মাধ্যমিকে নবম অনুশ্রী ঘোষকে শুভেচ্ছা। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
স্কুলের নানা ক্লাসে ‘সেরা’ হওয়া ছাত্র বা ছাত্রীটি মাধ্যমিকে কত নম্বর পেয়েছে, অন্য ছাত্রছাত্রীদের ফলাফলই বা কেমন— সকাল থেকে তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় ভুগলেন আসানসোল, রানিগঞ্জ, দুর্গাপুর-সহ নানা স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং
শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বুধবার মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের পরে, দিনভর এমনই উৎকণ্ঠায় কেটেছে বলে জানান একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, মাধ্যমিকের ফল বেরিয়েছে। অথচ, মধ্য শিক্ষা পর্ষদ থেকে রাত পর্যন্ত স্কুলের ফলাফলের বিষয়ে সামগ্রিক কোনও তথ্যই দেওয়া হয়নি।
বিভিন্ন স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, অন্য বার মার্কশিটের প্যাকেটের সঙ্গে স্কুলের সার্বিক ফল খামে ভরে পাঠানো হয়। সে তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হয় স্কুলের নোটিস বোর্ডে। পড়ুয়ারা সেই তালিকা থেকে নিজেদের ফল দেখে নেয়। কিন্তু করোনা-পরিস্থিতির জেরে এ বার ছবিটা অন্য রকম। কত জন উত্তীর্ণ হয়েছে, সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপক কে, এমন নানা তথ্য সংবলিত কোনও তালিকা স্কুলে আসেনি। এই পরিস্থিতিতে একাধিক স্কুলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশ্ন, ‘‘ফল যখন প্রকাশিত হয়েছে তখন নিশ্চয়ই স্কুলভিত্তিক সার্বিক ফলও প্রস্তুত। তা হলে সেই তালিকা ‘পিডিএফ’ করে বা ছবি তুলে স্কুলের ‘ই-মেলে’ কেন পাঠানো হল না! সরকারের যাবতীয় নির্দেশিকা তো ই-মেলে আসে।’’ ডিসেরগড়ের অম্বিকাচরণ স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজীব লায়েক বলেন, ‘‘পরীক্ষার ফল জানতে পড়ুয়ারা যতটা উদগ্রীব থাকে, আমরাও ততটাই আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি। কিন্তু এ বার পড়ুয়ারা ব্যক্তিগত ভাবে যতটা জানিয়েছে, ততটাই জানতে পেরেছি।’’ আবার শান্তিনগর স্কুলের প্রধান শিক্ষক দিব্যেন্দু সাহা বলেন, ‘‘করোনার জেরে সবই এ বার কেমন উল্টে-পাল্টে গিয়েছে। তবে আমি পড়ুয়াদের কাছ থেকে জনে-জনে ফল জেনেছি।’’
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনও। বাম প্রভাবিত নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অমিতদ্যুতি ঘোষ বলেন, ‘‘এ ভাবে ফলপ্রকাশ ভাবা যায় না। মাধ্যমিকের ফল বেরিয়েছে। অথচ, স্কুলের হাতে কোনও তথ্য নেই। চূড়ান্ত অব্যবস্থা।’’ এ দিন বিকেলে তৃণমূল প্রভাবিত মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁরা সাংগঠনিক ভাবে চেষ্টা করছেন যাতে জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর থেকে স্কুলগুলির ফল কোনও ভাবে জোগাড় করা যায়।
পাশাপাশি, শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, ফলপ্রকাশ হবে, এটা ঘোষণা করা হয় মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে মঙ্গলবার। স্কুলও বন্ধ। ফলে, পড়ুয়াদের রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর জোগাড় করে বাড়িতে এনে যে ইন্টারনেটে দেখবেন, তা-ও সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কোনও পড়ুয়া ফোন করলে, তবেই তার থেকে ফল জানা যাচ্ছে বলে জানান শিক্ষকেরা। কিন্তু ফলপ্রকাশের দিনে স্কুলের সামগ্রিক ফল জানতে না পেরে হতাশ তাঁরা। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অজয় পাল অবশ্য বলেন, ‘‘রাজ্য থেকে যেমন নির্দেশ এসেছে, তা অনুযায়ীই ফল প্রকাশিত হয়েছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy