Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা দুর্গাপুরে
Destruction

ভাঙা হচ্ছে কারখানার টাউনশিপ

সিটু নেতা নিশীথ চৌধুরীর দাবি, “কর্মী সংগঠনগুলিকে এই ভাঙাভাঙির বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়ে ১ অগস্ট তথ্য জানার অধিকার আইনে কেন্দ্রীয় সার মন্ত্রকে চিঠি দিয়েছি।”

An image of destruction

যন্ত্র দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে আবাসন। মঙ্গলবার দুর্গাপুরে এইচএফসিএল কলোনিতে। ছবি: বিকাশ মশান।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:০৩
Share: Save:

দুর্গাপুরের রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানার (এইচএফসিএল) ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে ২০০৩-এ। সিটু ও তৃণমূলের অভিযোগ, কার্যত চুপিসারে কারখানার টাউনশিপের পড়ে থাকা কোয়ার্টার ও অন্য ভবন যন্ত্র দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কারখানার ভবিষ্যৎ সংশয়ে বলে অভিযোগ।

কারখানাটি বন্ধ হওয়ার পরে ১,১২৫ জন শ্রমিক-কর্মীর অধিকাংশই টাউনশিপ ছেড়ে চলে যান। তবে অন্যত্র যাওয়ার জায়গা না থাকায় ১৮০টি পরিবার রয়ে যায় টাউনশিপেই। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৫০-এর আশপাশে। প্রত্যেকের ১ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা জমা রয়েছে সংস্থার কাছে। তা ছাড়া প্রতি ১১ মাসে লিজ়ের জন্য টাকা দিতে হয়। আগাম বিদ্যুৎ বিলও মিটিয়ে দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তেমন আবাসিকদের কেউ কেউ বলেন, “যন্ত্র দিয়ে টাউনশিপের পড়ে থাকা কোয়ার্টার, বন্ধ হাসপাতাল, স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার সব ভেঙে ফেলা হচ্ছে। অথচ, এ সব বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। খুবই চিন্তায় রয়েছি।”

সিটু নেতা নিশীথ চৌধুরীর দাবি, “কর্মী সংগঠনগুলিকে এই ভাঙাভাঙির বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়ে ১ অগস্ট তথ্য জানার অধিকার আইনে কেন্দ্রীয় সার মন্ত্রকে চিঠি দিয়েছি।” সিটু জানিয়েছে, টাউনশিপের কোন-কোন অংশ ভেঙে ফেলার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে, কেন ভাঙা হচ্ছে, কোন সংস্থাকে ভেঙে ফেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, ফাঁকা জায়গা কোন কাজে ব্যবহার করা হবে, যাঁরা এখনও টাউনশিপে রয়েছেন তাঁদের ভবিষ্যৎ কী, এমন সব প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। নিশীথ বলেন, “গুজব শোনা যাচ্ছে, কোনও বড় নির্মাণ সংস্থার হাতে জায়গাটি তুলে দেওয়া হবে। তাই চুপিসারে জায়গা ফাঁকা করা হচ্ছে। এটার সত্যতা আছে কি না, তা-ও চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে।” এই পরিস্থিতিতে কারখানা নতুন করে চালু করার বিষয়টি আরও অনিশ্চিত হয়ে গেল বলে মনে করছেন সিটু নেতৃত্বের একাংশ।

এ দিকে, ২০২১-এর ৭ ফেব্রুয়ারি দোভি-দুর্গাপুর প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন চালু হওয়ায় পানাগড়ের বেসরকারি সার কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়। সে দিনই এই পাইপলাইন থেকে গ্যাস নিয়ে দুর্গাপুরের বন্ধ সার কারখানা খোলার বিষয়ে তিনি আশাবাদী বলে দাবি করেছিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায় সে প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “বিজেপি সাংসদ আড়াই বছর আগে সার কারখানা খোলা নিয়ে আশা জাগিয়েছিলেন। উল্টে টাউনশিপই ভেঙে ফেলা হচ্ছে। অথচ, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা থেকে সার উৎপাদন হলে চাষিরা তুলনায় কম দামে সার পাবেন।” সাংসদ অবশ্য বলেন, “আমার কাছে বিষয়টি নিয়ে কোনও খবর নেই। খোঁজ নিচ্ছি।”

পাশাপাশি, কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে একমাত্র আধিকারিক হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার গৌতম বিশ্বাস বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে আমার বলার এক্তিয়ার নেই।”

অন্য বিষয়গুলি:

Destruction Township Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE