অটোর রুটে টোটো ও ই-রিকশা চলাচল করছে, মূলত এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার দিনভর দুর্গাপুর শহরে পরিষেবা বন্ধ রাখলেন অটোচালকেরা। এর জেরে বিপাকে পড়েন বহু নিত্যযাত্রী। প্রশাসনের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুরে প্রায় ২,০০০ অটো রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ১,৭০০টি অটো শহরের ৬৮টি রুটে চলাচল করে। সাধারণত, সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পরিষেবা চালু থাকে। চালকদের অভিযোগ, শহরে অবৈধ টোটোর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ফলে তাঁদের যাত্রী পেতে অসুবিধা হচ্ছে। টোটোর কোনও রুট না থাকায়, যে কোনও দিকে যেতে পারে। আবার নির্দিষ্ট কোনও স্ট্যান্ড বা স্টপেজ না থাকায় যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যায়। ফলে, যাত্রীদের অনেকেই টোটোয় চড়ছেন। তাঁদের দাবি, ৪ ডিসেম্বর সমস্যার কথা জানিয়ে মহকুমাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি না বদলানোয় এ দিন প্রতীকী এক দিনের ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
এ দিকে, অটোচালকেরা আগাম ঘোষণা করে ধর্মঘট করলেও, অনেকেই তা জানতেন না বলে দাবি নিত্য যাত্রীদের। সিটি সেন্টার বাস স্ট্যান্ডে মিনিবাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা বেসরকারি সংস্থার কর্মী প্রতীক্ষা বসু বলেন, “অটোয় সোজা বিধাননগর চলে যাই। আজ দু’টি মিনিবাস ধরে যেতে হবে। পৌঁছতে দেরি হয়ে যাবে।”
অটোচালক পিণ্টু সাহা বলেন, “যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করে তবে অটো চালাতে হয়। টোটোর সে সব কিছুর বালাই নেই। টোটোয় যাত্রী সুরক্ষা বলে কিছু নেই।”
সিটি সেন্টার অটো স্ট্যান্ডে দেখা গেল, সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে অটোগুলি। অটোর সামনে দাবি-দাওয়া লেখা ব্যানার ঝুলছে। অটোচালক সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অটো যে রুটে চলে না, সেগুলিতেই টোটো বা ই-রিকশা চলা উচিত। তা হলে কোনও পক্ষেরই সমস্যা হয় না। অথচ, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অটোর রুটেই টোটো ও ই-রিকশা চলছে। তাঁর দাবি, “বাইরে থেকেও টোটো, ই-রিকশা ঢুকে যাচ্ছে শহরে। দিন দিন এই সমস্যা বাড়ছে।” বহু দিন ধরে প্রায় আড়াইশোটি অটোর রুট পারমিট আটকে রয়েছে বলে দাবি চালকদের। তার সুরাহা করার আর্জিও জানান তাঁরা।
মহকুমাশাসকের দফতর সূত্রে অটোচালকদের দাবি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)