দুধকুমারকে কড়া বার্তা সুকান্তের
দলের ঊর্ধ্বে কেউ নন। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দুধকুমার মণ্ডল যে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন, তার প্রেক্ষিতে এ কথাই বললেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দলীয় কর্মীদের বসে যাওয়ার বার্তা দিয়ে দুধকুমার যা বলেছেন, তাতে প্রাথমিক ভাবে নরম মনোভাব দেখিয়েছিলেন রাজ্যের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। কিন্তু সুকান্ত ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন, বীরভূমের নেতার ওই মন্তব্যকে একেবারেই ভাল চোখে দেখছে না দল। রাজ্য সভাপতি স্পষ্ট কথায় জানিয়ে দেন, দুধকুমারের সঙ্গে আলোচনা করে কমিটি গড়ার বাধ্যবাধকতা নেই শীর্ষ নেতৃত্বের।
রাজ্য বিজেপির ‘আদি নেতা’ বলেই দলে পরিচিত দুধকুমার। দলের অনেকের বক্তব্য, রাজ্যে বিজেপির সংগঠন বলে যখন কিছু ছিল না, তখন তখন ১৯৮৮ সালে প্রথম বার বীরভূমের ময়ূরেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হন। ২০১৮ সালেও তিনি পঞ্চায়েতে জিতেছেন। সেই দুধকুমার যে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাজকর্মে বিশেষ খুশি নন, তা-ই প্রকাশ্যে এল তাঁর সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্টে। বীরভূমের নেতার অভিযোগ, দলে তিনি যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, তাঁকে না জানিয়েই জেলা থেকে ব্লক কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘জেলা থেকে ব্লক কমিটি আমার সঙ্গে আলোচনা না করে কমিটি গঠন করেছে। তাই ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থক এবং কার্যকর্তাগণ আমাকে যাঁরা ভালবাসেন তাঁরা চুপচাপ বসে যান।’ আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে এই ফেসবুক পোস্টের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যখন কেউ ছিল না, তখন আমি ছিলাম। ২০১৮ সালেও যখন সবাই লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে তখন আমি জিতেছি। কিন্তু এখন দলে আমার কোনও গুরুত্বই নেই। আমারই দলে গুরুত্ব কমছে। পুরনোরা কেউই সম্মান পাচ্ছেন না। এর ফলে দিন দিন দল ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে।’’
দুধকুমারের প্রকাশ্যে এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলা পার্টি অফিসে কর্মী বৈঠকে যোগ দিতে এসে সুকান্ত বলেন, ‘‘কিছু মানুষ মনে করেন, তাঁরা বড় নেতা হয়ে গিয়েছেন। আদতে পার্টির বাইরে আমাদের কারও কোনও অস্তিত্ব নেই। এটা অনেকে ভুলে যায়। পার্টির সংবিধানে কোথাও লেখা নেই, দুধকুমার মণ্ডলের সঙ্গে আলোচনা করে এই কমিটিগুলো করতে হবে।’’
সুকান্তের এই জবাবের আগে অবশ্য শমীক বলেছেন, ‘‘বীরভূমের একটা বড় এলাকায় দুধকুমারদা এবং দল সমার্থক। উনি শুধু প্রবীণ তাই নয়, এক জন অনুভবী কার্যকর্তা। খুব তাড়াতাড়ি তাঁর ক্ষোভের কথা শোনা হবে। তবে উনি ক্ষোভ থেকে কিছু লিখে থাকলেও, দলের ক্ষতি হবে এমন কোনও কাজ কখনওই করবেন না বলে আমি বিশ্বাস করি।’’ আরও এক ধাপ এগিয়ে দুধকুমারকে সমর্থন করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। তিনিও একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। তার পরেই সুকান্তের কড়া বার্তায় স্পষ্ট হল, দুধকুমারের দল সংক্রান্ত বক্তব্য নিয়ে অন্দরে যথেষ্ট দ্বন্দ্ব রয়েছে। তা প্রকাশ্যে আসায় দলের অস্বস্তিও বেড়েছে। এখন দেখার, বঙ্গ বিজেপির আদি নেতার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করে কি না গেরুয়া শিবিরের বর্তমান শীর্ষ নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy