প্রতীকী চিত্র
অধিকাংশ জেলায় দলীয় সভাপতিদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন নেতৃত্ব। কিন্তু পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপি জেলা সভাপতির নাম শনিবার পর্যন্ত ঘোষণা হয়নি। কেন এখনও নাম ঘোষণা হল না, তা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে জেলার বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে। একাংশের দাবি, একাধিক নাম নিয়ে টানাপড়েনের জেরেই এখনও স্থির সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি নেতৃত্ব। যদিও দলের বর্তমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই জানান, গোটা বিষয়টি দলের রাজ্য কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করে। জেলা স্তরে এ বিষয়ে কারও কিছু জানার কথা নয়।
শুক্রবার দলের ৩৮টি জেলা কমিটির মধ্যে ২৩টির সভাপতির নাম ঘোষণা করেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। শনিবার আরও কয়েকটির নাম ঘোষণা হয়েছে। তবে পশ্চিম বর্ধমানের নাম তার মধ্যে নেই। জেলা বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, পশ্চিম বর্ধমানের সভাপতি হিসাবে বর্তমানে পদে থাকা লক্ষ্মণবাবু ছাড়া, দৌড়ে রয়েছেন প্রশান্ত চক্রবর্তী, অপূর্ব হাজরা, অনিরুদ্ধ বাজপেয়ীরা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যাতে মাথাচাড়া না দেয়, তেমন ভাবে সভাপতি বেছে নেওয়ার চেষ্টার কারণেই দেরি হচ্ছে বলে দলের জেলা নেতাদের অনেকের ধারণা।
বিজেপির নানা সূত্রের দাবি, গত কয়েক বছরে দলের বিভিন্ন স্তরে প্রতিনিধি মনোনয়নকে কেন্দ্র করে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। বর্তমানে জেলায় দলের প্রভাবশালী অংশ গত দু’বছর ধরে প্রবীণ নেতা-কর্মীদের বদলে তুলনায় নবীনদের বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে অভিযোগ। অনেককে ‘ঘুরপথে’ দলের পদ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
এ ছাড়া, দলের উঁচুতলার সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে জেলা সভাপতি লক্ষ্মণবাবু ও দলের আসানসোল জেলা যুব সভাপতি অরিজিৎ রায়ের অনুগামীদের মধ্যে ‘ঠান্ডা লড়াই’ চলছে বলে দাবি বিজেপির একাংশের।
সম্প্রতি জেলায় বিজেপির ৩৪টি মণ্ডলের বাকিগুলির সভাপতির নাম ঘোষণা হলেও বারাবনি ২ ও ৩ মণ্ডলে তা আটকে রয়েছে। দলের নানা সূত্রের দাবি, এই দু’টি মণ্ডলে জেলা যুব সভাপতি অরিজিৎবাবুর গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ বেশি। জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের মতৈক্য না হওয়ায় ওই মণ্ডল দু’টির সভাপতি এখনও বেছে নেওয়া যায়নি।
যদিও অরিজিৎবাবু বলেন, ‘‘কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। দু’টি মণ্ডলে শীঘ্রই যোগ্য নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে।’’ জেলায় দলে কোনও অন্তর্দ্বন্দ্ব নেই বলে দাবি করেছেন লক্ষ্মণবাবুও।
বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি পদে থাকা প্রশান্তবাবু ২৯ বছর দলের সঙ্গে যুক্ত। যুব সংগঠনের আসানসোল মণ্ডল, শহর মণ্ডলের দায়িত্ব সামলানোর পরে, রাজ্য যুব সম্পাদক হিসাবেও কাজ করেছেন। গত লোকসভা ভোটে দলের আহ্বায়কের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। অপূর্ববাবু দীর্ঘ দিন ধরে আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার পরে বিজেপির যুব সংগঠনে যুক্ত হন। এখন দলের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। অনিরুদ্ধবাবুও আরএসএসে ছিলেন। তার পরে দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। এখন অবশ্য তিনি দলের কোনও পদে নেই। তাঁরা তিন জনই জানান, জেলা সভাপতি নির্বাচনে তাঁদের নাম নিয়ে চর্চা হচ্ছে, এ কথা তাঁরা শুনেছেন। তবে তার বেশি কিছু জানা নেই বলে দাবি তাঁদের।
লক্ষ্মণবাবু বলেন, “দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে রাজ্য কমিটি সভাপতিদের নাম ঘোষণা করে। কাদের নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা জেলা স্তরে কারও পক্ষে জানা সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy