এই ধরনের শাড়িই মিলছে দোকানে। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল
সুতির শাড়ি জুড়ে ফেব্রিকে হাতে আঁকা করোনাভাইরাসের নকশা। আঁচলে রয়েছে মাস্কে মুখ ঢাকা পৃথিবীর ছবি। কোটা সিল্কের শাড়িতেও বুটিগুলির নকশা ভাইরাসের আদলে। শাড়িতে করোনা সচেতনতার বার্তা দিয়ে পুজোর ‘ট্রেন্ড’ তৈরি করে ফেলেছেন কালনার ধাত্রীগ্রামের তাঁতিরা।
প্রতি বার পুজোর আগেই বিশেষ সিরিয়াল, সিনেমা বা জনপ্রিয় নায়িকার সাজের অনুকরণে শাড়ি তৈরি হয়। ‘বাহা’, ‘রঙ্গবতী’, ‘মিসড্ কল’-এর মতো শাড়ি এর আগে দাপিয়েছে পুজোর বাজার। তবে এ বার করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে পুজো কী ভাবে হবে, ঠাকুর দেখতে যাওয়া বা চার দিনে আট রকম সাজের যে প্রস্তুতি থাকে, তা কতখানি হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, বাইরে থেকে ফিরে জামাকাপড় ধুয়ে ফেলা বা আলাদা করে রাখার কথা বলা হচ্ছে এখন। ফলে, অনেকেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে আপাতত দামি শাড়ি কিনতে চাইছেন না। আবার নতুন কিছু না পরলেও পুজোটা কেমন ফিকে লাগে। তাই সুতি, তাঁতেই তিন রকম ‘করোনা-শাড়ি’ তৈরি করেছেন তাঁরা। কোনওটাই ফেব্রিক, কোনওটার বুননে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে করোনাভাইরাসের ছবি। আঁচলে মাস্ক পরা পৃথিবীর ছবি দিয়ে বোঝানো হয়েছে ‘নিউ নর্মাল’ দুনিয়া।
ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প এবং বস্ত্র দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ সোমবার বলেন, ‘‘করোনা-শাড়ি ধাত্রীগ্রামের পাশাপাশি, শান্তিপুরেও তৈরি হয়েছে বলে শুনেছি। তন্তুজের এমডি-র সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’’
তাঁতিরা জানান, মাস পাঁচেক আগে থেকেই পুজোর শাড়ি বোনা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এ বার করোনার জেরে শাড়ির বরাত তেমন মিলছিল না। চৈত্র সেল, পয়লা বৈশাখ, বিয়ের মরসুম—সবেই বিক্রিবাটায় ধাক্কা লাগায় মহাজনেরাও বরাত দিচ্ছিলেন না। শেষ মুহূর্তে করোনাকেই হাতিয়ার করেন তাঁরা। তাঁতের শাড়ির নকশা প্রস্তুতকারী রাজীব বসাক বলেন, ‘‘একটি বৈঠকে আমার এক বন্ধু, প্রস্তাব দেন, করোনা পরিস্থিতিতে শাড়িতে এমন কিছু ফুটিয়ে তোলা হোক, যাতে পুজোয় সচেতনতার বার্তা দেওয়া যায়। সব ধরনের ক্রেতারা কম দামে নতুন শাড়ি পান। আবার স্বাচ্ছন্দ্যে যেন ঘাটতি না হয়। সে ভাবনা থেকেই কাজ শুরু করি।’’
তাঁতিরা জানান, তিন ধরনের শাড়ি তৈরি হয়েছে। ৫০০ টাকার সুতির শাড়িতে ফেব্রিক দিয়ে করোনাভাইরাসের নকশা আঁকা রয়েছে। কোটা সিল্কের শাড়িটির দাম আটশো টাকার মধ্যে। আর একটি আরামদায়ক সুতিতে ডবল পাড় দেওয়া ঐতিহ্যবাহী শাড়ি। শাড়ির গায়ে, আঁচলে রয়েছে বুটিল আদলে ভাইরাসের নকশা। দাম বারোশো টাকার আশপাশে।
ব্যবসায়ী সুবোধ বসাক বলেন, ‘‘আমরা শাড়িগুলি দোকানে রাখতে শুরু করেছি। সব শাড়িগুলিই একাধিক রঙে পাওয়া যাবে। সব বয়সের মহিলারাই পরতে পারবেন।’’ তিনি জানান, ধাত্রীগ্রামে একটি পুজোয় করোনা সচেতনতার বার্তা দিতে ওই শাড়ি বিলি করারও ভাবনা রয়েছে তাঁদের। এলাকার আরও দুই ব্যবসায়ী রাজীব বসাক, পিন্টু বসাকেরও দাবি, ‘‘পুজোর বাজার একেবারেই মন্দা চলছিল। তবে এই শাড়ি দেখে কয়েকজন কিনছেন। করোনাকে ভয় নয় বরং সচেতন হলেই রোগ থেকে দূরে থাকা যাবে, এই ভাবনার ছাপ রয়েছে শাড়িতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy