প্রতীকী ছবি।
মূল্যবৃদ্ধির জেরে মিড-ডে মিলের মেনু কাটছাট করতে হচ্ছে অনেক স্কুলকে। এই অবস্থায় শুক্রবার জেলাশাসকের নির্দেশে হঠাৎ-পরিদর্শনে বেরিয়ে অনেক স্কুলে মিড-ডে মিলের পাতে ভাল খাবার দেখে চমকে গেলেন আধিকারিকেরা। এ দিন কাটোয়া ২ ব্লকের পোস্টগ্রামের প্রাথমিক স্কুলের ১৩০ জন পড়ুয়ার পাতে দেওয়া হয় ভাত, ডাল, তরকারি, মাংস, দই, মিষ্টি, আইসক্রিম-ও। অন্যত্র কোথাও ছিল পোস্তর বড়া কিংবা মাংস-মিষ্টি, পটল-চিংড়ি, নিদেন পক্ষে ডিম।
জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা শুক্রবার এক নির্দেশিকায় জেলার ২৩টি ব্লক ও ছ’টি পুরসভায় মিড-ডে মিল পরিদর্শনের জন্য ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশ দেন। মূলত সরকার থেকে বরাদ্দ কতটা চাল স্কুলে পড়ে রয়েছে, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রয়েছে কি না, রান্নাঘরের অবস্থা কী রকম, স্কুলে আনাজের বাগান আছে কি না ইত্যাদি দেখার পাশপাশি, স্কুলের পরিকাঠামো দেখতে বলা হয়।
জেলাশাসক বলেন, “শুধু মিড-ডে মিল নয়, শনিবার ১০০ দিনের প্রকল্প, বাংলা আবাস যোজনা ও মিশন নির্মল বাংলাও আধিকারিকদের পরিদর্শন করতে বলা হয়েছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট পাওয়ার পরে তা পর্যালোচনা করা হবে। ঘাটতি থাকলে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। গরমের ছুটির পরে স্কুল খুললে ফের পরিদর্শন করবেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা।’’
কাটোয়া ২ ব্লকের ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল ঘোষ বলেন, “আমাদের স্কুলের এক সহকর্মীর মৃত্যুতে তাঁর সন্তানেরা পড়ুয়াদের খাওয়াতে চেয়েছিলেন। গরমের ছুটির আগে সেই আয়োজন করা হল।’’
চাল বাদে মিড-ডে মিলের জন্য পড়ুয়া পিছু বরাদ্দ ৪.৯৭ টাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া মুশকিল বলে ক্ষোভ রয়েছে শিক্ষকদের। তবে অনেক স্কুলের শিক্ষকেরা ছুটি পড়ার আগে চাঁদা দিয়ে এ দিন পড়ুয়াদের ভালমন্দ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন।
মেমারির দেবীপুর স্টেশন প্রাইমারি স্কুলের পড়ুয়াদের এ দিন ভাত আর মুরগির মাংস দেওয়া হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক গুরুদাস চক্রবর্তীর দাবি, “বিভিন্ন কারণে মিড-ডে মিলের কিছু টাকা বেঁচেছিল। আবার কত দিন পরে পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা হবে। সে জন্য এ দিনই মাংস-ভাত খাইয়ে দিলাম।’’
বর্ধমানের কাছে নাড়ি প্রাথমিক স্কুল ও বর্ধমানের বেলারাণী প্রাথমিক স্কুলে এ দিন পড়ুয়াদের মুরগির কষা মাংস ও মিষ্টি দেওয়া হয়। নাড়ি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মানস ঘোষ বলেন, “শিক্ষকরাই চাঁদা তুলে পড়ুয়াদের জন্য আয়োজন করেন।’’
মিড-ডে মিলের জেলা আধিকারিক মৌলি সান্যাল বলেন, “জেলাশাসকের নির্দেশে আচমকা পরিদর্শন গিয়ে মিড-ডে মিলে মেনুর চমক দেখলাম। আধিকারিকেরা খাবারের মান চেখেও দেখেছেন। পরিদর্শকদের পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট পেলেই জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হবে।’’ তাঁর দাবি, প্রায় প্রতিটি স্কুলেই এ দিন নিদেনপক্ষে আলু-ডিমের ঝোল রান্না হয়েছিল।
বর্ধমানের তেলিপুকুরের অভিভাবক সন্ন্যাসী রাজা, আউশগ্রামের শিবরাম হাঁসদা বলেন, “আমাদের বাড়ির ছেলেদেরও এ দিন স্কুলে পোস্তর বড়া, পটল-চিংড়ি দিয়েছিল।’’ স্কুল পড়ুয়ারা বলছে— রোজ কেন এমন হয় না আহা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy