্যালাউন্স’ দেওয়া হোক অথবা যাতায়াতের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হোক। আর, যত দিন বেতন না মিলছে, তত দিন ডিপিএলেই আমাদের হাজিরার ব্যবস্থা করা হোক। ডিপিএল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জন্যই এই দূরবস্থা।”
ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র অবশ্য বলেন, “যাঁরা বিক্ষোভ করছেন তাঁরা ডিপিএলেরই কর্মী। রাজ্য সরকারের কাজে তাঁরা ডেপুটেশনে আছেন। আমাদের তরফে সামান্য আর্থিক ঘাটতির কারণে বেতন সময়ে দিতে পারিনি। দ্রুত বেতন পাবেন ওঁরা।”
এ দিনের বিক্ষোভ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মাসের প্রথমে বেতন মিলছে না কর্মীদের। এ থেকে পরিষ্কার যে রাজ্য সরকার দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। প্রায় আট হাজার প্রাথমিক স্কুল বন্ধ হতে চলেছে। আরওঅনেক কিছু হবে।” আইএনটিটিইিউসি ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি কল্লোল বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ডিপিএলের উদ্বৃত্ত কর্মীদের কারও চাকরি যাবে না। তাই অতিরিক্ত কর্মীদের সরকারেরই অন্য দফতরে বদলি করা হয়েছে। বেতন সময়ে না পাওয়ার পিছনে কর্তৃপক্ষের একাংশ দায়ী। দ্রুত সমস্যামিটে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy