—প্রতীকী ছবি। Sourced by the ABP
আর জি করের ঘটনায় নাগরিক সমাজ যে ভাবে পথে নেমে প্রতিবাদ করছেন, তাতে তৃণমূলের মহিলা ও সংখ্যালঘু সমর্থনে ‘ফাটল’ ধরার ইঙ্গিত দেখছে সিপিএম। তবে ঝান্ডা-বিহীন এই নাগরিক আন্দোলনে দলীয় প্রভাব বিস্তারে নারাজ বামেরা। সামাজিক আন্দোলনকে গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে দিয়ে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক লড়াইয়ের মঞ্চ প্রস্তুত করতে চাইছে সিপিএম। দলীয় পতাকা হাতে কোন ছকে আন্দোলন হবে, তার রূপরেখা তৈরি করতে আজ, বৃহস্পতিবার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক হবে সিপিএমের।
সিপিএমের দাবি, জেলার প্রতিটি গ্রামে বাম মনোভাবাপন্ন প্রগতিশীল শিক্ষিত মহিলাদের নিয়ে একটি মঞ্চ গঠন করা হয়েছে। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মোবাইল নম্বর জোগাড় করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন। সেই ডাক এড়িয়ে যেতে পারছেন না তৃণমূলের মহিলা সমর্থকেরাও। ধারাবাহিক এই কর্মসূচিতে সরকারের ভিত কিছুটা হলেও আলগা হচ্ছে বলে জেলা সিপিএম নেতৃত্বের দাবি। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামে শুধু মহিলারা নন, প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হচ্ছেন পুরুষরাও। হচ্ছে মিছিলও।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিচার করে সিপিএম মনে করছে, এই মুহূর্তে জেলার সব গ্রামে অরাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। যে সব এলাকায় নাগরিক সমাজের ডাকে আন্দোলন হচ্ছে না, সে সব জায়গায় সরাসরি দলের ব্যানারে সভা, অবরোধের মতো কর্মসূচি নেবে সিপিএম। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, “মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। সে লক্ষ্যেই আজ সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।”
সাম্প্রতিক অতীতের কয়েকটি নির্বাচনের ফলাফলেই স্পষ্ট, তৃণমূলের নির্বাচনী সাফল্যের বড় কারণ মহিলাদের বড় অংশ ও সংখ্যালঘুদের সমর্থন। পাশাপাশি, বিজেপি ‘উগ্র হিন্দুত্বের’ রাজনীতি করে সংখ্যালঘুদের তৃণমূলের দিকে ঠেলে দেয় বলে বরাবর দাবি করে সিপিএম। তবে আরজি করের ঘটনার পরে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে বলে দাবি করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম মঙ্গলবার মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘রাজ্যের সব অংশের মানুষ প্রতিবাদে নেমেছেন। এই পরিস্থিতিতে বিভ্রান্তি ছড়াতে পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনীতি করতে নেমেছে বিজেপি। এ রাজ্যের রাজনীতিতে বিজেপি এবং তৃণমূল তাদের হারিয়ে যাওয়া দ্বিমেরু-রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে চাইছে।’’
আর জি কর হাসপাতালের নিহত চিকিৎসক ছাত্রীর খুনের বিচার চেয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তাতে ঝান্ডা ছাড়া যোগ দিচ্ছেন বহু বামপন্থী মনোভাবাপন্ন মানুষ। সিপিএম নেতৃত্ব মনে করেন, নাগরিক সমাজের আন্দোলনে বিরাট সংখ্যক মহিলা ও সংখ্যালঘুদের উপস্থিতি মমতা সরকারের কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হলে আখেরে শাসক দলেরই লাভ হবে। সিপিএমের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “আমরা অরাজনৈতিক মিছিলে দখলদারি করব না। সংখ্যলঘু এলাকায় বলা হচ্ছে, ‘বিচারের জন্য আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। সরকারকে বাধ্য করতে হবে। তা না-হলে ভবিষ্যতে কোনও অপরাধের বিচার হবে না’। এই প্রচারে সংখ্যালঘুরা সাড়া দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি নয়, বিচারের দাবিতেই সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠুক।” সিপিএম সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েতের কর্মী সংগঠন পথে নামবে। ধর্নায় বসবে ডিওয়াইএফ, এসএফআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy