Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪
Primary School

এক শিক্ষকের কাঁধেই ভার স্কুলের

আসানসোল পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিনোদবাঁধ গ্রামের মুখে রয়েছে স্কুলটি। বাসিন্দারা জানান, শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন হয়। ১৯৭২-এ তৈরি এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৪০।

একাই স্কুল চালাচ্ছেন শিক্ষক।

একাই স্কুল চালাচ্ছেন শিক্ষক। —নিজস্ব চিত্র।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৪ ০৮:৩১
Share: Save:

শ্রেণিকক্ষের তালা খোলা থেকে সাফাই। মিড-ডে মিলের বাজার থেকে রান্নার তদারকি। সেই সঙ্গে সব ক্লাসে পড়ানো। সবই একা হাতে করছেন প্রধান শিক্ষক মধুসূদন পাল। এ ভাবে কত দিন— প্রশ্ন বিনোদবাঁধ অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলে। এর জন্য শিক্ষা সংসদকে দায়ী করেছে একাধিক শিক্ষক সংগঠন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে দাবি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের।

আসানসোল পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিনোদবাঁধ গ্রামের মুখে রয়েছে স্কুলটি। বাসিন্দারা জানান, শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন হয়। ১৯৭২-এ তৈরি এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৪০। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ ও মিড-ডে মিল রান্না-খাওয়ার পাকা দালান, পানীয় জলের ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে ছোট উদ্যানও। কিন্তু পড়ানোর জন্য নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা। মধুসূদন বলেন, “আমিই স্কুলের এক মাত্র শিক্ষক। সব কাজ একা করতে হচ্ছে। এ ভাবে কত দিন চলবে জানি না। শিক্ষা দফতরকে সবই জানিয়েছি।”

স্কুলে দেখা গেল, মিড-ডে মিলের বাজার করে ফেরার পরে মধুসূদন ঘণ্টা বাজিয়ে প্রার্থনার লাইনে দাঁড় করালেন পড়ুয়াদের। তার পরে এক শ্রেণিকক্ষ থেকে অন্য শ্রেণিকক্ষে ছুটে পড়ানো শুরু। একই সঙ্গে চলল মিড-ডে মিলের তদারকি। মধুসূদন জানালেন, প্রায় এক মাস ধরে এই অবস্থা চলছে। পড়ুয়া শ্রাবন্তী সোরেন, সোনু মাহাতোরা বলে, “আরও কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকলে আমাদের লেখাপড়া ভাল হত। স্যরকে কষ্ট পেতে হত না।”

হিরাপুর প্রাথমিক চক্রের পরিদর্শক ইনাশ্রী মিত্র বলেন, এক জন শিক্ষিকাকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল। তিনি যেতে অস্বীকার করেছেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে বিশদ জানানো হয়েছে। আপাতত কাজ চালাতে এক শিক্ষককে অস্থায়ী ভাবে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।” জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রথীন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, “প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় শিক্ষিকাদের যাওয়া মুশকিল। তাই সাময়িক সমস্যা হয়েছে। শিক্ষক পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”

শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক মধুমিতা রায় বলেন, “এক জন শিক্ষক দিয়ে কখনও স্কুল চলে? শিক্ষা সংসদের গাফিলতিতে এই পরিস্থিতি।” বিজেপির শিক্ষক সেলের আহ্বায়ক বিকাশ বিশ্বাসের মন্তব্য, “রাজ্যে শিক্ষকেরা চাকরির দাবিতে রাস্তায় বসে থাকেন। আর স্কুলে শিক্ষকের অভাবে লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটে।” পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি দেবারতি সিংহ বলেন, “প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হওয়ার পরে জেলার বহু শিক্ষাচক্রে এই সমস্যা হয়েছে। সমাধানের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Primary School Asansol Teacher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE