কালনার ১০৮ শিবমন্দির চত্বরে বিলাসবহুল জলযানে আসা বিদেশি পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র
বিদেশের প্রতিনিধিদের কাছে বহু বারই প্রশংসিত হয়েছে কালনার নানা পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন। কখনও মার্কিন কনসাল জেনারেল ভূয়সী প্রশংসা করেছেন নানা মন্দিরের টেরাকোটা শিল্পের। আবার কখনও বিদেশি পত্রিকার প্রচ্ছদে স্থান পেয়েছে সে শিল্প। এ বার বিলাসবহুল জলযান ‘গঙ্গাবিলাসের’ বিদেশি পর্যটকেরাও মুগ্ধ হলেন এই শহরের প্রাচীন মন্দিরগুলি দেখে।
বারাণসী থেকে বিদেশি পর্যটকদের নিয়ে আসা জলযানটি বুধবার সন্ধ্যার আগে পৌঁছয় কালনার ভাগীরথীর মহিষমর্দিনীতলা ঘাটের কাছে। ‘ইনল্যান্ড ওয়াটার ওয়েজ় অথরিটি’ সূত্রে জানা গিয়েছে, জলযানে থাকা ৩২ জন পর্যটকের বেশিরভাগই সুইজারল্যান্ডের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ তাঁদের কালনা শহরে নামার কথা থাকলেও, এক পর্যটক অসুস্থ হয়ে পড়ায় তা হয়নি। কালনার পুরপ্রধান আনন্দ দত্ত জানান, উপ-পুরপ্রধান তপন পোড়েল ও কালনা মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাইকে নিয়ে তিনি গঙ্গাবিলাসে যান। সেখানে কোমরে আঘাত পাওয়া প্রবীণ এক পর্যটকের চিকিৎসা করেন প্রাক্তন সুপার। এর মধ্যে, বুধবার রাতে শহরের কাঠিগঙ্গা ঘাটের কাছে পৌঁছয় আরও দু’টি জলযান। সেগুলিতে ছিলেন ২৬ জন ব্রিটিশ পর্যটক। তাঁরা বৃহস্পতিবার সকালে শহরের নানা পুরাতাত্ত্বিক স্থান ঘুরে দেখেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ গঙ্গাবিলাসের পর্যটকেরা ঘাটে পৌঁছন। সেখানে তাঁদের অভিবাদন জানান কয়েক জন পুর-প্রতিনিধি ও স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা। টোটোয় করে তাঁদের প্রথমে নিয়ে আসা হয় ১০৮ শিবমন্দিরে। মন্দিরগুলির ইতিহাস, কী ভাবে পুজো হয়, সে সব শোনেন। এর পরে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় রাজবাড়ি চত্বরে। সেখানে প্রতাপেশ্বর মন্দির, কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির, লালজি মন্দিরের টেরাকোটার কারুকাজ দেখে মুগ্ধ হন তাঁরা।অনেকে সে সব ক্যামেরাবন্দিও করেন। পর্যটক দলের দুই সদস্য স্টিফেন ও আলবার্ট বলেন, ‘‘মন্দিরের টেরাকোটার কাজগুলি অপূর্ব সুন্দর। আমরা খুব উপভোগ করেছি।’’ তাঁদের সঙ্গী গাইড সব্যসাচী ভট্টাচার্যজানান, জার্মান ভাষায় কালনার মন্দিরগুলির ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে পর্যটকদের কাছে। সকলেই নিদর্শনগুলির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।
রাজবাড়ি ঘোরার পরে পর্যটকেরা যান কাছাকাছি ত্রিধারা ক্লাবের পুজো মণ্ডপে। গুজরাটের নীলকণ্ঠ মন্দিরের আদলে তৈরি সেই মণ্ডপ দেখে অনেকে জানতে চান, এটি স্থায়ী ভাবে রাখা হবে, না কয়েক দিন পরে নষ্ট করে ফেলা হবে। পুরপ্রধান তাঁদের জানান, মূর্তিটি সংরক্ষিত থাকবে। পর্যটকেরা গঙ্গাবিলাসে ফেরার আগে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যুর কমিটি’র চেয়ারম্যান রাজ সিংহ বলেন, ‘‘ওঁরা দারুণ উপভোগ করেছেন কালনা।’’ কালনার পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধানের বক্তব্য, ‘‘বিদেশি পর্যটকদের প্রশংসা শুনে ভাললাগছে। পর্যটকদের জন্য কাঠিগঙ্গা ঘাটে একটি স্থায়ী ভেসেলের ব্যবস্থা করার চেষ্টা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy