Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪

তৃণমূলের শপথে তিন কংগ্রেসের কাউন্সিলর

ভোটের ফল ‘টাই’ হওয়া সত্ত্বেও বিনা যুদ্ধে তৃণমূলকে মাঠ ছেড়ে দিয়েছিল দু’দশক কাটোয়া পুরসভা চালিয়ে আসা কংগ্রেস। প্রাক্তন পুরপ্রধান-সহ তিন মহিলা কাউন্সিলর এ বার এক পা বাড়িয়েই দিলেন তৃণমূলের দিকে। বৃহস্পতিবার কাটোয়া পুরভবনে বোর্ড গঠনের সময়ে দলের নির্দেশ অমান্য করে তৃণমূলের সঙ্গেই শপথ নিলেন শুভ্রা রায়, ইউসুফা খাতুন ও চিনু মণ্ডল নামে ওই তিন কংগ্রেস কাউন্সিলর।

চলছে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।

চলছে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০১:৪৭
Share: Save:

ভোটের ফল ‘টাই’ হওয়া সত্ত্বেও বিনা যুদ্ধে তৃণমূলকে মাঠ ছেড়ে দিয়েছিল দু’দশক কাটোয়া পুরসভা চালিয়ে আসা কংগ্রেস। প্রাক্তন পুরপ্রধান-সহ তিন মহিলা কাউন্সিলর এ বার এক পা বাড়িয়েই দিলেন তৃণমূলের দিকে।
বৃহস্পতিবার কাটোয়া পুরভবনে বোর্ড গঠনের সময়ে দলের নির্দেশ অমান্য করে তৃণমূলের সঙ্গেই শপথ নিলেন শুভ্রা রায়, ইউসুফা খাতুন ও চিনু মণ্ডল নামে ওই তিন কংগ্রেস কাউন্সিলর। তৃণমূলের অমর রামকে পুরপ্রধান করার প্রস্তাব তাঁরা সমর্থন করেছেন। সেই সঙ্গে, জঙ্গল শেখকে উপ-পুরপ্রধান পদ দেওয়ার জন্য প্রধানের কাছে তৃণমূল কাউন্সিলরদের দেওয়া প্রস্তাবেও তাঁরা সই করেছেন। যদিও তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়নি।
তবে হারাধনের দশটি ছেলেমেয়ের অনেকেই কি একে-একে শিবির পাল্টে শাসকদলের আশ্রয়ে যাবে?

কংগ্রেস শিবির থেকে এই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। তবে কাটোয়ায় কংগ্রেসের একচ্ছত্র নেতা ও বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘আমাদের কাউন্সিলরেরা শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু তৃণমূল বাড়ি-বাড়ি গিয়ে আমাদের কাউন্সিলরদের হুমকি দিচ্ছে। শহর জুড়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে। সেই কারণেই সম্ভবত ওই তিন জন কাউন্সিলর অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন।’’

সত্যিই কি তা-ই?

শপথ নেওয়ার পরে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী শুভ্রা রায় বলেন, “আমি জনগণের প্রতিনিধি। ওয়ার্ডের মানুষের প্রতি আমি দায়বদ্ধ। তৃণমূল কাটোয়ায় উন্নয়ন করবে, এই আশায় আমরা ওদের সমর্থন জানিয়েছি।” ৮ নম্বরের ইউসুফা খাতুন এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের চিনু মণ্ডলও কার্যত একই যুক্তি দিচ্ছেন। সন্ত্রাসের অভিযোগ তাঁরা ঘুণাক্ষরেও তোলেননি। বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি (গ্রামীণ) তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ দাবি করেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা ও উন্নয়নে ভরসা রেখেই কংগ্রেসের তিন কাউন্সিলর পুরপ্রধান পদে অমর রামকে সমর্থন করেছেন।”

অমরবাবু ১৯৯০ সালে কাটোয়া পুরসভায় কংগ্রেস কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৫ সালে কংগ্রেস পুরবোর্ড গঠন করলে তিনি উপপুরপ্রধান হন। টানা ১৮ বছর সেই পদে থাকার পরে ২০১৩ সালের নভেম্বরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁর নেতৃত্বেই এ বার কাটোয়ার ২০টি আসনের মধ্যে ১০টি কংগ্রেসের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। অতএব তিনি যে পুরপ্রধান হবেন, তা প্রায় অবধারিতই ছিল। কিন্তু উপপুরপ্রধান পদে নাম ঘোষণা করা যায়নি।

তৃণমূল সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগে তৃণমূল ভবনে এক বৈঠকে ওই পদের জন্য জঙ্গল শেখের নাম উঠে আসে। কিন্তু কয়েক জন কাউন্সিলর তা সমর্থন করেননি। অমরবাবু বলেন, “জঙ্গল শেখকে উপপুরপ্রধান করার যে প্রস্তাব এসেছে, সেই চিঠি দলীয় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।” স্বপনবাবু বলেন, “রাজ্যস্তরের নেতৃত্ব উপপুরপ্রধানের নাম ঠিক করে কয়েক দিন পরে জানাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE