মেমারির সাতগেছিয়ায় শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র
সিবিআইয়ের অস্থায়ী দফতরে তৃণমূল নেতাদের ডাকা ও চাকরিতে দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে পূর্ব বর্ধমানের এক মন্ত্রী ও তিন বিধায়ককে বিঁধলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার বিকেলে মেমারির সাতগেছিয়া (মন্তেশ্বর বিধানসভার অন্তগর্ত) এক সভায় ওই বিধায়কদের নাম ধরে কটাক্ষ করেন তিনি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের যদিও দাবি, ‘‘রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থ করতে চাইছে বিজেপি। নেতাদের বক্তব্যেই তা সামনে আসছে। বিজেপি একের পর এক মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে, মানুষের মন মুখ্যমন্ত্রীর দলের দিকেই রয়েছে।’’
এ দিন জেলার মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের নামে চাকরিতে দুর্নীতির অভিযোগ করেন শুভেন্দু। সভায় হাজির বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা কেউ ডবল চাকরি পেয়েছেন? পাননি তো! আমি জানি এ জেলায় স্বপন দেবনাথের বাড়িতে ডবল চাকরি হয়েছে। ফাঁকা খাতা জমা দিয়ে, বেসিক ট্রেনিং না দিয়েও দু’টো চাকরি নিয়েছেন স্বপন দেবনাথ।’’
প্রাথমিক স্কুলে চাকরি নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ছিল কালনার তৎকালীন বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর দিকে। বর্তমানে তিনি বিজেপিতে। শুভেন্দুকে এ দিন বলতে শোনা যায়, ‘‘ওই দল (তৃণমূল) থেকে যাঁরা আমাদের দলে এসেছেন, তাঁরা জানিয়েছেন, তৃণমূলের কালচার ছিল, টাকা তোলো, চাকরি বেচো। না হলে আত্মীয়দের চাকরি দাও।’’ কয়েক মাস আগে বিশ্বজিতও প্রাথমিক স্কুলে চাকরি নিয়ে দুর্নীতিতে তৃণমূলের মন্ত্রী, বিধায়কেরা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন। স্বপন দেবনাথের দাবি, ‘‘আমার ছোট ছেলে ও বৌমা প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করে। ছোট ছেলে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ। প্রশিক্ষণ রয়েছে। বিয়ের আগে থেকে বৌমা চাকরি করে। বিজেপির নেতারা যে অপবাদ দিচ্ছেন তা প্রমাণ করতে পারবেন তো? কুৎসা রটানোই বিজেপির কাজ।’’
সম্প্রতি ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনার তদন্তে জেলার কয়েকজন বিধায়ককে ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। দুর্গাপরের এনআইটিতে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে গিয়ে দেখা করে এসেছেন তাঁরা। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের প্রশ্নের জবাব দেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে এ দিন শুভেন্দু সরাসরি বিধায়ক (বর্ধমান দক্ষিণ) খোকন দাসকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘ভোটের পরে খুব অত্যাচার করেছে। এখন অবশ্য আর সাহস নেই। কারণ কয়েকশো কোটি টাকার মালিক বর্ধমানের বিধায়ক খোকনবাবু দুর্গাপুরের হাওয়া খেয়ে ঘুরে এসেছেন।’’ কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজকেও সিবিআই ডেকেছিল বলে তিনি জানান। শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘‘যা করেছো ভুলে যাও। এ বার আইন মেনে চলো ২০২৪ সাল পর্যন্ত। না হলে বিপদ রয়েছে।’’ দুই তৃণমূল বিধায়কেরই দাবি, মাসখানেক আগে বীরভূমের ইলামবাজারের ভোট পরবর্তী একটি খুনের ঘটনায় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ কেন করেছিলেন, তা জানতেই সিবিআই তাঁদের ডেকেছিল।
তৃণমূলের বিধায়ক (পূর্বস্থলী উত্তর) তপন চট্টোপাধ্যায়ের নামেও তাঁকে মারধরের কথা বলার অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘তপন চট্টোপাধ্যায় বিরাট নেতা! ওঁর বাড়ির সামনে সরস্বতী পুজো হয়। আমি ওই পুজোতে যাব। সে দিন পূর্বস্থলীর মানুষের কাছে তাঁর স্বরূপটা খুলে দিয়ে যাব।’’ ওই নেতা অভিযোগ মানেননি। রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘‘এ সব হুমকি দিয়ে লাভ নেই। ২০২১ সালে মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন। ২০২৪ সালেও মানুষই জবাব দিয়ে দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy