ভিলেজ রিসোর্স পার্সন বিশ্বজিৎ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
নলকূপ বসানোর কাজে তোলা দাবির অভিযোগ ঘিরে সরগরম পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর। বিশ্বজিৎ ঘোষ নামে জামালপুরের চিকনহাটি গ্রামের ওই ভিলেজ রিসোর্স পার্সনের ‘দুঃসাহস’ দেখে ‘স্তম্ভিত’ স্থানীয় তৃণমূল শিবির। তাঁরা বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার দাবি তুলেছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধেছে বিজেপি। এ নিয়ে তদন্তও শুরু করেছে প্রশাসন। চিকনহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টিউবওয়েল বসানোর কাজ চলছিল। সম্প্রতি সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। নির্মাণকারী সংস্থার কর্ণধার শেখ মারজান আলির অভিযোগ, ব্লকের ভিলেজ রিসোর্স পার্সন (ভিআরপি) পদে কর্মরত বিশ্বজিৎ তাঁর থেকে ওই নলকূপ বসানোর জন্য ১০ হাজার টাকা তোলা চেয়েছেন। এ নিয়ে জামালপুর থানা এবং বিডিওর দফতরে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন মারজান। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যালয়ে নলকূপ বসানোর জন্য পঞ্চায়েত সমিতি ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে। এখন সেই নলকূপের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে ওই স্কুলের শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা। যদিও আপাতত স্কুল বন্ধ রয়েছে। তবে স্কুল খুললে কী ভাবে জলের ঘাটতি মিটবে তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্কুল বন্ধ থাকায় ওই চত্বরে নেশাড়ুদের ভিড় বাড়ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। স্কুল চত্বরে পাওয়া গিয়েছে মদের বোতলও।
বিশ্বজিৎ চকদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। তাঁর ‘কীর্তি’ শুনে সেই পঞ্চায়েতের প্রধান গৌরসুন্দর মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘চিকনহাটি গ্রামের বিশ্বজিৎ ঘোষ যে পঞ্চায়েতের ভিলেজ রিসোর্স পার্সন তা আমি জানি। তবে বিশ্বজিৎ কবে তৃণমূল নেতা হয়ে গেল সেটা আমার জানা নেই। ওর কীর্তিকলাপের কথা জানার পর আমি নিজেই স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী যেখানে উন্নয়ন- কাজে গতি আনতে চাইছেন সেখানে বিদ্যালয়ে সিলিন্ডার কল বসানোর কাজে বাধা দিয়ে বিশ্বজিৎ ঠিক করেনি। এই সব বরদাস্ত করা হবে না। প্রশাসন বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে বললে পঞ্চায়েত সেটাই কার্যকর করবে।’’
জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি ভূতনাথ মালিকের কথায়, ‘‘বিশ্বজিৎ ঘোষ স্বঘোষিত তৃণমূল নেতা। বিদ্যালয়ে সিলিন্ডার কল বসানোর কাজ বন্ধ করিয়ে দিয়ে বিশ্বজিৎ চরম অন্যায় করেছে। ওর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা প্রশাসনকে বলা হবে।’’
এ সব শুনে পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের নেতাদের দেখাদেখি ভিলেজ রিসোর্স পার্সনরাও এখন তোলাবাজিতে নেমে পড়েছেন।’’
গ্রামের কিছু জমি রয়েছে বিশ্বজিতের। বরাবর তিনি তৃণমূলই করতেন। অভিযোগ শুনে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি ভিলেজ রিসোর্স পার্সন হিসাবে কাজ করি। ১০০ দিনের কাজও দেখাশোনা করি। তাই এলাকার কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে সিলিন্ডার কল বসানোর কাজে যুক্ত শ্রমিকদের কাছে ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ এবং অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। তবে কোনও টাকাপয়সা দাবি করিনি।’’
সব কিছু শুনে জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, ‘‘ব্লকের ভিলেজ রিসোর্স পার্সন বিশ্বজিৎ ঘোষ ওই স্কুলে কল বসাতে বাধা দিয়েছে এবং ঠিকাদার সংস্থার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেছে। এই অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিললে বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় জন্যে পুলিশকে বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy