চলছে উদ্ধারকাজ। শনিবার। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।
পশ্চিম বর্ধমানের নানা এলাকায় স্পঞ্জ আয়রন কারখানা-সহ ইস্পাত অনুসারী শিল্পে বার বার দুর্ঘটনার ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, শ্রমিক নিরাপত্তা নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ সে ভাবে নজর না দেওয়াতেই এমন বিপত্তি ঘটছে বার বার।
গত তিন বছরের মধ্যে জামুড়িয়া শিল্পতালুকে চারটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় মোট ছ’জনের মৃত্যু হয়। মঙ্গলপুর শিল্পতালুকের দু’টি কারখানায় দু’জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, একই ছবি দেখা গিয়েছে দুর্গাপুরের বিভিন্ন শিল্পতালুকেও। চলতি বছরে, জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত, এই সাত মাসে দুর্গাপুরে স্পঞ্জ আয়রন-সহ ইস্পাত অনুসারী শিল্পের কারখানায় মোট পাঁচ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
দুর্ঘটনাগুলির প্রকৃতি কী? শ্রমিক নেতৃত্বের সূত্রে জানা গিয়েছে, ফার্নেসে বিস্ফোরণ, পড়ে যাওয়া, চৌবাচ্চায় ডুবে যাওয়া, শর্ট সার্কিট, ‘ভাটি’-তে বিস্ফোরণ, গ্যাসের সিলিন্ডার ফেটে যাওয়া-সহ নানা কারণে এই দুর্ঘটনাগুলি ঘটেছে।
এই পরিস্থিতিতেই শ্রমিক নেতৃত্ব সরব হয়েছেন। সিটু নেতা মনোজ দত্তের ক্ষোভ, “প্রায়ই ঘটা করে ‘নিরাপত্তা সপ্তাহ’ পালন করা হয় কারখানাগুলিতে। কিন্তু আদতে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও রকম পদক্ষেপ করা হয় না। তাঁদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জামও দেওয়া হয় না।” রানিগঞ্জের তৃণমূল নেতা সাধন রায়েরও প্রতিক্রিয়া, “স্পঞ্জ আয়রন-সহ বিভিন্ন কারখানাগুলিতে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই মূলত দুর্ঘটনাগুলি ঘটছে। আমরা দ্রুত কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।” এ দিকে, বিজেপি নেতা সন্তোষ সিংহ বলেন, “রক্ষণাবেক্ষণের প্রতি কোনও রকম নজর নেই কর্তৃপক্ষের। এ বিষয়ে প্রশাসনেরও পদক্ষেপ করা দরকার।” পাশাপাশি, শুক্রবার রাতে মঙ্গলপুরের যে কারখানাটিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার জন্য পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
যদিও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কোনও রকম গাফিলতির কথা স্বীকার করেননি ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল আয়রন অ্যান্ড স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি শঙ্করলাল আগরওয়াল। তিনি বলেন, “যে কোনও দুর্ঘটনাই খুবই দুঃখের। কারখানায় সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি যাতে ঠিক ভাবে মানা হয়, যাতে একটিও দুর্ঘটনা না ঘটে, সেটা চান সবকারখানার মালিকই।”
জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) এস অরুণ প্রসাদ বলেন, “মঙ্গলপুরের ঘটনাটি নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। শ্রমিকের নিরাপত্তা যাতে নিশ্চিত থাকে, সে বিষয়ে নাগাড়ে নজরদারি চালানো হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy