Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
TMC

৪২ লাখ টাকার টেন্ডার ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, কিছু বললেই নাকি ‘গাঁজা কেসে’ জেলে!

পঞ্চায়েতের এক তৃণমূলের সদস্যের অভিযোগ, ‘‘প্রধান-সহ এক পঞ্চায়েত সদস্য কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে ঠিকাদারদের কাছ থেকে আগাম মোটা টাকা তুলেছেন। অনেকে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।’’

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মঙ্গলকোটে।

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মঙ্গলকোটে। —প্রতীকী চিত্র।

মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২২ ১৭:৫৩
Share: Save:

আবারও পূর্ব বর্ধমানে প্রকাশ্যে শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল। এ বার ৪২ লক্ষ টাকার টেন্ডার ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা দিল মঙ্গলকোটে। পঞ্চায়েত প্রধান এবং পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলার অভিযোগ আনলেন দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যরা।

ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের এক তৃণমূলের সদস্যের অভিযোগ, ‘‘প্রধান-সহ এক পঞ্চায়েত সদস্য কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে ঠিকাদারদের কাছ থেকে আগাম মোটা টাকা তুলেছেন। শুধু তাই নয়, মুখ খুললেই গাঁজা কেস দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন ওঁরা। সেই ভয়েই অনেকে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।’’

এই টেন্ডার বিতর্ক প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতে পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু করেছেন নেতারা। দলের একাংশ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে, এলাকার রাস্তা এবং নর্দমায় উন্নয়নের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা সরকারের কোষাগারে এলেও কোথায় কী কাজ হল, তা অধিকাংশ সদস্যই জানতে পারেন না। পঞ্চায়েত প্রধান প্রদীপ চট্টরাজের বিরুদ্ধে কেউ কেউ সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন। এমনকি, আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করেও উপভোক্তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কর্মী বলেন, ‘‘সদস্যদের কেউ কোনও বিলে সই করতে না চাইলে তাঁকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে পঞ্চায়েতের খাতায় সই করানো হয়।’’ নির্মাণ সহায়ক সায়ক ঘোষের বক্তব্য, ‘‘আমরা প্রধানের লিখিত নির্দেশ ছাড়া কোনও ফাইলে কাজ করছি না।’’

যাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, সেই প্রদীপ আবার উল্টে দোষারোপ করছেন বিরুদ্ধ গোষ্ঠীকে। তিনি বলেন, ‘‘৪০ লাখ টাকার কাজের টেন্ডার ঠিক করা হবে। কিন্তু তার জন্য কোনও ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি। কাজ কে পাবে, তার ই-টেন্ডার তো সবাই দেখতে পাবেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা কোনও নোংরা কাজ করি না। পঞ্চায়েত আমরা ৪ জন মিলে আলোচনা করে চালালেও সকলের লিখিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’

এই বিতর্কে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘যে সদস্য বাইরে এমন বিবৃতি দিয়েছেন, তিনি অন্যায় করেছেন। প্রদীপ যদি কোনও ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকেন এবং তা যদি প্রমাণ হয়, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে যে সদস্য এই ধরনের বিবৃতি দিয়েছেন, তিনি দলবিরোধী কাজ করেছেন। কারণ, এগুলো দলের অন্দরে বলা উচিত ছিল। ঘটনার তদন্ত করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Mangalkot Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE