ডিপিএল-এর গেটে বিজেপির বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
রুগ্ণ ডিপিএল-কে বাঁচাতে সংস্থার উদ্বৃত্ত জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। সিপিএম ও বিজেপি গোটা পরিকল্পনাটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যদিও তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, এ সবই বিরোধীদের ‘অহেতুক বিরোধিতা’।
বিজেপির জেলা সভাপতি তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার ডিপিএল-এর গেটে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিধায়কের অভিযোগ, ‘‘গোপনে জমি বিক্রির তোড়জোড় চলছে। এটা কোনও ভাবেই মানা হবে না। টানা এক সপ্তাহ আন্দোলন হবে। প্রয়োজনে বিধানসভাতেও বিষয়টি নিয়ে সরব হব।’’
গত ৮ জুলাই নবান্নে পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটকের পৌরহিত্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। তার পরদিন পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন, আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) ও ডিপিএল-এর আধিকারিকেরা দুর্গাপুরে সংস্থার অব্যবহৃত জমি পরিদর্শন করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। একই সঙ্গে ডিপিএল-এর এ ও সি জ়োনের কর্মীদের বি জ়োনে স্থানান্তরের নির্দেশিকাও দেন
ডিপিএল কর্তৃপক্ষ।
জমি বিক্রি করে সেই টাকায় কী হবে, এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা কী— এই প্রশ্নগুলিকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই আন্দোলনে নেমেছে সিপিএম। এই প্রশ্ন তুলে বুধবার মহকুমাশাসকের (দুর্গাপুর) দফতরে স্মারকলিপিও দেয় সিপিএম। শিল্পের জন্য নেওয়া জমিতে শিল্পই গড়তে হবে, জমি বিক্রির অর্থ যেন রুগ্ণ ডিপিএল-কে বাঁচানোর জন্যই কাজে লাগানো হয়, এমনই দাবি তুলেছে তারা। সিপিএমের দাবি, রাজ্য সরকারের তরফে এখনও এ বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার সিটু প্রভাবিত ‘ডিপিএল এমপ্লয়িজ় ইউনিয়ন’ সম্মেলনের আয়োজন করে। ছিলেন সিটু নেতা সন্তোষ দেবরায়, সিটুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার প্রমুখ। পঙ্কজবাবু বলেন, ‘‘পুনরুজ্জীবনের নামে ডিপিএল-কে ধ্বংস করা যাবে না। পুনর্গঠনের নামে শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না। প্রমোটারদের হাতে ডিপিএল-এর জমি তুলে দেওয়া চলবে না।’’
বৃহস্পতিবার এই একই অভিযোগ করে আন্দোলন শুরু করেছে বিজেপি। বিজেপির দাবি, এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া এবং বিধায়ক লক্ষ্মণবাবুকে এড়িয়ে একতরফা ভাবে গোপনে রাজ্য সরকারকে জমি বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। কোনও ভাবেই ডিপিএল-এর জমিতে ‘প্রোমোটারি’ করা যাবে না। লক্ষ্মণবাবুর অভিযোগ, ‘‘এলাকাবাসী শিল্প গড়তে জমি দিয়েছিলেন। সে জমিতে ডিপিএল গড়ে উঠেছে। গোপনে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কাটমানি নিয়ে জমি বিক্রির ঘৃণ্য চক্রান্ত করছে তৃণমূলের সরকার। জমি বিক্রি করে সেই অর্থে কী করা হবে? উচ্ছেদ হওয়া মানুষজনের পুনর্বাসনের কী হবে? স্বচ্ছ ভাবে পুরো পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, দুর্গাপুর কেমিক্যালস কারখানার পরে ডিপিএল-কেও তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। এ দিনের কর্মসূচিতে যোগ দেন ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘‘অর্জুনপুর, পলাশডিহা, করঙ্গপাড়া-সহ আশপাশের নানা এলাকার বাসিন্দারা ডিপিএল গড়তে জমি দিয়েছিলেন। রাজ্য সরকারের এই অন্যায় পদক্ষেপ বন্ধ করতে ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলন হবে।’’ যদিও তৃণমূলের অন্যতম জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রুগ্ণ ডিপিএল-কে বাঁচাতে এবং দুর্গাপুরের উন্নয়নের স্বার্থে এই পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী দলগুলির অহেতুক বিরোধিতায় তা আটকাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy