বাংলাদেশের অশান্তির কোনও প্রভাব খেলার মাঠে পড়বে না বলেই মনে করছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দুবাইয়ে শুরু হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতকেই এগিয়ে রেখেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন সৌরভ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহনবাগান মাঠ ঘুরে দেখেন। রাধারানি স্টেডিয়ামে তাঁকে সংবর্ধনাও দেয় বর্ধমান জেলা ক্রীড়া সংস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামের সামনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন সৌরভ। দুবাইয়ে ভারত ও বাংলাদেশ মাঠে নামার আগে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির প্রভাব মাঠে পড়বে কি? সৌরভের জবাব, “খেলার সঙ্গে তার কি সম্পর্ক? খেলা খেলার জায়গায়। খেলার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।” একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত ‘ফেভারিট’। তিনি বলেন, “ভারত এক দিনের খেলায় দারুণ দল। খুব ভাল খেলবে।”
এ দিন ওই অডিটোরিয়ামে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদেরও মুখোমুখি হন সৌরভ। ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে নানা প্রশ্ন করেন। ছাত্রছাত্রীদের তিনি বলেন, “লক্ষ্য ছোট রাখলে হবে না। বড় লক্ষ্য রেখে এগোতে হবে। তাঁর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। লক্ষ্যও স্থির রাখতে হবে। চটজলদি সাফল্যের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত নয়।” সমাজমাধ্যম আসার পরে দুনিয়া বদলে গিয়েছে, সব কিছু হাতের মুঠোয় চলে এসেছে বলেও দাবি করেন তিনি। তবে এর ব্যবহার সদর্থক হওয়া উচিত বলেও দাবি করেন। সৌরভ বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যম যেন পারিবারিক জীবনের মধ্যে ঢুকে না পড়ে, সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’’
এক ছাত্রী তাঁর বায়োপিক নিয়ে প্রশ্ন করেন। সৌরভ জানান, সিনেমা তৈরি হচ্ছে। তবে স্ক্রিনে আসতে এখনও বছর খানেক লাগবে। তাঁর চরিত্রে রাজকুমার রাও অভিনয় করছেন বলে জানান। ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় কে হচ্ছেন? সৌরভের জবাব, “ওটা খুবই কঠিন চরিত্র। অনেকের মধ্যে খোঁজা চলছে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের জবাবে বলে সৌরভ বলেন, “যে কোনও স্তরেই টেস্ট ক্রিকেট এগিয়ে রয়েছে। টি-২০ নিয়ে আলোচনা বেশি হলেও টেস্টের স্পিরিট কমেনি।”
এক ছাত্র প্রশ্ন তোলেন, সৌরভের পরে এ বঙ্গ থেকে আর কোনও ক্রিকেটারকে সে ভাবে দেশের হয়ে খেলতে দেখা যাচ্ছে না কেন? জবাবে সৌরভ বলেন, “আমার পরে ঋদ্ধিমান সাহা ৪০টা টেস্ট খেলেছে। মহম্মদ শামিও ৬০-৬৫টা টেস্ট খেলছে। এ রাজ্যে প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা আছেন।”
গোলাপবাগ থেকে মোহনবাগান মাঠে যান সৌরভ। সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও ক্রীড়া-আধিকারিক সুরজিৎ নন্দী। নতুন মাঠটিকে দেখিয়ে ক্রীড়ার উন্নতির জন্য সিএবির সাহায্য চান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সৌরভ বিষয়টি নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দেন। বর্ধমান জেলা ক্রীড়া সংস্থার সংবর্ধনা সভায় জেলাশাসক আয়েষা রানি এ, পুলিশ সুপার সায়ক দাসও ছিলেন। ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট সচিব শিবু ঘোষ রাধারানি স্টেডিয়ামে সিএবির তরফে ফ্লাড লাইট করে দেওয়ার আবেদন জানান। সৌরভ মাঠের প্রশংসা করেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)