—প্রতীকী চিত্র।
তিন ব্লকে মনোনয়নে পিছিয়ে রইল বিরোধীরা। বারাবনি, জামুড়িয়া ও পাণ্ডবেশ্বরে অনেক আসনে তৃণমূলের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পিছনে সন্ত্রাসই কারণ বলে অভিযোগ বিরোধীদের। যদিও তৃণমূলের দাবি, প্রার্থী খুঁজে পায়নি বিরোধীরা।
পশ্চিম বর্ধমানে পঞ্চায়েতে ৬২টি ও আটটি পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে। জেলা পরিষদে আসন ১৮টি। এ বার জেলা পরিষদে সব আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। জেলার ১১টি পঞ্চায়েতে অর্ধেকের বেশি আসনে কোনও বিরোধী প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছে তৃণমূল। জেলায় পঞ্চায়েত স্তরে মোট ১০২০টি আসনের মধ্যে ২৭২টিতে বিরোধীদের প্রার্থী নেই। পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে ১৭২টি আসনের ১৮টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছেন তৃণমূল প্রার্থীরা।
সিপিএম সূত্রের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় দলের বিকল্প গ্রামসভা আয়োজন কর্মসূচি করা হয়েছে। কিন্তু জেলার প্রায় ২৫টি পঞ্চায়েতে তা করা যায়নি। এর মধ্যে বারাবনি, জামুড়িয়া ও পাণ্ডবেশ্বরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূলের জিতে যাওয়া পঞ্চায়েতগুলিও রয়েছে। বিজেপি সূত্রের দাবি, এই তিন এলাকায় দলের দশটি মণ্ডল কমিটি কার্যকারিণী বৈঠক আয়োজন করতে পারেনি। এই ব্লক মিলিয়ে তৃণমূল ১১টি পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির ১৭টি আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়ছে না।
বারাবনি ব্লকে পানুড়িয়া, পাঁচগাছিয়া, জামগ্রাম ও বারাবনি— এই চারটি পঞ্চায়েতে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছে। পানুড়িয়া ও পাঁচগাছিয়া পঞ্চায়েতে বিরোধীরা মনোনয়ন দাখিল করতেই পারেনি। জামগ্রামে ১৩টি আসনের ৪টিতে ভোট হবে। বারাবনি পঞ্চায়েতে ১৭টি আসনের মধ্যে ৯টিতে তৃণমূল ছাড়া কেউ প্রার্থী দিতে পারেনি। এ ছাড়া, ইটাপাড়া পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনের মধ্যে ৭টিতে লড়াই হচ্ছে। বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির ২৩টি আসনের মধ্যে ১৪টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
সালানপুরের জেমারি ও রূপনারায়ণপুরে অর্ধেকের বেশি আসনে বিরোধী প্রার্থী না থাকায় বোর্ড তৃণমূলের হাতে যাচ্ছে। সালানপুরে পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনেও তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে। জামুড়িয়ার শ্যামলা পঞ্চায়েতের ১৬টি সংসদের মধ্যে ১৩টি ও কেন্দা পঞ্চায়েতে ৯টির মধ্যে ৭টি আসনে তৃণমূল ছাড়া কারও প্রার্থী নেই। জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির ২৫টি আসনের চারটি কোনও লড়াই ছাড়াই যাচ্ছে শাসক দলের পকেটে। পাণ্ডবেশ্বরের বৈদ্যনাথপুর পঞ্চায়েতে ২৬টির মধ্যে ১৬টি ও হরিপুরে ২০টির মধ্যে ১১টি আসন বিরোধীশূন্য। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের গোগলা পঞ্চায়েতে ২২টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূলের দখলে থাকছে। এই ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির ৩টি আসনেও বিরোধী কেউ নেই। রানিগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনও তৃণমূল পাচ্ছে কোনওলড়াই ছাড়াই।
সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময়ের তুলনায় এ বার দলের পরিস্থিতি অনেকটা পোক্ত হয়েছে। সে কারণেই তৃণমূল এত সন্ত্রাস তৈরি করছে। বারাবনির তিনটি পঞ্চায়েত এলাকা এবং সালানপুরের রূপনারায়ণপুর সন্ত্রাসের ‘স্বর্গরাজ্য’ হয়ে গিয়েছে, অভিযোগ তাঁর।তবে জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ-সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিরোধ হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি দিলীপ দে-ও দাবি করেন, ‘‘বারাবনি, জামুড়িয়া, পাণ্ডবেশ্বরে সারা বছর সন্ত্রাসের প্রভাব পঞ্চায়েত নির্বাচনে পড়েছে। তার মধ্যেও লড়াই চলছে। স্বচ্ছ নির্বাচন হলেআমরাই জিতব।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘কর্মীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে চলায় বিরোধারী অবাধে মনোনয়ন দাখিল করতে পেরেছে। প্রার্থী খুঁজে না পেলে ওঁরা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy