কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের কর্মসূচি। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।
অনলাইনে পরীক্ষার দাবিতে আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বিক্ষোভ চলছেই। শুক্রবার রাতভর বিক্ষোভ চলেছে। শনিবার সকাল থেকে কয়েক জন পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে অনশন শুরু করেছেন। পাশাপাশি, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভও চলেছে। পড়ুয়াদের সঙ্গে এ দিনের বিক্ষোভে কয়েক জন অভিভাবকও যোগ দিয়েছেন। শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন কর্মীকে ঘেরাও করে রাখার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছে তাঁদের ঘেরাও মুক্ত করে। এই সময় তাঁদের উপরে পুলিশ লাঠি চালায় বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিয়োয় (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) অভিযোগ করেছেন ‘পড়ুয়াদের’ একাংশ। যদিও তেমন কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিশের দাবি। এ দিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়েই অনড় রয়েছেন।
অনলাইনে পরীক্ষার দাবিতে গত ১৫ দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে। শুক্রবার পরিস্থিতি চরমে ওঠে। পড়ুয়া বিক্ষোভের সময় এক ছাত্র গলায় দড়ি দেওয়ারও চেষ্টা করেন বলে দাবি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে দাবি, ওই দিন প্রশাসনিক ভবনের প্রায় ১৭ জন কর্মীকে আটকে রেখে বিক্ষোভ চলছিল। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট জানিয়েছে, ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর অনুরোধে কয়েক জন পুলিশকর্মী আটকে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের ঘেরাও মুক্ত করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। বিক্ষোভকারীদের কাছে ওই কর্মীদের মুক্ত করার জন্য আর্জি জানানো হলেও পড়ুয়ারা তাতে কর্ণপাত করেননি বলে পুলিশের দাবি।
কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সোনাওয়ানে জানান, ওই সময় আচমকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ-সংযোগ চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে, একতলার ঘর থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আটকে থাকা কর্মীরা প্রাণভয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। ওই সময় পুলিশের উদ্যোগে তাঁদের ঘেরাও মুক্ত করে বাইরে নিয়ে আসা হয়। তবে সে ধোঁয়া কীসের, তা অবশ্য ভাঙেননি পুলিশকর্তারা। পড়ুয়াদের দাবি, কোনও রকম ধোঁয়ার অস্তিত্ব তাঁরা টের পাননি।
এ দিকে, শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন পড়ুয়ার সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ‘ভিডিয়ো’ (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ‘শেয়ার’ করেন। ওই ভিডিয়োগুলিতে কয়েক জন নিজেদের পড়ুয়া পরিচয় দিয়ে জখম হওয়ার কথা জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন পড়ুয়া শুক্রবার রাতে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠি চালানোর অভিযোগও করেন ভিডিয়োগুলিতে। রাত প্রায় ৩টে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ চলে। তবে ডিসি (সেন্ট্রাল) বলেন, “লাঠি চালানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন। পুলিশের হাতে লাঠিই ছিল না। কোনও পড়ুয়াকে আঘাতকরা হয়নি।”
পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে পড়ুয়াদের সঙ্গে উপাচার্যকে বৈঠক করে সমাধানের রাস্তা বার করার অনুরোধ করেছেন জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষক সমাজের একাংশ। আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “আমি অবশ্যই অফলাইনে পরীক্ষা চাইছি। তবুও পড়ুয়াদের সমস্যাগুলি নিয়ে উপাচার্যকে বৈঠক করার অনুরোধ জানিয়েছি।” বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকদের একাংশের প্রতিক্রিয়া, “পড়ুয়া-স্বার্থে অফলাইন পরীক্ষা হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। তবু তাঁদের সমস্যার কথা শুনে বিকল্প সমাধানের ব্যবস্থা করতে উপাযার্যের বৈঠক করা উচিত।” তবে এ দিনও উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী বলেন, “আমরা এখনও অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টিতেই আস্থা রাখছি।” পাশাপাশি, পড়ুয়াদের অভিযোগের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy