এই স্কুলেই সমস্যা। নিজস্ব চিত্র
স্কুলে ইউনিট টেস্ট শুরু হবে সোমবার থেকে। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আসানসোলের ইস্টার্ন রেলওয়ে বয়েজ হাইস্কুলের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বাংলা মাধ্যমের ২৭৫ জন পড়ুয়াকে বই পাঠাতে পারেনি রাজ্য সরকার। শিক্ষক, অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, বিষয়টি শিক্ষা দফতরকে বলেও লাভ হয়নি। ফলে, অন্য স্কুল থেকে বই ধার নিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে বলে জানান শিক্ষকেরা। কেন এই পরিস্থিতি, তা নিয়েই শুরু হয়েছে দায় ঠেলাঠেলি।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (টিচার ইনচার্জ) শিবশঙ্কর কুন্ডু বলেন, “ওই ২৭৫ জন পড়ুয়া রাজ্য সরকারের বই পাওয়ার অধিকারী। আমরা গত বছর ডিসেম্বরে আসানসোল শিক্ষা চক্রের স্কুল পরিদর্শকের কাছে বই চেয়ে আবেদনপত্র পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও ছাত্রেরা বই পায়নি। কবে পাওয়া যাবে, সে কথাও স্কুল পরিদর্শক নিশ্চিত করে জানাননি।”
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বই সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় দেখার জন্য শিক্ষক বিশ্বনাথ মিত্রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশ্বনাথের অভিযোগ, শিক্ষাবর্ষ শুরুর পরেও কেন বই পাওয়া গেল না, সে বিষয়ে আসানসোল শিক্ষা চক্রের স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, রাজ্য সরকারের ‘বাংলা শিক্ষা’ পোর্টালে তাঁদের স্কুলের পড়ুয়াদের নাম নেই। ওই শিক্ষক বলেন, “আমরা ডিরেক্টরেট অব স্কুল এডুকেশনের দ্বারস্থ হই। দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অব প্রাইমারি এডুকেশন আমাদের বই সরবরাহ করার জন্য আসানসোল শিক্ষাচক্রকে অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু তার পরেও আসানসোল শিক্ষাচক্র কোনও পদক্ষেপ করেনি।”
যদিও অভিযোগ প্রসঙ্গে আসানসোল শিক্ষাচক্র দায় ঠেলেছে ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের’ দিকে। স্কুল পরিদর্শক সন্দীপ কোড়ার অভিযোগ, “সব রকম পদক্ষেপ করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠিও লিখেছি। তাঁদের গাফিলতিতেই বই সরবরাহ করা যাচ্ছে না!” জেলা স্কুল পরিদর্শক সুনীতি সাঁপুই আবার জানাচ্ছেন, অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অব প্রাইমারি এডুকেশন বই সরবরাহ করার লিখিত আদেশ জারি করেছে। স্কুলের কাছে যাতে দ্রুত বই পৌঁছে যায়, সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানাচ্ছেন, বইয়ের আবেদন জমা, বই সরবরাহ-সহ যাবতীয় উদ্যোগশিক্ষাচক্রগুলিই করে।
এ দিকে, স্কুলে বই না পৌঁছনোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। ‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির’ রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, “আসানসোল শিক্ষাচক্র কেন দায়িত্ব পালন করেনি, সেটাই প্রশ্ন।” এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক অমিতদ্যুতি ঘোষ বলেন, “পড়ুয়াদের স্বার্থে সমস্যার দ্রুত সমাধান হোক।”
তবে এই পরিস্থিতিতে ছাত্রেরা সমস্যায় পড়েছে। উষ্মা শোনা গিয়েছে অভিভাবকদের গলাতেও। রিয়া দেবনাথ নামে এক অভিভাবকের বক্তব্য, “বই কার পাঠানোর কথা জানি না। বই পায়নি ছেলেরা, এটা জানি। এ ভাবে পড়াশোনা, পরীক্ষা কী ভাবে হবে! বিষয়টি নিয়ে সবার ভাবা দরকার।” এই পারস্পরিক দায় ঠেলাঠেলি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) সঞ্জয় পাল। সে সঙ্গে তাঁর দাবি, “পদক্ষেপ করেছি। দ্রুতসমস্যা মিটবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy