ঘটনাস্থল খুঁটিয়ে দেখছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
পরপর বঁটির কোপে এক যুবতীর বাঁ হাতের তিনটি আঙুল কাটা গেল। আড়াআড়ি আঘাত করা হয়েছে বুল্টি ঘোষ নামে বছর ২৯-এর ওই যুবতীর মুখেও। শুক্রবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার পলসোনা গ্রামের ঘটনা। তিনি এই মুহূর্তে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই যুবতী তাঁদের জানিয়েছেন, বাড়িরই একটি ঘরে আট বছরের ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। পেশায় ছানা ব্যবসায়ী স্বামী উৎপল ঘোষ প্রতি দিনই রাতে বাড়ি ফেরেন বলে বাড়ির মূল দরজা এবং ঘরের দরজা ভেজানো ছিল। তবে ঘরে আলো জ্বলছিল। আক্রান্ত মহিলার কথায়, ‘‘রাত তখন ১০টা-সাড়ে ১০টা হবে। আলো বন্ধ হয় আচমকা। ঘুম ভেঙে যায়। অন্ধকারের মধ্যেও বুঝতে পারি ঘরে কেউ এক জন রয়েছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারাল কিছু দিয়ে হামলা চালিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে সে বেরিয়ে যায়।’’
পাশের দু’টি ঘরে শুয়েছিলেন মহিলার দেওর টোটোন, জা সুলেখা, শ্বশুর সুচাঁদ ও শাশুড়ি টুসুদেবী। টোটোনবাবু বলেন, ‘‘আচমকা বাড়ির বারান্দা থেকে গোঙানির আওয়াজ শুনি। ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি বৌদি যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ।’’ ততক্ষণে চলে আসেন বাড়ির বাকিরাও। আসেন পড়শি, বাড়ির কাছেই থাকা অন্য আত্মীয়েরা এবং গ্রামের সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। খানিক বাদে ব্যবসার কাজ সেরে ফেরেন উৎপলবাবুও।
জখম যুবতীকে উদ্ধার করে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে, পরে সেখান থেকে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকেরা জানান, যুবতীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তবে মুখের ভিতরের বিভিন্ন হাড়ে গুরুতর চোট রয়েছে।
উৎপলবাবুদের একতলা বাড়িটি কাটোয়া-মালডাঙা রাজ্য সড়কের ধারেই। যেখানে বাড়ি, তার থেকে হাত কয়েক দূরে দূরে অন্য বাড়িগুলি। রাস্তায় পথবাতিও নেই। বাড়ির পিছন দিকে বিস্তীর্ণ ধান জমি। নেই বসতি। রাত হয়ে যাওয়ায় গ্রামও নিঝুম হয়ে গিয়েছিল । এই পরিস্থিতির ‘সুযোগ’ই হামলাকারী কাজে লাগায় বলে তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান।
ঘটনার পরে রাতেই গ্রামে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাসের নেতৃত্বে পুলিশের বড় বাহিনী গ্রামে যায়। তাঁদের কাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেন গ্রামবাসী। তবে প্রাথমিক তদন্তের পরে এই ঘটনার কারণ নিয়ে ধন্দ রয়েছে বলে তদন্তকারীরা জানান। বিশদে কিছু সূত্র জানতে মহিলার আত্মীয় কয়েক জনের সঙ্গে শনিবার রাত পর্যন্ত কথা বলছে পুলিশ।
তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, হামলাকারী ওই বাড়ির পরিচিত এবং ওই বাড়িতে যাওয়া-আসাও রয়েছে। কারণ, খাটের তলায় বঁটিটি রাখা ছিল। ঘরে ঢুকে বঁটিটি কোথায় রয়েছে, তা বাইরের কারও পক্ষে জানা সম্ভব নয়। পুলিশ বঁটিটি উদ্ধার করেছে।
জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত অভিযুক্ত ধরা পড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy