Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Burdwan university

অন্দরের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে ফের তদন্ত কমিটি

ইতিমধ্যে ১০ বছরের লেনদেন, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের অডিট রিপোর্ট খতিয়ে দেখা শুরু করেছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ‘দুর্নীতি’র তদন্তে নিযুক্ত বিশেষ তদন্তকারী দল।

Burdwan University

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৪ ০৮:৪৮
Share: Save:

তদন্ত চলছে। তার সঙ্গেই শেষ পাঁচ বছরে কোন কোন বিভাগে, কোথায় কোথায় অর্থ নয়ছয় বা আত্মসাৎ হয়েছে তার উত্তর খুঁজতে রবিবার একটি ১০ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য গৌতম চন্দ্র। উপাচার্যের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌স্পষ্ট বলা রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বিভাগের শিক্ষক, আধিকারিক, কর্মীদের সঙ্গে তদন্ত কমিটি আলোচনা করতে পারে। আবার কোনও প্রশ্নের সামনেও দাঁড় করাতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে সবাইকে তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতা করার পরামর্শও দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, স্থায়ী আমানত নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে বিশেষ অডিট কমিটি আজ, মঙ্গলবার দুপুরে রাজবাটীতে আসবেন। তাঁরা ব্যাঙ্কেও যাবেন, পুলিশের সঙ্গেও কথা বলবেন।

ইতিমধ্যে ১০ বছরের লেনদেন, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের অডিট রিপোর্ট খতিয়ে দেখা শুরু করেছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ‘দুর্নীতি’র তদন্তে নিযুক্ত বিশেষ তদন্তকারী দল। তারপরে ফের পাঁচ বছরের অর্থ নয়ছয় বা তছরূপ ধরার জন্য কমিটি গঠন করা হল কেন? উপাচার্যের দাবি, “দু’টি কমিটির দু’রকমের কাজ। অডিট কমিটি দেখবে, ১০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বতী অডিট কেন হয়নি। রাজ্য সরকারের অডিটের পরে যে সব ত্রুটি তারা ধরেছিল, সেগুলি মানা হয়েছে কি না। কিংবা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের লেনদেন ঠিক রয়েছে কি না। আর তদন্ত কমিটি দৈনন্দিন অনিয়মগুলি ধরার চেষ্টা করবে। পদ্ধতিগত কী কী ভুল রয়েছে সেটাও তারা দেখবে।” তদন্ত কমিটি এক মাসের মধ্যে উপাচার্যকে রিপোর্ট দেবে। এই কমিটিতে কলা বিভাগের ডিন, বিজ্ঞান বিভাগের ডিন, সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কমার্স, অর্থনীতি, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (মানব সম্পদ), রাষ্ট্রবিজ্ঞান, জনসংযোগ বিভাগ ও উন্নয়ন আধিকারিকেরা রয়েছেন।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বড়বাজারের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার জন্য রেজিস্ট্রার ও ফিনান্স অফিসারের সই জাল করে নথি জমা পড়েছে (পেমেন্ট অ্যাডভাইস)। ১৭ ফেব্রুয়ারি ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মীর নামে এফআইআর করেন। সেই মামলায় প্রাক্তন কর্মী এমানুল শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি পুলিশ হেফাজতে ছিলেন। এ দিন তাঁকে ফের আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। এরপরে ফিনান্স অফিসার পর্যায়ক্রমে ঘটনা ও হিসাব দেখতে গিয়ে জানতে পারেন, জেলখানা মোড়ের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকেও দেড়-দু’বছর আগে তিন ধাপে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। এখানেও সই জাল করে টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগের কর্মী ভক্ত মণ্ডল ও জনৈক সুব্রত দাসের নামে এফআইআর করেন। একই সঙ্গে ব্যাঙ্কের গাফিলতিতেই টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়। ব্যাঙ্কের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়, পুলিশ সুপার ও আদালতকে জানানো হয়, তাদের কাছে স্থায়ী আমানতের শংসাপত্র রয়েছে। কাজেই এই গাফিলতি ব্যাঙ্কের নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেই ‘চক্র’ জড়িয়ে রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক আধিকারিক, কর্মীদের দাবি, ‘ওভারটাইম’, ‘রিফ্রেশমেন্ট’, বিভিন্ন রকমের যন্ত্র, দরপত্র ডাকা নিয়ে অনেক অনিয়ম রয়েছে। টাকা আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে। এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “কী ভাবে স্থায়ী আমানতের শংসাপত্র ব্যাঙ্কের কাছে গেল? কেন এতদিন ধরে তার খোঁজ কেউ রাখেনি, এ রকম নানা প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে উঠছিল। বিভিন্ন বিভাগের নানা নয়ছয় নিয়েও উপাচার্যের কাছে অভিযোগ আসছিল।” বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, ‘পেমেন্ট অ্যাডভাইস’ পদ্ধতির জন্যই দুর্নীতি করার সুযোগ চলে আসছে। উপাচার্য ‘পেমেন্ট অ্যাডভাইস’ বন্ধ করে দিয়ে ফের চেক-পদ্ধতিতে ফিরে গিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Burdwan university Bardhaman Investigation money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy