Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Eviction

ভাঙা পড়েছে হোটেল, তাল কেটেছে পুজোর

সুমিত্রার বাড়ি বক্তারনগরে। দুর্গাপুরের গান্ধী মোড়ে রাস্তার ধারে রয়েছে হোটেলটি। সকালে জলখাবারে লুচি-তরকারি, দুপুরে ভাত, রুটি, ডাল, সবজি, মাছ-মাংস-ডিমের পদ বিক্রি করেন। পথচলতি অনেকেই খান সেখানে।

ভাঙা হোটেলে রান্নায় ব্যস্ত সুমিত্রা। নিজস্ব চিত্র

ভাঙা হোটেলে রান্নায় ব্যস্ত সুমিত্রা। নিজস্ব চিত্র

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:০২
Share: Save:

পুজো আসে প্রতি বছর। উৎসবে মেতে ওঠেন সুমিত্রা ধীবরও। কিন্তু এ বার পুজো তাঁর কাছে কোনও আনন্দের সুর বয়ে আনছে না। রাস্তার ধারে হোটেল চালিয়ে কোনও রকমে দিন গুজরান হয়। সম্প্রতি শহর জুড়ে শুরু হয়েছে সরকারি জায়গা থেকে উচ্ছেদ অভিযান। তাতে ভাঙা পড়েছে তাঁদের হোটেলও। তাই তাঁর গলায় এখন শুধুই বিষাদ।

সুমিত্রার বাড়ি বক্তারনগরে। দুর্গাপুরের গান্ধী মোড়ে রাস্তার ধারে রয়েছে হোটেলটি। সকালে জলখাবারে লুচি-তরকারি, দুপুরে ভাত, রুটি, ডাল, সবজি, মাছ-মাংস-ডিমের পদ বিক্রি করেন। পথচলতি অনেকেই খান সেখানে। স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ, হাসপাতালে আসা গাড়ির চালক, আশপাশের দু’একটি ছোট সংস্থার কর্মীদের কউ কেউ জলখাবার ও দুপুরের খাওয়া সারতে আসেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত হোটেল চলে। স্বামীকে নিয়ে সুমিত্রাই রান্নাবান্না করেন। ক্রেতা সামলাতে চার জন কর্মীও রাখতে হয়েছে। সুমিত্রা জানান, তাঁরা দু’জন ছাড়াও বাড়িতে দেওর, ননদ, ভাগ্না-ভাগ্নি রয়েছেন। হোটেল চালিয়ে কোনও রকমে সংসার চলে যায়। দুর্গাপুজোর আগে বিক্রিবাটা বাড়ে। কারণ, এই সময়ে বাইরে থেকে আসা লোকজনের সংখ্যা বেড়ে যায়। পুজোয় দোকানে, শপিংমলে কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়। তাঁদের অনেকে খেতে আসেন হোটেলে। ফলে, রোজগারও বাড়ে। কিন্তু এ বার বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি।

বৃহস্পতিবার সকালে গান্ধী মোড়ে গিয়ে দেখা গেল, জলখাবার তৈরিতে ব্যস্ত সুমিত্রা। রয়েছেন জনা দুয়েক ক্রেতা। দেওয়াল ভেঙে দেওয়ায় আপাতত দরমার বেড়া ও পলিথিন দিয়ে আড়াল করে চলছে হোটেল। সুমিত্রা জানান, কিছু দিন আগে উচ্ছেদ অভিযান হয় এলাকায়। ভাঙা পড়ার কারণে কয়েক দিন হোটেল বন্ধ ছিল। তিনি বলেন, “পেটের দায়ে ফের কোনও রকমে আবার রান্নাবান্না চালু করেছি। এর মধ্যেই ক্রেতাদের বসিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করছি। কোনও রকমে চলছে সব কিছু।” তিনি জানান, পুজোর সময়ে আমিষ খাবারের চাহিদা বাড়ে। ফলে রোজগারও বাড়ে। তিনি জানান, কিন্তু এ বার সব গোলমাল হয়ে গিয়েছে। প্রতিদিনের খাবারই কোনও রকমে তৈরি করে ক্রেতাদের দিচ্ছেন। বিশেষ মেনুর চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না। তবে তাঁর স্বস্তি, ক্রেতাদের অনেকেই সমস্যার বিষয়টি বুঝছেন। মাঝে কিছু দিন হোটেল বন্ধ থাকায় নিয়মিত ক্রেতার সংখ্যা কমেছে বলে জানান সুমিত্রা।

সুমিত্রার আক্ষেপ, “পুজোর মুখে ভেঙে দেওয়া হল দোকান। ক্ষতিপূরণও কিছু মেলেনি। দায়ে না পড়লে তো কেউ সরকারি জায়গা ব্যবহার করে না। আমাদের কথাটাও তো একটু ভাবা দরকার। আমাদের বাড়িতে কি পুজো নেই?”

অন্য বিষয়গুলি:

Eviction Durga Puja 2024
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy