‘সুরাপ্রেমী’: মদের দাম কত হয়েছে, সেই তালিকা দেখতে ভিড় ক্রেতাদের। দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র
মদের দোকান খোলার অনুমতি মিলেছে। মিলেছে কারখানা খোলারও। তবে সোমবার দুর্গাপুরের বহু মদের দোকান খোলেনি। কারখানার ক্ষেত্রেও একই ছবি ধরা পড়েছে। দু’-একটি কারখানায় চুল্লি গরম করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে কবে উৎপাদন শুরু হবে, নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এক মাসের বেশি সময় ধরে মদের দোকান লকডাউনের জেরে বন্ধ ছিল। সুরাপ্রেমীরা দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। সোমবার ফের মদের দোকান শর্তসাপেক্ষে খোলা হবে শুনে আর থাকতে পারেননি তাঁরা। সকাল ১০টা থেকে তাঁরা খোঁজ খবর নিতে শুরু করে দেন বিভিন্ন মদের দোকানে গিয়ে। কিন্তু তখন সব দোকানই বন্ধ ছিল। কলকাতায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানাভিত্তিক কোনও কোনও মদের দোকান খোলা থাকবে তার তালিকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তেমন কোনও তালিকা দুর্গাপুরের ক্ষেত্রেও রয়েছে কি না তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু করে দেন অনেকে। একই চিত্র আসানসোল মহকুমা ও খনি এলাকায়।
বেলা যত বেড়েছে সুরাপ্রেমীদের ভিড়ও বেড়েছে বিভিন্ন দোকানের সামনে। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি মদের দোকানের সামনে দুপুর দেড়টা নাগাদ গিয়ে দেখা যায়, দোকানের সামনে ‘নো মাস্ক, নো লিকার’ পোস্টার সাঁটা হয়েছে। পাশেই রয়েছে মদের দামের তালিকা। ওই দোকানের তরফে জানানো হয়, রাজ্য সরকার মদের উপরে রাজস্ব বাড়িয়েছে। তাই দামও বেড়েছে। বেশি দাম নিয়ে যাতে অশান্তি না হয়, সে জন্য আগে খদ্দেরদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, কেনার আগে তালিকা দেখে নিতে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন যুবক বলেন, ‘‘লকডাউনের সময়ে চোরাপথে দ্বিগুণ, তিনগুণ দামে মদ কিনতে হয়েছে। তবে দোকানে সামান্য বেশি দাম হলেও সম্মানের সঙ্গে মদ কিনতে পারব। কোনও অসুবিধা নেই।’’
ফরিদপুরের উল্টো দিকে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারের একটি মদের দোকান না খোলায় খদ্দেররা ফিরে যান। দোকান মালিক আনন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘দোকান খোলার অনুমতি হঠাৎ পাওয়া গিয়েছে। তাই গুছিয়ে উঠতে পারিনি। আজ, মঙ্গলবার থেকে দোকান খোলা হবে। তবে ক্রেতাদের মাস্ক পরে আসতে হবে। নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে লাইনে। স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা থাকছে।’’ দোকান খোলেনি অণ্ডাল, রানিগঞ্জে কিছু এলাকায়ও। যেখানে খুলেছে সেখানে লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে।
আসানসোলের এসবি গড়াইরোড লাগোয়া একটি মদের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় সামাল দিতে আসতে হয় পুলিশকে। একই দৃশ্য বরাকরের একটি মদের দোকানেও। আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নির্দেশ মেনে মদ বিক্রি শুরু করা হলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি দোকান মালিককেই করতে হবে। কোনও ভাবে বিষয়টি উপেক্ষিত হলে দোকান মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দোকান খোলার সঙ্গে সঙ্গে এত ভিড় হয়ে যাচ্ছে যে, তাঁদের পক্ষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে স্থানীয় থানার সাহায্য চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
এ দিকে, শ্রমিকের অভাবে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ কারখানা খোলায় উদ্যোগ এ দিন নজরে আসেনি। বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, শ্রমিকদের অধিকাংশ বহিরাগত। তা ছাড়া, সব শ্রমিককে কাজে লাগানো যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে নির্দিষ্ট সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে কাজ সারতে হবে। তাতে পোষাবে না। তাই আরও কিছুদিন অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকের কয়েকটি কারখানার চিমনি দিয়ে ধোঁয়া উঠতে দেখা গিয়েছে। এমনই একটি কারখানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কয়েকজন শ্রমিককে নিয়ে চুল্লি গরম করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। উৎপাদনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে কয়েকদিন সময় লাগবে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy