প্রতীকী ছবি।
চালু হওয়ার চার দিন পরেও ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পে অনলাইনে আবেদন করতে সমস্যা মেটেনি বলে অভিযোগ। অ্যাপ ‘ডাউনলোড’ করা থেকে ফর্ম পূরণ, নানা ধাপে এত সময় লাগছে যে ধৈর্য রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি অনেকেরই। এ ছাড়া, রয়েছে ইন্টারনেট সংযোগে বিঘ্ন, ‘স্মার্ট ফোন’ না থাকা-সহ নানা সমস্যা। তবে ইতিমধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে প্রায় কুড়ি হাজার আবেদন জমা পড়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, গ্রামাঞ্চলের অনেকেই এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন না। প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, মূলত শহরাঞ্চলের বাসিন্দা অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সহায়তাই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। কিন্তু অনেক নির্মাণ শ্রমিক, ভ্যান চালক, দিনমজুর বা বিড়ি শ্রমিকের ‘স্মার্ট ফোন’ নেই। তাঁদের অনেকে সাইবার ক্যাফেতে হাজির হচ্ছেন। নানা সাইবার ক্যাফে মালিকের দাবি, এখন দোকান খোলা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তাই ওই প্রকল্পে আবেদন করতে আসা মানুষজনের কাছ থেকে তাঁরা প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে রাখছেন। পরে অনলাইনে আবেদন করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আবেদন জমা দিতে রীতিমতো সমস্যা হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরছেন, তাঁদের অনেকেই অনলাইনে ‘স্নেহের পরশ’ প্রকল্পে আবেদন করেছেন। তাঁরা আবার ‘প্রচেষ্টা’য় আবেদন করাও শুরু করেছেন। এ নিয়ে একটি বিভ্রান্তি ছিল। একটিতে আবেদন জমা করলে, অন্যটিতে করা যাবে না, এই বন্দোবস্ত করার পরে, বুধবার থেকে অনলাইনে আবেদন করা যাচ্ছিল। নানা প্রযুক্তিগত সমস্যার অভিযোগ সত্ত্বেও অনেকের আবেদন জমা পড়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখার জন্য জেলার ‘পোর্টাল’-এ পাঠানোর কাজও শুরু হয়েছিল। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন, স্বাস্থ্য) রজত নন্দের বক্তব্য, ‘‘সোমবার থেকে অনলাইনে আবেদন নেওয়া শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত জেলায় ১৯,৬১২টি আবেদন জমা পড়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে।’’ তবে এই প্রকল্প নিয়ে শ্রম দফতর প্রচার করেনি বলেও অভিযোগ উঠছে। যদিও তা মানতে নারাজ শ্রম দফতরের আধিকারিকেরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের ‘ডাউনলোড’ করতে না পারার সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ অনেকের। কালনার শিক্ষক নীরব খাঁ দাবি করেন, ‘‘প্রচেষ্টার ফর্ম পূরণের জন্য অনেকেই আমার কাছে আসছেন। অনেককে ‘লিঙ্ক’ও পাঠিয়েছি। কিন্তু কারও ফর্মই পূরণ হয়নি। আমি ফর্ম ডাউনলোড করতে পারলেও, বাকিরা তা পারেননি।’’ মেমারির সুলতানপুরের অমর ক্ষেত্রপালের কথায়, ‘‘আমাদের এলাকার বেশিরভাগই দিনমজুরি করেন। বারবার চেষ্টা করেও অ্যাপ খুলতে পারিনি।’’ তবে গলসির পারাজের অনেকে একটি তথ্যমিত্র কেন্দ্রের মালিকের সাহায্যে ফর্ম পূরণ করতে পেরেছেন বলে জানান। পুরসার বাসিন্দা শেখ উজ্বল, গলসির গোপাল সূত্ররা বলেন, ‘‘আমরা আবেদন করেছি।’’
শ্রমিক সংগঠন সিটুর দাবি, জেলায় অনেক অংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকেরা এখনও সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আসেননি। এই প্রকল্প থেকে তাঁদের সরকারি আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু অব্যবস্থার জন্য তা হচ্ছে না, অভিযোগ তাদের। সংগঠনের জেলা সভাপতি তথা প্রাক্তন বিধায়ক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘আমাদের নেতা-কর্মীরাও অ্যাপটি ডাউনলোড করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু পুরোটাই তামাশায় পরিণত হয়েছে।’’
জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্তের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘প্রকল্পটি ভাল, সে কথা বিরোধীরাই বলছেন। সরকারি তথ্য বলছে, অনেকে অনলাইনে আবেদনও করতে পারছেন। বিরোধীরাই বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy