Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
BDO

গুলির হুমকি, অভিযুক্ত যুগ্ম বিডিও

অভিযোগকারী সংগঠনের দাবি, ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে দাঁড় করিয়ে এক-একটাকে গুলি করে দেওয়া উচিত। মগের মুলুক পেয়েছ নাকি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২০ ০৫:০১
Share: Save:

কাজে গতি আনতে না পারলে গুলি করা, পেটানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে। ‘সোশ্যাল মিডিয়া’র ‘গ্রুপ’-এ এমন হুমকি দিয়ে পোস্ট করেছেন কাটোয়া ১ ব্লকের যুগ্ম বিডিও, জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতীর কাছে অভিযোগ করেছে ‘পঞ্চায়েত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’ (পূর্ব বর্ধমান শাখা)। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।

অভিযোগকারী সংগঠনের দাবি, ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে দাঁড় করিয়ে এক-একটাকে গুলি করে দেওয়া উচিত। মগের মুলুক পেয়েছ নাকি। এক সপ্তাহের মধ্যে উন্নতি না হলে ধরে পেটাব বলে দিলাম’।— এ ভাবে হুমকি দিয়েছেন ওই আধিকারিক। সরকারি কর্মী-আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’-এর সেই মেসেজ ‘ভাইরাল’ হয়েছে। সোমবার জেলাশাসকের কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ে।

অভিযোগে জানানো হয়েছে, গত ১ জুলাই রাত ১১টা ১১ মিনিটে কাটোয়া ১ বিডিও-র মোবাইল নম্বর থেকে কর্মী-আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত ওই গ্রুপে নির্মাণ সহায়ক ও চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের প্রাণনাশ ও মারধরের হুমকি দেওয়া ‘অত্যন্ত আপত্তিকর’ মেসেজ ‘পোস্ট’ হয়। সংগঠনের দাবি, পর দিন ফের ওই গ্রুপে ‘পোস্ট’টি করেন কাটোয়া ১ যুগ্ম বিডিও প্রসূন প্রামাণিক। অভিযোগের সঙ্গে মেসেজের ‘স্ক্রিনশট’ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগকারী সংগঠনের সদস্যদের দাবি, যুগ্ম বিডিও-ই ১ জুলাই রাতে বিডিও-র মোবাইল থেকে ওই পোস্টটি করেছিলেন।

জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী জানান, বিষয়টি অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) প্রবীর চট্টোপাধ্যায়কে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। প্রবীরবাবু বলেন, “অধস্তন কর্মচারীদের যে ভাষায় তিরস্কার করা হয়েছে, তা ভদ্রতামূলক নয়।’’ মঙ্গলবার বিকেলে প্রশাসনের তরফে অভিযোগকারী সংগঠনের সম্পাদক তন্ময় কর্মকারকে ডেকে ডেকে পাঠানো হয়। তন্ময়বাবু বলেন, ‘‘আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযোগপত্রে স্পষ্ট করে সব লেখা রয়েছে। এর পরে প্রশাসন যা ভাল বুঝবে, তা করবে।’’

হঠাৎ এক সরকারি আধিকারিক এমন মেসেজ করলেন কেন? কাটোয়া ১ ব্লক অফিস সূত্রের দাবি, একশো দিনের কাজ প্রকল্পে জেলার ২৩টি ব্লকের মধ্যে ২২ নম্বরে রয়েছে এই ব্লক। কয়েকটি পঞ্চায়েত ও কয়েকজন কর্মী ক্রমাগত ‘অসহযোগিতা’ করায় এমন পরিস্থিতি বলে ধারণা হয়েছে কর্তাদের। যদিও জেলা একশো দিন প্রকল্পের দফতর এই দাবি সমর্থন করছে না। তারা জানায়, চলতি আর্থিক বছরে জেলায় গড়ে ১৬ দিন কাজ হয়েছে। সেখানে কাটোয়া ১ ব্লক গড়ে ১৩ দিন কাজ করেছে।

অভিযুক্ত যুগ্ম বিডিও প্রসূনবাবু দাবি করেন, ‘‘যে সব কর্মচারী কাজ করছেন না, যাঁদের জন্য ব্লকের কাজের মান খারাপ হচ্ছে। তাঁদের অনেক বোঝানো হয়েছে। তাঁরা কথা শুনছেন না বলে কড়া কথা বলা হয়েছে।’’ তা বলে ‘গুলি করা’ বা ‘পেটানো’র কথা কি বলা উচিত? যুগ্ম বিডিও-র বক্তব্য, ‘‘ও সব কি আর কেউ করতে পারে! ওগুলো তো কথার কথা।’’ বিডিও (কাটোয়া ১) মহম্মদ বদরুদ্দোজা শুধু বলেন, ‘‘বিষয়টি জেলা প্রশাসন দেখছে।’’

ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলির কর্তারা যুগ্ম বিডিও-র মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। বেশ কয়েকজন পঞ্চায়েত-কর্তার কথায়, ‘‘কেউ কাজ না করলে, ব্লকের সঙ্গে সহযোগিতা না করলে, নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই পারেন আধিকারিকেরা। তা বলে গুলি করা বা পেটানোর হুমকি দিয়ে ঠিক করেননি ওই আধিকারিক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BDO Threat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy