পথের পাশেই খাওয়া। নিজস্ব চিত্র
রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের নাগপুরে। কিন্তু সেখানে কাজ শুরুর দিন কয়েক পরেই শুরু হয়ে যায় ‘লকডাউন’। থাকা-খাওয়ার টাকা ফুরিয়ে আসছিল। তাই পুরনো একটি সাইকেল কিনে নিয়ে সেটিতে ২৪ দিন ধরে প্রায় ১,২০০ কিলোমিটার যাত্রা করে নিজের এলাকায় ফিরলেন আউশগ্রামের রামনগর পঞ্চায়েতের ছোড়া কলোনির বাসিন্দা বিপ্লব দাস।
বছর চল্লিশের বিপ্লববাবু সোমবার সকালে এলাকায় পৌঁছলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের আর্জি মেনে নিয়ে বাড়িতে যাননি। স্থানীয় একটি স্কুলের মাঠে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁর শারীরিক পরীক্ষার পরে বিকেলে অ্যাম্বুল্যান্সে করে আউশগ্রামের অভিরামপুরে ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করে ব্লক প্রশাসন। সেখানে ১৪ দিন তাঁকে থাকতে হবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
বিপ্লববাবু জানান, মাস দু’য়েক আগে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজের জন্য নাগপুরে যান তিনি। কাজে যোগ দেওয়ার দিন সাতেকের মধ্যে তা বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে নিজের খরচেই থাকতে হচ্ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘দিন সাতেক কাজ করে যে টাকা পেয়েছিলাম, কয়েকদিনেই তা প্রায় ফুরিয়ে এল। কত দিন পরে আবার কাজ শুরু হবে, কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিই।’’
তিনি জানান, বাড়ি ফেরার জন্য পরিবহণের সমস্ত রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজারখানেক টাকা জোগাড় করে একটি পুরনো সাইকেল কিনে নেন। সেটিতে চড়েই উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার থেকে কাজ করতে যাওয়া আরও জনা দশেক শ্রমিকের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েন। তাঁর কথায়, “১০ এপ্রিল নাগপুর থেকে রওনা হয়েছিলাম। রাস্তায় অনেকে খাবার দিচ্ছিলেন। তা-ই খাচ্ছিলাম। রাতে সামান্য বিশ্রাম নিয়ে টানা সাইকেল চালিয়েছি।’’ তাঁর কোনও শারীরিক সমস্যা নেই বলে দাবি বিপ্লবাবুর।
বিপ্লববাবুর মা রঞ্জিতাদেবী বলেন, “আমাদের কিছু না জানিয়েই ছেলে কাজে চলে গিয়েছিল। সব যখন বন্ধ হয়ে গেল, ওর জন্যে খুব চিন্তা হচ্ছিল। মোবাইলেও যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ছেলে ফিরে আসায় চিন্তামুক্ত হয়েছি।’’ তাঁর দাবি, পরিবারের লোকজনের কথা চিন্তা করে এ দিন ছেলে বাড়িতে ঢোকেননি।
ভিন্ রাজ্য থেকে বিপ্লববাবুর ফেরার খবর জানাজানি হতেই ব্লক প্রশাসনের তরফে তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। আউশগ্রাম ২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক উদয়কুমার ঘোষ বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির শরীরে কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি।’’ আউশগ্রাম ২ বিডিও শিঞ্জন শেখর বলেন, ‘‘ওঁকে ১৪ দিনের জন্য ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy