সিলিকোসিসের সংক্রমণ রুখতে এ বার শিল্প-সংস্থার কর্ণধারদের সঙ্গে বৈঠক করল পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। বুধবার জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক হয়। জেলার সরকারি ও বেসরকারি শিল্প-সংস্থার কর্ণধার ও মালিকেরা উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন একাধিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিল্প-সংস্থার কর্ণধারদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, জেলায় এখনও পর্যন্ত পাঁচ জন সিলিকোসিস আক্রান্তের হদিস মিলেছে। প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত সংক্রমণে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এর পরেই এই সংক্রমণ রুখতে বিশেষ নজর দিয়ে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। জেলার বিভিন্ন ব্লকে আক্রান্তদের চিহ্নিত করতে শিবির করা হয়েছে। এ বার জেলার সরকারি ও বেসরকারি শিল্প-সংস্থার কর্ণধার ও মালিকদের নিয়ে বৈঠক করা হল। এ দিন বৈঠক শেষে জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) এস পুন্নমবলম বলেন, “এই সংক্রমণ রুখতে হলে শিল্প-কারখানার কর্মকর্তাদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। শিল্প-মালিক বা কর্ণধারদের সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। তা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ।”
সংক্রমণ রুখতে শ্রমিক-কর্মীদের কী ধরনের প্রতিষেধক নিতে হবে? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শেখ মহম্মদ ইউনুস জানান, সাধারণত মিহি ধুলো প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করে সংক্রমণ হয়। ফলে ফুসফুসে এই ধুলোর প্রবেশ রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছিল, সিলিকোসিস চিহ্নিতকরণের জন্য স্বাস্থ্য দফতর যে শিবিরগুলি আয়োজন করছে, সেখানে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর জন্য শ্রমিকদের যেতে বাধা দিচ্ছেন কারখানার অধিকারিকেরা। এ দিন সিএমওএইচ ইউনুস জানান, স্বাস্থ্যশিবিরগুলিতে শ্রমিকদের যেতে উৎসাহ দিতে শিল্পের কর্ণধারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, শ্রমিকদের সুস্থ রাখতে শিল্প-সংস্থার কর্ণধারদের যে সব নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। কোনও গাফিলতি হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন বৈঠকে উপস্থিত সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্ণধারেরা দাবি করেন, সরকারের নিয়ম মেনে চলা হয়। এ দিনের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলিও মেনে চলা হবে বলে তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত সালানপুর ব্লকের বরাভুঁই ও রামডি গ্রামে সিলিকোসিস আক্রান্তের হদিস মিলেছে। এলাকায় বেশ কিছু পাথর কল ও পাথর খাদান রয়েছে। সেখান থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। প্রশাসনের দাবি, সালানপুর ছাড়া এখনও পর্যন্ত অন্য কোনও এলাকায় এই সংক্রমণের হদিস মেলেনি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)