প্রচার-মঞ্চ থেকে সকলকে মাস্ক পরার অনুরোধ করতে দেখা গিয়েছে ভুবনকে। কিন্তু কে শোনে কার কথা!
প্রান্তিক ফেরিওয়ালা থেকে ‘ভোট-প্রচারের মুখ’ আগেই হয়েছিলেন তিনি। আরও এক বার তৃণমূলের প্রচারে দেখা গেল ‘কাঁচাবাদাম’ গান খ্যাত বীরভূমের ভুবন বাদ্যকরকে। রাতারাতি সাড়া ফেলা সেই ভুবনের গানে মজতে কোভিডবিধি শিকেয় তুলে ছুটে এলেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। অধিকাংশেরই মুখে মাস্ক নেই। মাথায় উঠেছে শারীরিক দূরত্ববিধি! ফলে প্রশ্নের মুখে পড়েছে শাসকদলের ভূমিকা।
সোমবার আসানসোল পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী উৎপল সিংহের হয়ে প্রচারে এসে ‘বাদাম বাদাম, দাদা কাঁচা বাদাম, আমার কাছে নাই গো বুবু ভাজা বাদাম’ গানে কাল্লা এলাকা মাতিয়ে তুলতে দেখা গেল ভুবনকে। প্রচারে প্রাণ আনতে শুধু ভুবনের গানেই থেমে থাকেননি জোড়াফুল শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা। প্রচারের ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, গানের মাঝে মঞ্চ থেকে হরির লুটের মতো ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে কাঁচাবাদাম। যা কুড়োতে গিয়ে এক ঝাঁক মাছের মতো হামলে পড়ছে কচিকাচা থেকে শুরু করে পুরুষ-মহিলারা। প্রচার-মঞ্চ থেকে সকলকে মাস্ক পরার অনুরোধ করতে দেখা গিয়েছে ভুবনকে। কিন্তু কে শোনে কার কথা!
কোভিডের সাম্প্রতিক স্ফীতির আবহে বর্ষশেষ ও বর্ষবরণের উৎসবে ভিড়ের ছবি যে রকম ভীতি-উদ্রেককারী ছিল, তৃণমূলের এই ‘ভুবন-মুখী’ প্রচারের দৃশ্য তার চেয়ে কিছু কম নয় বলেই মনে করছেন বিরোধীরা।
কোভিড পরিস্থিতি নজরে রেখেই রাজ্য সরকারের অনুরোধে সদ্যই আসানসোল-সহ চার পুরনিগমের ভোট পিছনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। আসানসোলেই দৈনিক সংক্রমণের হার ৩৫ শতাংশের বেশি বলে জানিয়েছেন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক সেখ ইউনুস। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারে কোভিডবিধি ভঙ্গের এই অভিযোগকেই বিরোধীরা হাতিয়ার করতে চাইছেন।
১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী বাবলু বিশ্বাস বলেন, ‘‘তৃণমূলনেত্রী এক কথা বলছেন, দলের কর্মীরা ঠিক তার উল্টোটা করছেন। আজ যে দৃশ্য দেখা গেল, তার জন্য এলাকায় সংক্রমণ বাড়লে তার দায় কে নেবে, সেটাই এখন প্রশ্ন।’’
একটি ভিডিয়ো-বার্তায় আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘‘নির্বাচনী প্রচারে এ রকমই কিছু ঘটবে আশঙ্কা করে ৩১ ডিসেম্বরই জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছিলাম আমি। কিন্তু আমার কথায় কান দেওয়া হয়নি।’’ আসানসোলের স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়েছে বলে দাবি করে অগ্নিমিত্রার হুঁশিয়ারি, ‘‘আজকের এই ঘটনা সংক্রমণ তো বাড়বেই। নিশ্চিত ভাবে তা বলতে পারি। এর জন্য যদি মানুষের ক্ষতি হয়, আমি কিন্তু ছেড়ে দেব না।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘কিছু দিন আগেই বিজেপি-র নির্বাচনী প্রচারে কোভিডবিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে দিলীপ ঘোষকে হেনস্থা করেছিল আসানসোলের পুলিশ। এখন তারা কোথায়?’’
যদিও প্রচারে কোভিডবিধি ভঙ্গের অভিযোগ উড়িয়ে উৎপল বলেন, ‘‘দলের পক্ষ থেকে মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দূরত্ব বজায় রেখে এই অনুষ্ঠান হয়েছে। একটি গ্রামের মানুষজনকে সঙ্গে নিয়ে এই সভা হয়েছে। কোনও বাইরের লোক ছিল না। তাই করোনা ছড়ানোর কোনও কারণ নেই।’’
প্রসঙ্গত, গত ১২ জানুয়ারি বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারে কোভিডবিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল। তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, শতাধিক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আসানসোল পুরনিগমের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের বরতরিয়া এলাকায় প্রচার করেছেন দিলীপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy