আসানসোলের শ্রম দফতরে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতীদের সংবর্ধনা জানাচ্ছেন। ছবি: পাপন চৌধুরী।
দক্ষ ও পেশাদার শ্রমিক-কর্মী তৈরি করতে কিছু পাঠ্যক্রম ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানাগিয়েছে, ওই সব পাঠ্যক্রম ও প্রশিক্ষণ শেষে সফল প্রার্থীরা যাতে বেসরকারি শিল্প সংস্থায় কাজের সুযোগ পান, তারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে জেলার শিল্প-সংস্থার কর্ণধারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলাশাসক এস পুন্নমবলম।
সম্প্রতি আসানসোলের শ্রমিক ভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ‘শ্রমিক কল্যাণ’ পাঠ্যক্রমের সফল ৩৫ জনকে শংসাপত্র তুলে দেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার শ্রমিকদের জন্য যেমন নির্দিষ্ট জনহিতকর প্রকল্পের সুবিধার ব্যবস্থা করেছে, তেমনই বিভিন্ন শিল্প সংস্থায় কর্মরত শ্রমিক-কর্মীদের কল্যাণমূলক অধিকার নিশ্চিত করতে দায়িত্ব নিয়েছে। এর জন্য আসানসোলে ‘শ্রমিক কল্যাণ’ পাঠ্যক্রমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।” এই পাঠ্যক্রম শেষে চাকরির সুযোগও মিলবে বলে দাবি মন্ত্রীর। পশ্চিম বর্ধমানে এই পাঠ্যক্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তথা জেলা কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্রের সহ-অধিকর্তা অনুজ চক্রবর্তী জানান, রাজ্য কারিগরি শিক্ষা দফতরের অনুমোদন নিয়ে এই পাঠ্যক্রম চলছে। এটি স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম। প্রতি বছর প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩৫ জন প্রার্থী এই পাঠ্যক্রমে নামমাত্র খরচে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
আসানসোলে এই পাঠ্যক্রম চালু প্রসঙ্গে অনুজ জানান, আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে একাধিক বেসরকারি শিল্প-সংস্থা রয়েছে। লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মী কাজ করেন। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের কল্যাণে এক বা একাধিক অফিসার নিয়োগ করা বাধ্যতামূলক। এই দুই শিল্পাঞ্চলে প্রশিক্ষিত কল্যাণকারী অফিসার পদের চাহিদা রয়েছে। এই চাহিদার কথা ভেবে এবং শিল্পাঞ্চলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করতে এই পাঠ্যক্রম চালু করা হয়েছে। অনুজের সংযোজন: “আমরা এই এলাকার শিল্প সংস্থার কর্ণধারদের সঙ্গে বৈঠক করে এই পাঠ্যক্রমে যাঁরা সফল ভাবে উত্তীর্ণ হবেন তাঁদের নিয়োগের আবেদন জানিয়েছি।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বেকার যুবক-যুবতীদের কারিগরি দক্ষতায় শিক্ষিত করতে একাধিক বিভাগের প্রশিক্ষণ চালুর সিদ্ধান্তও হয়েছে। সম্প্রতি এ নিয়ে জেলা স্কিল ডেভেলপমেন্ট কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, “রাজ্যে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে।”
জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ১৪ হাজার যুবক, যুবতীকে এই বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রায় ১৫টি শিল্প-সংস্থায় এই প্রশিক্ষণ চলবে। প্রশিক্ষণের খরচ বাবদ সরকার কিছু টাকা দেবে। প্রশিক্ষিতদের মধ্যে ৭০ শতাংশ আসানসোল ও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে দুই মহকুমার শিল্পমালিক ও বণিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর কার্যকরী সভাপতি স্বপন চৌধুরী। তিনি বলেন, “এতে এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। জেলার অর্থনীতির উন্নতি হবে।” ‘কনফেডারেশন অব রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’ (ক্রেডাই)-র আসানসোল শাখার প্রধান শচীন রায় বলেন, “এই উদ্যোগের ফলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা নিজেরাও স্বনির্ভর হতে পারবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy